ঢাকা ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
শিরোনামঃ
সরিষাবাড়ীতে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল গাজীপুরে ছাত্রদলের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল  গাজীপুরে কৃষক দলের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল  পিরোজপুরে  সাংবাদিক মাইনুল ইসলাম মামুনের উপর অতর্কিত হামলা বাগেরহাট যুবদলের কোরান খতম ও দোয়া মাহফিল বাংলাদেশে কারও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে চাইলে সরকার সহায়তা করবে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশবাসীর সম্মিলিত সমর্থনই আমাদের পরিবারের শক্তি ও প্রেরণার উৎস: তারেক রহমান চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন বেগম খালেদা জিয়া : জাহিদ হোসেন এলপিজি দাম সমন্বয় করেছে সরকার

গ্রামীণ ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণ: ডিমলায় লাঠি খেলায় উচ্ছ্বাসে মাতল তরুণ-প্রবীণ

#
news image

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নের তেলির বাজার পার্শ্ববর্তী মাঠে রবিবার (৯ নভেম্বর) বিকেল পাঁচটার পর শুরু হয় এক প্রাণবন্ত লাঠি খেলার আসর। চারদিকে মাটির গন্ধ, ঢোল-বাঁশির তালে লাঠির ঝঙ্কার- সব মিলিয়ে জেগে ওঠে গ্রামীণ জীবনের হারানো রূপ, বাঙালির সাহস ও ঐতিহ্যের অনন্য সুর।

টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় গ্রামীণ জীবনের প্রাচীনতম ঐতিহ্যের প্রতীক লাঠি খেলার প্রতিযোগিতা। অংশ নেয় স্থানীয় ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার লাঠিয়াল দল। খেলায় ছিল কৌশল, সাহস, ঐক্য আর শৃঙ্খলার মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী।

উপচে পড়া দর্শকভিড়, ঢাকঢোলের তালে উচ্ছ্বাসে মুখরিত জনতা- তেলির বাজারের পার্শ্ববর্তী মাঠটি রূপ নেয় এক বর্ণিল উৎসবের মেলায়। প্রতিটি আঘাত ও প্রতিরোধে প্রতিফলিত হয় বাঙালির ঐক্য, সাহস আর প্রাণের উচ্ছ্বাস।

প্রবীণ লাঠিয়াল আব্দুল করিম আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, “এই খেলা আমাদের রক্তে মিশে আছে, এটি আমাদের শেকড়ের পরিচয়। এমন আয়োজন দেখে মনে হচ্ছে আমরা আবার ফিরে গেছি পুরনো দিনের আনন্দমুখর গ্রামবাংলায়।”

স্থানীয় যুবক মোঃ সাবের বলেন, “এমন আয়োজন আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখে। আমরা চাই এই ঐতিহ্য নিয়মিতভাবে চলুক, যাতে নতুন প্রজন্ম আমাদের মাটির সংস্কৃতির সঙ্গে বেড়ে উঠতে পারে।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে এবং ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব)-এর আহ্বায়ক প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন।

 তিনি বলেন, “লাঠি খেলা শুধু বিনোদন নয়; এটি আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক। এই খেলা তরুণদের মাঝে সাহস, শৃঙ্খলা ও দলগত চেতনা জাগিয়ে তোলে। গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই ধারাকে টিকিয়ে রাখা এখন সময়ের দাবি।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা বিএনপি ও সাবেক উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ-  অধ্যাপক রইসুল আলম চৌধুরী, অধ্যাপিকা সেতারা সুলতানা, অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন, গোলাম রব্বানী প্রধান ও আরিফ উল ইসলাম লিটন। অতিথিরা একবাক্যে বলেন, “এই আয়োজন শুধু খেলা নয়, এটি সামাজিক সম্প্রীতি, সাহস ও ঐতিহ্যের এক পুনর্জাগরণ।”

লাঠি খেলা উপলক্ষে বসেছিল ক্ষুদ্র এক গ্রামীণ মেলা। মাঠের চারপাশে ঘুগনি, জিলাপি, চানাচুর আর ধোঁয়া ওঠা চায়ের ভাঁড়ের দোকান- বেলুন হাতে শিশুদের হাসি, প্রবীণদের স্মৃতিকাতর চোখ, আর দর্শকদের উচ্ছ্বাস মিলে তৈরি করে এক অনন্য গ্রামীণ উৎসবের আবহ।

সাংস্কৃতিক বিশ্লেষকরা বলেন, “লাঠি খেলার মতো লোকজ ক্রীড়া তরুণ সমাজের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইউনিয়ন বিএনপির এই উদ্যোগ হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে বড় ভূমিকা রাখবে।”

