শীতের আগমনী বার্তা, খেজুর গাছিদের বেড়েছে ব্যস্ততা
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
২০ নভেম্বর, ২০২৫, 6:30 PM
শীতের আগমনী বার্তা, খেজুর গাছিদের বেড়েছে ব্যস্ততা
ভোরে পাতায় শিশির বিন্দু, দিনে মিষ্টি রোদ, হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। বারহাট্টার প্রকৃতি জুড়ে শীতের আমেজ শুরু হতেই গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।খেজুরের গাছ প্রস্তুত ও রস সংগ্রহে।
শীত আর খেজুর রস যেন একে অপরের সমার্থক। অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে রাতে ও ভোরে শীত অনুভূত হচ্ছে, সেই সঙ্গে প্রকৃতিতে ঘন কুয়াশার আধিপত্য। প্রকৃতির এমন বৈচিত্র্যে খেঁজুরের রস আরেক অনুষঙ্গ। পুরোদমে শীত না পড়লেও অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বারহাট্টা উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত এলাকা জুড়ে পুরোদমে চলছে খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। ফলে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। ইতোমধ্যে অধিকাংশ গাছ রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, পড়ন্ত বিকেলে ঠুঙ্গি, বাইলধারা, দড়ি ও দা হাতে গাছিরা ছুটে যাচ্ছেন গাছের পানে। নিপুণ হাতে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করছেন তারা। মাথা পরিষ্কারের পর গাছে দেওয়া হয় দুই সপ্তাহের বিশ্রাম।
কয়েকজন গাছিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, কার্তিক মাসের শেষ দিকে গাছ চাঁছার কাজ শেষ করে তারা এখন হাঁড়ি বেঁধে রস সংগ্রহ করছেন। পুরোদমে এখনও শীত না পড়ায় হাঁড়িতে অল্প পরিমাণ রস পড়ছে। শীত যত বেশি হবে ততই বাড়বে রসের পরিমাণ। এ এলাকায় গাছির সংখ্যা কম হওয়ায় অধিকাংশ গাছ থেকে রস আহরণ করা সম্ভব হয় না। বর্তমান প্রজন্ম কৃষি কাজের প্রতি আগ্রহী হওয়ায় কমছে গাছির সংখ্যা। তারপরও আগামী চার-পাঁচ মাস খেজুরের রস বিক্রির অর্থে চলবে তাদের সংসার।
গাছিরা আরও বলেন, শীত মৌসুমের রস সংগ্রহের এই সময়টাতে কাজের চাপে যেন দম ফেলারও সময় নেই। উপজেলায় খেজুর রসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এক গ্লাস রস সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। শুধু রস বিক্রি করে অনেকটা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে গাছিরা। খেজুর গাছের বুক চিরে সাদা অংশ বের করে একটি পাইপ লাগিয়ে মাটির পাত্র (কলসি) বেঁধে সকাল ও সন্ধ্যায় রস সংগ্রহ করা হয়।
তাদের দাবি, বর্তমানে গাছির সংখ্যা কম হওয়ায় অধিকাংশ খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করা সম্ভব হবে না। বর্তমান প্রজন্ম কৃষি কাজে আগ্রহী না হওয়ায় কমছে গাছির সংখ্যা। তারপরও আগামী চার মাস খেজুরের রস ও গুড় বিক্রির অর্থে চলবে তাদের সংসার।
