ঢাকা ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
শিরোনামঃ
৩১ দফা বাস্তবায়নে নওগাঁয় রাতভর বিএনপির লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি কোম্পানীগঞ্জে এনটিআরসিএ কর্তৃক সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিটিএ'র সংবর্ধনা  উত্তর ফটিকছড়ি উপজেলায় অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন বাগেরহাটে এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও  মানববন্ধন মাধবপুরে খাস জমি থেকে ড্রেজার মেশিন দ্বারা  মাঠি উত্তোলন, প্রশাসন নিরব বাগেরহাটে মহিদুল নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যাঃ আটক ২  বেলকুচিতে ৪৮টি গরুসহ খামার পেলেন আত্মসমর্পন করা ৬৭ চরমপন্থী শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী টঙ্গী কলেজে লিফলেট বিতরণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাধা বাগেরহাটের পচা দিঘী থেকে মৃতদেহ উদ্ধার

নেত্রকোনায় আমন আবাদে ব্যস্ত কৃষক

#
news image

আমন ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার কৃষকরা। মৌসুমের শুরুতেই বড় ধরনের বর্ষণ ও উজান থেকে ঢলের পানি নেমে আসার আগেই তরিঘরি করে জমি চাষ ও রোপণে ব্যস্ত তারা। ভরা মৌসুম হাওয়ায় আমন ধানের চাষকে ঘিরে মাঠে মাঠে এখন যেন উৎসবের আমেজ।

সরেজমিনে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলাঘুরে দেখা গেছে, কেউ জমিতে হাল চাষ করছেন, কেউবা জমির আইল কাটছেন, আবার কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলে ধান রোপণে ব্যস্ত। কৃষকরা আশা করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার জমিতে ফসল ভালো হবে।

জেলা সদরের কাইলাটি গ্রামের কৃষক জলিল মিয়া, রহিস উদ্দিন, মদন এলাকার মিজান মিয়া, হাদিস ফকির, মোহনগঞ্জ গ্রামের জজ মিয়া, গৌতম চন্দ্রসহ আরো কয়েকটি এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে আমরা রোপা আমন চাষ করে থাকি। এ বছর আষাঢ় মাসের শুরুতে বৃষ্টির দেখা মিললেও মাসের শেষে ভাগে এবং শ্রাবণের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টির না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম কিন্তু শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘনঘন বৃষ্টি হওয়ায় রোপা আমন ধান লাগানো শুরু করেছি। অনেক দিন অপেক্ষার পর কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির নাগাল পেয়েছি। গত বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বেশ ভালো ফলন হয়েছিল। এবার আমন চাষে মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টির পরিমান কম থাকায় দুশ্চিন্তায় ছিলাম তবে মাঝামাঝি সময়ে এসে বৃষ্টির দেখা পেয়েছি। তাই বড় ধরণের বর্ষা ও উত্তরের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে জমি তলিয়ে যাওয়ার আগেই তরিঘরি করে আমন ধান রোপণ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত আমন আবাদে তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। সময় সময় বৃষ্টি হওয়াতে সেচের কাজ হচ্ছে।

এলাকায় রোপা-আমন ধানের আবাদ শুরু হয়েছে জানিয়ে বারহাট্টা উপজেলার গড়মা গ্রামের কৃষক তপন সরকার  বলেন, এবার আমি ১২ বিঘা জমিতে ধান আবাদ শুরু করেছি। শ্রমিক সঙ্কট হওয়ায় তাদের পারিশ্রমিক অনেক বেড়ে গেছে। বিঘাপ্রতি চুক্তিতে তাদের জনপ্রতি প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা হাজিরা দিতে হচ্ছে। যাতে করে গত বছরের তুলনায় শ্রমিক খরচ পড়ছে অনেক বেশি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ৪ একর জমিতে বৃষ্টির পানি জমেছে। আমন ধান চারা রোপণের উপযোগী করে জমি চাষ শেষে চারা রোপণের কাজ করছি। আশা করছি, এ বছর লাভের মুখ দেখতে পারব।

নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৫৫ হাজার হেক্টর।

কৃষি বিভাগ আরও জানায়, জেলায় এবার ১ লাখ ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল, ৩ হাজার ৫৬০ হেক্টরে হাইব্রিড এবং ২১ হাজার হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন আবাদ করা হচ্ছে। যে গতিতে আমন আবাদ হচ্ছে, তাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আবাদ হবে।

নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, এ বছর নেত্রকোনায় আমন আবাদে সমস্যা হচ্ছে না। জেলার সর্বত্রই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। সেচের যেমন সমস্যা হচ্ছে না, তেমনি আমন চারা উত্পাদনেও কৃষকদের কোনো সমস্যা হয়নি। এদিকে শহরতলির আশপাশে গিয়ে দেখা গেছে, কোনো কোনো এলাকায় গ্রাম থেকে শহরের আশপাশের এলাকায় আমন চারা উত্পাদনকারীরা আমন চারা রিকশায় এনে কৃষকদের কাছে বিক্রি করছে।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ও জেলা সার মনিটরিং কমিটির সভাপতি বনানী বিশ্বাস বলেন, প্রতি মাসে সার মনিটরিং কমিটির সভায় জেলার সার বিপণন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। নেত্রকোণায় সব ধরনের সার পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। কৃষকদের সার পেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি :

০১ আগস্ট, ২০২৫,  10:49 PM

news image

আমন ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার কৃষকরা। মৌসুমের শুরুতেই বড় ধরনের বর্ষণ ও উজান থেকে ঢলের পানি নেমে আসার আগেই তরিঘরি করে জমি চাষ ও রোপণে ব্যস্ত তারা। ভরা মৌসুম হাওয়ায় আমন ধানের চাষকে ঘিরে মাঠে মাঠে এখন যেন উৎসবের আমেজ।

সরেজমিনে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলাঘুরে দেখা গেছে, কেউ জমিতে হাল চাষ করছেন, কেউবা জমির আইল কাটছেন, আবার কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলে ধান রোপণে ব্যস্ত। কৃষকরা আশা করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার জমিতে ফসল ভালো হবে।

জেলা সদরের কাইলাটি গ্রামের কৃষক জলিল মিয়া, রহিস উদ্দিন, মদন এলাকার মিজান মিয়া, হাদিস ফকির, মোহনগঞ্জ গ্রামের জজ মিয়া, গৌতম চন্দ্রসহ আরো কয়েকটি এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে আমরা রোপা আমন চাষ করে থাকি। এ বছর আষাঢ় মাসের শুরুতে বৃষ্টির দেখা মিললেও মাসের শেষে ভাগে এবং শ্রাবণের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টির না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম কিন্তু শ্রাবণের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘনঘন বৃষ্টি হওয়ায় রোপা আমন ধান লাগানো শুরু করেছি। অনেক দিন অপেক্ষার পর কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির নাগাল পেয়েছি। গত বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বেশ ভালো ফলন হয়েছিল। এবার আমন চাষে মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টির পরিমান কম থাকায় দুশ্চিন্তায় ছিলাম তবে মাঝামাঝি সময়ে এসে বৃষ্টির দেখা পেয়েছি। তাই বড় ধরণের বর্ষা ও উত্তরের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে জমি তলিয়ে যাওয়ার আগেই তরিঘরি করে আমন ধান রোপণ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত আমন আবাদে তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। সময় সময় বৃষ্টি হওয়াতে সেচের কাজ হচ্ছে।

এলাকায় রোপা-আমন ধানের আবাদ শুরু হয়েছে জানিয়ে বারহাট্টা উপজেলার গড়মা গ্রামের কৃষক তপন সরকার  বলেন, এবার আমি ১২ বিঘা জমিতে ধান আবাদ শুরু করেছি। শ্রমিক সঙ্কট হওয়ায় তাদের পারিশ্রমিক অনেক বেড়ে গেছে। বিঘাপ্রতি চুক্তিতে তাদের জনপ্রতি প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা হাজিরা দিতে হচ্ছে। যাতে করে গত বছরের তুলনায় শ্রমিক খরচ পড়ছে অনেক বেশি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ৪ একর জমিতে বৃষ্টির পানি জমেছে। আমন ধান চারা রোপণের উপযোগী করে জমি চাষ শেষে চারা রোপণের কাজ করছি। আশা করছি, এ বছর লাভের মুখ দেখতে পারব।

নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৫৫ হাজার হেক্টর।

কৃষি বিভাগ আরও জানায়, জেলায় এবার ১ লাখ ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল, ৩ হাজার ৫৬০ হেক্টরে হাইব্রিড এবং ২১ হাজার হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন আবাদ করা হচ্ছে। যে গতিতে আমন আবাদ হচ্ছে, তাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আবাদ হবে।

নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, এ বছর নেত্রকোনায় আমন আবাদে সমস্যা হচ্ছে না। জেলার সর্বত্রই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। সেচের যেমন সমস্যা হচ্ছে না, তেমনি আমন চারা উত্পাদনেও কৃষকদের কোনো সমস্যা হয়নি। এদিকে শহরতলির আশপাশে গিয়ে দেখা গেছে, কোনো কোনো এলাকায় গ্রাম থেকে শহরের আশপাশের এলাকায় আমন চারা উত্পাদনকারীরা আমন চারা রিকশায় এনে কৃষকদের কাছে বিক্রি করছে।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ও জেলা সার মনিটরিং কমিটির সভাপতি বনানী বিশ্বাস বলেন, প্রতি মাসে সার মনিটরিং কমিটির সভায় জেলার সার বিপণন ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। নেত্রকোণায় সব ধরনের সার পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। কৃষকদের সার পেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।