তেলির বাজার পার্শ্ববর্তী মাঠের এই লাঠি খেলা আবারও প্রমাণ করেছে- গ্রামবাংলা এখনও তার নিজস্ব ঐশ্বর্যে উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত ও চিরন্তন ঐতিহ্যে ভরপুর। লাঠির প্রতিটি ঝঙ্কারে বেজে উঠেছে ঐক্য, সাহস ও মাটির প্রতি ভালোবাসার অমলিন সুর।

নীলফামারী প্রতিনিধি :

১০ নভেম্বর, ২০২৫,  10:00 AM

news image

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নের তেলির বাজার পার্শ্ববর্তী মাঠে রবিবার (৯ নভেম্বর) বিকেল পাঁচটার পর শুরু হয় এক প্রাণবন্ত লাঠি খেলার আসর। চারদিকে মাটির গন্ধ, ঢোল-বাঁশির তালে লাঠির ঝঙ্কার- সব মিলিয়ে জেগে ওঠে গ্রামীণ জীবনের হারানো রূপ, বাঙালির সাহস ও ঐতিহ্যের অনন্য সুর।

টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় গ্রামীণ জীবনের প্রাচীনতম ঐতিহ্যের প্রতীক লাঠি খেলার প্রতিযোগিতা। অংশ নেয় স্থানীয় ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার লাঠিয়াল দল। খেলায় ছিল কৌশল, সাহস, ঐক্য আর শৃঙ্খলার মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী।

উপচে পড়া দর্শকভিড়, ঢাকঢোলের তালে উচ্ছ্বাসে মুখরিত জনতা- তেলির বাজারের পার্শ্ববর্তী মাঠটি রূপ নেয় এক বর্ণিল উৎসবের মেলায়। প্রতিটি আঘাত ও প্রতিরোধে প্রতিফলিত হয় বাঙালির ঐক্য, সাহস আর প্রাণের উচ্ছ্বাস।

প্রবীণ লাঠিয়াল আব্দুল করিম আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, “এই খেলা আমাদের রক্তে মিশে আছে, এটি আমাদের শেকড়ের পরিচয়। এমন আয়োজন দেখে মনে হচ্ছে আমরা আবার ফিরে গেছি পুরনো দিনের আনন্দমুখর গ্রামবাংলায়।”

স্থানীয় যুবক মোঃ সাবের বলেন, “এমন আয়োজন আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখে। আমরা চাই এই ঐতিহ্য নিয়মিতভাবে চলুক, যাতে নতুন প্রজন্ম আমাদের মাটির সংস্কৃতির সঙ্গে বেড়ে উঠতে পারে।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে এবং ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব)-এর আহ্বায়ক প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন।

 তিনি বলেন, “লাঠি খেলা শুধু বিনোদন নয়; এটি আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক। এই খেলা তরুণদের মাঝে সাহস, শৃঙ্খলা ও দলগত চেতনা জাগিয়ে তোলে। গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই ধারাকে টিকিয়ে রাখা এখন সময়ের দাবি।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা বিএনপি ও সাবেক উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ-  অধ্যাপক রইসুল আলম চৌধুরী, অধ্যাপিকা সেতারা সুলতানা, অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন, গোলাম রব্বানী প্রধান ও আরিফ উল ইসলাম লিটন। অতিথিরা একবাক্যে বলেন, “এই আয়োজন শুধু খেলা নয়, এটি সামাজিক সম্প্রীতি, সাহস ও ঐতিহ্যের এক পুনর্জাগরণ।”

লাঠি খেলা উপলক্ষে বসেছিল ক্ষুদ্র এক গ্রামীণ মেলা। মাঠের চারপাশে ঘুগনি, জিলাপি, চানাচুর আর ধোঁয়া ওঠা চায়ের ভাঁড়ের দোকান- বেলুন হাতে শিশুদের হাসি, প্রবীণদের স্মৃতিকাতর চোখ, আর দর্শকদের উচ্ছ্বাস মিলে তৈরি করে এক অনন্য গ্রামীণ উৎসবের আবহ।

সাংস্কৃতিক বিশ্লেষকরা বলেন, “লাঠি খেলার মতো লোকজ ক্রীড়া তরুণ সমাজের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইউনিয়ন বিএনপির এই উদ্যোগ হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে বড় ভূমিকা রাখবে।”

তেলির বাজার পার্শ্ববর্তী মাঠের এই লাঠি খেলা আবারও প্রমাণ করেছে- গ্রামবাংলা এখনও তার নিজস্ব ঐশ্বর্যে উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত ও চিরন্তন ঐতিহ্যে ভরপুর। লাঠির প্রতিটি ঝঙ্কারে বেজে উঠেছে ঐক্য, সাহস ও মাটির প্রতি ভালোবাসার অমলিন সুর।