চল্লিশা এলাকায় গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছি সাহেব রহমান বলেন, 'সাধারণত শীতকালের শুরু অগ্রহায়ণ মাসে প্রথম দিকে রস সংগ্রহের জন্য গাছগুলো প্রস্তুত করি। একটা গাছের ডাল-পালা কেটে প্রস্তুত করতে কয়েকদিন সময় লাগে। প্রতি বছরেই এই এলাকার ৪০-৫০টা গাছ চুকে ভাড়া হিসাবে নেই। গাছ থেকে রস নামানোর প্রাথমিক কাজ শেষ করে এখন রস আহরণের কাজ করছি।'
তিনি আরও বলেন, রাতে বাদুর ও পোকামাকড় যেন হাঁড়ির ভেতর প্রবেশ করতে না পারে এজন্য সতর্কতার সঙ্গে হাঁড়িতে জাল পেঁচিয়ে রাখি। সকালে লোকজন আসার পর হাঁড়ি গাছ থেকে নামিয়ে আনি। প্রতিদিন প্রায় গড়ে প্রায় ২০-৩০ লিটার রস বিক্রি করতে পারি। শীত মৌসুম জুড়ে ব্যস্ত সময় কাটাবো। এ বছর রস সংগ্রহের জন্য এখনো পর্যন্ত অনেক গাছ প্রস্তুত করেছি। আশা করছি আগামী ৪-৫ মাস ভালই উপার্জন হবে।
বারহাটাট এলাকার গাছি সুবল দাসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বর্তমান প্রজন্ম খেজুরের রস আহরণ করার বিষয়টি কেউ আয়ত্ত করতে চায় না। তারা সবাই শহরমুখী, পড়াশুনা চাকরি-বাকরি নিয়ে ব্যস্ত। ফলে শীত মৌসুমে নিজেদের খাওয়ার জন্য রস পাওয়া যায় না। অথচ এক সময় আমাদের গ্রামের গাছগুলো থেকে বাজারে রস বিক্রি করে কয়েকটি পরিবারের খরচ চলতো।
জেলা সদরের মুক্তার পাড়া এলাকয় খেজুরের রস খেতে আসা কলেজ ছাত্র আজাদ, সুমন, রিসান ও জনি বলেন, বর্তমান সময়ে সবাই শহরমুখী, পড়াশুনা চাকরি-বাকরি নিয়ে ব্যস্ত। ফলে শীত মৌসুমে নিজেদের খাওয়ার জন্য রস পাওয়া যায় না। রস খেতে খুব সুস্বাদু। প্রতি গ্লাস ২০ টাকা করে খেলাম। ভাবছি আমরা বন্ধুরা সবাই সকালে এক গ্লাস করে খাব।
জেলা সদরের কুর পাড় মোড় এলাকায় ভোরে হাঁটতে আসা কয়েজন খেজুর রস ক্রেতার সাথে কথা বললে তারা বলেন, কাক ডাকা ভোরে খেজুরের রস তার মনমাতানো ঘ্রাণ শহরে বিরল-ছন্দটির মতো শীতের সকালে শহরে টাটকা এক গ্লাস খেজুরের রসের স্বাদের তুলনা হয় না। তাই, নিজেরা এক গ্লাস করে খেয়ে বোতলে করে বাসার অন্যান্য সদস্যদের জন্য নিয়ে যাচ্ছি।
এলাকার সচেতন মহল বলেন, একসময়ে বারহাট্টার বিভিন্ন অঞ্চলে বড় আকৃতির খেজুর গাছ ছিল। এই জনপদের সাধারণ মানুষ সচেতন না হওয়ার পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ ইট-ভাটায় জ্বালানি হিসাবে বেশি ব্যবহার করার কারণে বর্তমানে কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে খেজুর গাছের ঐতিহ্য। এখন প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তারা মনে করেন, খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
খেজুরের রস সম্পর্কে ডা. আবু রায়হান বলেন , খেজুর রস সুস্বাদু ও উপকারী পানীয়। তবে ঐতিহ্যের ধারক এই খেজুর রসের মাধ্যমে বর্তমানে ‘নিপাহ ভাইরাস’ নামক একটি রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। নিপাহ ভাইরাস মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। তবে অন্তত ৭০-৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটিয়ে খেতে পারলে নিপাহ ভাইরাস ছড়ানোর আশংকা অনেকাংশে কম থাকে। তাই নিজের কথা চিন্তা করে সবাইকে খেজুর ও তালের রস ফুটিয়ে খাওয়া উচিত।
