জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সারকারখানায় দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক- কর্মচারী” জনবল সরবরাহের দরপত্র মূল্যায়ণ কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রিতীর অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী এক ঠিকাদার। শুধু তাই নয় ঠিকাদারকে দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ওই ঠিকাদার ।

জেএফসিএল ও দরপত্রে অংশগ্রহনকারীর অভিযোগে সুত্রে জানা গেছে ,"যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানী লিমিটেড" এর বিভিন্ন বিভাগ/শাখায় নানাবিধ কাজের জন্য "বিভিন্ন ক্যাটাগরির দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারী" (কারখানা চলাকালীন ২৩৩ জন এবং কারখানা বন্ধকালীন ১৫৯ জন) পদে ২ বছরের জন্য জনবল সরবরাহের জন্য ২০২৪ ইং সালে পত্রিকায় উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করেন জ্ফেসিএল কতৃপক্ষ। আহব্বানককৃত ওই দরপত্রে অংশগ্রহনকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের জন্য দরপত্র মুল্যায়নে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহবায়ক ও সারকারখানার ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোহা: মোসলেহ উদ্দিন, সদস্য সচিব ও উপ -মহাব্যাবস্থাপক প্রশাসন ও বিভাগীয় প্রধান দেলোয়ার হোসেন নির্বাচিত করায় হয়। এ ছাড়াও আরোও সদস্যগন হলেন ,জনতা ব্যাংক যমুনাসারকারখানা শাখার ব্যবস্থাপক এ আর এম রেদুয়ানুর রহমান,উপ-মহাব্যবস্থাপক বাণিজ্যাক ও বিভাগয়ি প্রধান বাণিজ্যক আব্দুল হামীম, মহাব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) ইকবাল হোসেন সেরনিয়াবাদ, মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) ও বিভাগীয় প্রধান (কারিগরি) মইনুল ইমরান, প্রফেসর যন্ত্রকৌশল বিভাগ ডুয়েট ও সদস্য ড. কামরুজ্জামান কে নির্বাচিত করা হয়। 

 উক্ত দরপত্র মুল্যায়ন কমিটির আহবায়ক ও সারকারখানার ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোহা: মোসলেহ উদ্দিন, সদস্য সচিব ও উপ -মহাব্যাবস্থাপক প্রশাসন ও বিভাগীয় প্রধান দেলোয়ার হোসেন এর যোগ সাজসে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রিতীর মাধ্যমে দাখিলকারী ১২টি দরপত্রের মধ্যে থেকে ত্রুটিপুর্ন দরপত্র দাখিল কারী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের মেসার্স এ এন এন্টার প্রাইজ এর প্রোপাইটার রাশেদুজ্জামান ( লিটন ) এর প্রতিষ্ঠান কে বাদ না দিয়ে প্রথম লয়েষ্ট মুল্যায়ন করেন। আর মেসার্স আল -মমিন আউটসোসিং সার্ভিসেস লি: এর প্রোপাইটার মমিনুল ইসলাম এর প্রতিষ্ঠানের সকল কাগজপত্র সঠিক থাকলেও সেটিকে দ্বিতীয় লয়েষ্ট মুল্যায়ন করেন।

জেএফসিএল এর বিভিন্ন বিভাগ/শাখায় নানাবিধ কাজের জন্য "বিভিন্ন ক্যাটাগরির দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক- কর্মচারী” জনবল সরবরাহের দরপত্র মূল্যায়ণ কমিটির দুর্নীতি ও স্বজনপ্রিতীর করা হয়েছে বলে এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে শিল্প মন্ত্রানালয়ের উপদেষ্টা, সচিব, বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান বরাবর ও যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানী লিমিটেড উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ও বিভাগীয় প্রধান (প্রশাসন) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন দরপত্রে অংশগ্রহনকারী আল-মমিন আউটসোর্সিং সার্ভিসেস লিঃ” এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অভিযোগ করেন।