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
২০ নভেম্বর, ২০২৫, 6:30 PM
ভোরে পাতায় শিশির বিন্দু, দিনে মিষ্টি রোদ, হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। বারহাট্টার প্রকৃতি জুড়ে শীতের আমেজ শুরু হতেই গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।খেজুরের গাছ প্রস্তুত ও রস সংগ্রহে।
শীত আর খেজুর রস যেন একে অপরের সমার্থক। অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে রাতে ও ভোরে শীত অনুভূত হচ্ছে, সেই সঙ্গে প্রকৃতিতে ঘন কুয়াশার আধিপত্য। প্রকৃতির এমন বৈচিত্র্যে খেঁজুরের রস আরেক অনুষঙ্গ। পুরোদমে শীত না পড়লেও অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বারহাট্টা উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত এলাকা জুড়ে পুরোদমে চলছে খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। ফলে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। ইতোমধ্যে অধিকাংশ গাছ রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, পড়ন্ত বিকেলে ঠুঙ্গি, বাইলধারা, দড়ি ও দা হাতে গাছিরা ছুটে যাচ্ছেন গাছের পানে। নিপুণ হাতে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করছেন তারা। মাথা পরিষ্কারের পর গাছে দেওয়া হয় দুই সপ্তাহের বিশ্রাম।
কয়েকজন গাছিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, কার্তিক মাসের শেষ দিকে গাছ চাঁছার কাজ শেষ করে তারা এখন হাঁড়ি বেঁধে রস সংগ্রহ করছেন। পুরোদমে এখনও শীত না পড়ায় হাঁড়িতে অল্প পরিমাণ রস পড়ছে। শীত যত বেশি হবে ততই বাড়বে রসের পরিমাণ। এ এলাকায় গাছির সংখ্যা কম হওয়ায় অধিকাংশ গাছ থেকে রস আহরণ করা সম্ভব হয় না। বর্তমান প্রজন্ম কৃষি কাজের প্রতি আগ্রহী হওয়ায় কমছে গাছির সংখ্যা। তারপরও আগামী চার-পাঁচ মাস খেজুরের রস বিক্রির অর্থে চলবে তাদের সংসার।
গাছিরা আরও বলেন, শীত মৌসুমের রস সংগ্রহের এই সময়টাতে কাজের চাপে যেন দম ফেলারও সময় নেই। উপজেলায় খেজুর রসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এক গ্লাস রস সর্বোচ্চ ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। শুধু রস বিক্রি করে অনেকটা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে গাছিরা। খেজুর গাছের বুক চিরে সাদা অংশ বের করে একটি পাইপ লাগিয়ে মাটির পাত্র (কলসি) বেঁধে সকাল ও সন্ধ্যায় রস সংগ্রহ করা হয়।
তাদের দাবি, বর্তমানে গাছির সংখ্যা কম হওয়ায় অধিকাংশ খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করা সম্ভব হবে না। বর্তমান প্রজন্ম কৃষি কাজে আগ্রহী না হওয়ায় কমছে গাছির সংখ্যা। তারপরও আগামী চার মাস খেজুরের রস ও গুড় বিক্রির অর্থে চলবে তাদের সংসার।