পরবর্তীতে মেসার্স আল-মমিন আউটসোর্সিং সার্ভিসেস লিঃ এর পক্ষ থেকে জেএফসিএল এর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির বিরুদ্ধে "পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮" এর ধারা ৫৬ ও ৫৭ মোতাবেক রিভিউ প্যানেলে আবেদন করেন৷ উক্ত রিভিউ প্যানেলে গত ২৫/০২/২০২৫ইং তারিখে আপীল শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেএফসিএল এর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও উপ -মহাব্যাবস্থাপক প্রশাসন ও বিভাগীয় প্রধান দেলোয়ার হোসেন কর্তৃক দুর্নীতি ও স্বজনপ্রিতী করে মেসার্স এ এন এন্টারপ্রাইজ কে কার্যাদেশ দেওয়ার সুপারিশ বে-আইনী বলে প্রমাণিত হয় এবং উপ -মহাব্যাবস্থাপক প্রশাসন ও বিভাগীয় প্রধান দেলোয়ার হোসেন কে রিভিউ প্যানেলে- ২ এর চেয়ারপারসন ও সদস্যগণ ভৎসনা করেন। মেসার্স এ এন এন্টারপ্রাইজ জেএফসিএল এর দরপত্রে উল্লিখিত ৭ টি শর্তের মধ্যে ৪ টি শর্ত পূরণ না করা সত্ত্বেও কার্যাদেশ দেওয়ার সুপারিশ করেন। জেএফসিএল এর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি দুর্নীতি ও স্বজনপ্রিতীর মাধ্যমে গত ১৩/০১/২০২৫ইং তারিখে মেসার্স এ,এন এন্টারপ্রাইজ কে কার্যাদেশ দেওয়ার সুপারিশ বাতিল করে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) এর স্মারক নং- ২১.০০.০০০০.৩৬৩.২২.৯৯২.১৮-১৩৭, তারিখ:- ১০/০৭/২০১৯ইং এ অনুসরণ ৫% কমিশন রেটে পুনরায় মূল্যায়নের জন্য আদেশ প্রদান করেন রিভিউ প্যানেল ২ এর চেয়ারপারসন ও সদস্যবৃন্দ। রিভিউ প্যানেলের এর আদেশ প্রায় ৩ মাস অতিবাহিত হলেও জেএফসিএল কর্তৃপক্ষ মেসার্স আল-মমিন আউটসোর্সিং সার্ভিসেস লিঃ কে কার্যাদেশ প্রদানে গডিমসি অব্যাহত রেখেছেন। জেএফসিএল এর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন তার পছন্দের প্রতিষ্ঠান এএন এন্টারপ্রাইজ কে কার্যাদেশ না দিতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে কৌশলে এএন এন্টারপ্রাইজ কে দিয়ে নিয়মবহির্ভূত ভাবে পিপিআর এর সকল ধারা অমান্য করে সরিষাবাড়ি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, জামালপুর এর মেসার্স আল-মমিন আউটসোর্সিং সার্ভিসেস লিঃ কে হয়রানি করতে মিথ্যা মামলা দায়ের করানো হয়েছে বলে ভুক্তভোগী ঠিকাদার অভিযোগে করেন। এ ঘটনায় জেএফসিএল কতৃপক্ষের এ হেন কাজের বিষয়ে দরপত্রে প্রতিযোগীতামুলক অংশ গ্রহন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে বলেও মন্তব্য করেন ভুক্তভোগী ঠিকাদার ।

এ ব্যাপারে দরপত্র মুল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও মহা ব্যাবস্থাপক (জিএম প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন জানান, আমাদের একটু ভূল হয়েছে। এরপরেও যেহেতু আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে । আদালত যে সিদ্ধান্ত নেন সেটাই কার্যকর করা হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, মেসার্স এ এন এন্টার প্রাইজ এর কাগজ পত্র ত্রুটি ছিল। যা আমাদের জানা ছিলনা বলে উল্লেখ করেন তিনি।