চল্লিশা এলাকায় গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছি সাহেব রহমান বলেন, 'সাধারণত শীতকালের শুরু অগ্রহায়ণ মাসে প্রথম দিকে রস সংগ্রহের জন্য গাছগুলো প্রস্তুত করি। একটা গাছের ডাল-পালা কেটে প্রস্তুত করতে কয়েকদিন সময় লাগে। প্রতি বছরেই এই এলাকার ৪০-৫০টা গাছ চুকে ভাড়া হিসাবে নেই। গাছ থেকে রস নামানোর প্রাথমিক কাজ শেষ করে এখন রস আহরণের কাজ করছি।'
তিনি আরও বলেন, রাতে বাদুর ও পোকামাকড় যেন হাঁড়ির ভেতর প্রবেশ করতে না পারে এজন্য সতর্কতার সঙ্গে হাঁড়িতে জাল পেঁচিয়ে রাখি। সকালে লোকজন আসার পর হাঁড়ি গাছ থেকে নামিয়ে আনি। প্রতিদিন প্রায় গড়ে প্রায় ২০-৩০ লিটার রস বিক্রি করতে পারি। শীত মৌসুম জুড়ে ব্যস্ত সময় কাটাবো। এ বছর রস সংগ্রহের জন্য এখনো পর্যন্ত অনেক গাছ প্রস্তুত করেছি। আশা করছি আগামী ৪-৫ মাস ভালই উপার্জন হবে।
বারহাটাট এলাকার গাছি সুবল দাসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বর্তমান প্রজন্ম খেজুরের রস আহরণ করার বিষয়টি কেউ আয়ত্ত করতে চায় না। তারা সবাই শহরমুখী, পড়াশুনা চাকরি-বাকরি নিয়ে ব্যস্ত। ফলে শীত মৌসুমে নিজেদের খাওয়ার জন্য রস পাওয়া যায় না। অথচ এক সময় আমাদের গ্রামের গাছগুলো থেকে বাজারে রস বিক্রি করে কয়েকটি পরিবারের খরচ চলতো।
জেলা সদরের মুক্তার পাড়া এলাকয় খেজুরের রস খেতে আসা কলেজ ছাত্র আজাদ, সুমন, রিসান ও জনি বলেন, বর্তমান সময়ে সবাই শহরমুখী, পড়াশুনা চাকরি-বাকরি নিয়ে ব্যস্ত। ফলে শীত মৌসুমে নিজেদের খাওয়ার জন্য রস পাওয়া যায় না। রস খেতে খুব সুস্বাদু। প্রতি গ্লাস ২০ টাকা করে খেলাম। ভাবছি আমরা বন্ধুরা সবাই সকালে এক গ্লাস করে খাব।
জেলা সদরের কুর পাড় মোড় এলাকায় ভোরে হাঁটতে আসা কয়েজন খেজুর রস ক্রেতার সাথে কথা বললে তারা বলেন, কাক ডাকা ভোরে খেজুরের রস তার মনমাতানো ঘ্রাণ শহরে বিরল-ছন্দটির মতো শীতের সকালে শহরে টাটকা এক গ্লাস খেজুরের রসের স্বাদের তুলনা হয় না। তাই, নিজেরা এক গ্লাস করে খেয়ে বোতলে করে বাসার অন্যান্য সদস্যদের জন্য নিয়ে যাচ্ছি।
এলাকার সচেতন মহল বলেন, একসময়ে বারহাট্টার বিভিন্ন অঞ্চলে বড় আকৃতির খেজুর গাছ ছিল। এই জনপদের সাধারণ মানুষ সচেতন না হওয়ার পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ ইট-ভাটায় জ্বালানি হিসাবে বেশি ব্যবহার করার কারণে বর্তমানে কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে খেজুর গাছের ঐতিহ্য। এখন প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তারা মনে করেন, খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
খেজুরের রস সম্পর্কে ডা. আবু রায়হান বলেন , খেজুর রস সুস্বাদু ও উপকারী পানীয়। তবে ঐতিহ্যের ধারক এই খেজুর রসের মাধ্যমে বর্তমানে ‘নিপাহ ভাইরাস’ নামক একটি রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। নিপাহ ভাইরাস মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। তবে অন্তত ৭০-৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটিয়ে খেতে পারলে নিপাহ ভাইরাস ছড়ানোর আশংকা অনেকাংশে কম থাকে। তাই নিজের কথা চিন্তা করে সবাইকে খেজুর ও তালের রস ফুটিয়ে খাওয়া উচিত।