হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে ৪ ঘন্টাব্যাপী ভয়াবহ সংঘর্ষে নিহত ১ ॥ আহত শতাধিক

মোঃ রিপন মিয়া, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
০৯ জুলাই, ২০২৫, 6:26 AM

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে ৪ ঘন্টাব্যাপী ভয়াবহ সংঘর্ষে নিহত ১ ॥ আহত শতাধিক
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে তুচ্চ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ৪ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১ জন নিহত ও শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। এ সময় অর্ধশতাধিক দোকানপাটে ভাংচুর ও কয়েকটি দোকানেন অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করলেও মাইকে ঘোষনা দিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন শত শত মানুষ। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে রনক্ষেত্রে পরিণত হয় নবীগঞ্জ শহর।
এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ ও অগ্নিসংযোগে ট্রান্সফরমার পুড়ে গেলে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনসাধারনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার (৪ জুলাই) উপজেলার তিমিরপুর গ্রামের খসরু মিয়ার সাথে ইনাতগঞ্জের বাসিন্দা আশাহীদ আলী আশার কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে আশাহীদ আলী আশার পক্ষ নেয় আনমনু গ্রামের লোকজন। এর জের ধরে ওই দিন রাতে কয়েকটি দোকানে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে গত ৩ দিন ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছিল। এতে উত্তপ্ত হয়ে উঠে নবীগঞ্জ শহর। গতকাল সোমবার সকালে আনমনু ও পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের লোকজন পুর্ব ঘোষনা দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় পুর্ব প্রস্তুতিমুলক মিটিং করেন। বিকাল ৩ টায় পূর্ব ঘোষনা দিয়ে উভয় গ্রামের শত শত মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে পূর্ব তিমির পুর, পশ্চিম তিমিরপুর ও চরগাও গ্রামের নারী পুরুষ দুটি পক্ষ হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। সংঘর্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পাশাপাশি শতাধিক দোকান পাট ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয়া হয়। এর মধ্যে ইউনাইটেড হসপিটাল, হাসেমবাগ হোটেল ও মাছ বাজারে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। সংঘর্ষ এড়াতে ৪ টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন শহরের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেন। তবে প্রশাসনের আইন ভঙ্গ করে দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। এতে দুপক্ষের শতাধিক লোকজন আহত হন। এর মধ্যে পুর্ব তিমিরপুর গ্রামের আউয়াল মিয়ার ছেলে এ্যাম্বুলেন্স চালক ফারুক মিয়াকে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে আনমনু গ্রামের লোকজন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আহত অন্যান্যদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, ভয়াবহ ৪ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এর জের ধরে শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ‘সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। সংঘর্ষে ব্যাপক ভাংচুর ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেমনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে’।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন বলেন, ‘নবীগঞ্জ শহওে সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা বিকাল ৪ টা থেকে ৮ জুলাই রাত ১২ টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছি। পরিস্থিতি বুঝে ১৪৪ ধারার সময় বর্ধিত করা হতে পারে’। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন প্রশাসনে নিয়ন্ত্রনে রয়েছে’।
মোঃ রিপন মিয়া, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
০৯ জুলাই, ২০২৫, 6:26 AM

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে তুচ্চ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ৪ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১ জন নিহত ও শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। এ সময় অর্ধশতাধিক দোকানপাটে ভাংচুর ও কয়েকটি দোকানেন অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করলেও মাইকে ঘোষনা দিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন শত শত মানুষ। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে রনক্ষেত্রে পরিণত হয় নবীগঞ্জ শহর।
এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ ও অগ্নিসংযোগে ট্রান্সফরমার পুড়ে গেলে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনসাধারনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার (৪ জুলাই) উপজেলার তিমিরপুর গ্রামের খসরু মিয়ার সাথে ইনাতগঞ্জের বাসিন্দা আশাহীদ আলী আশার কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে আশাহীদ আলী আশার পক্ষ নেয় আনমনু গ্রামের লোকজন। এর জের ধরে ওই দিন রাতে কয়েকটি দোকানে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে গত ৩ দিন ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছিল। এতে উত্তপ্ত হয়ে উঠে নবীগঞ্জ শহর। গতকাল সোমবার সকালে আনমনু ও পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের লোকজন পুর্ব ঘোষনা দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় পুর্ব প্রস্তুতিমুলক মিটিং করেন। বিকাল ৩ টায় পূর্ব ঘোষনা দিয়ে উভয় গ্রামের শত শত মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে পূর্ব তিমির পুর, পশ্চিম তিমিরপুর ও চরগাও গ্রামের নারী পুরুষ দুটি পক্ষ হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। সংঘর্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পাশাপাশি শতাধিক দোকান পাট ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয়া হয়। এর মধ্যে ইউনাইটেড হসপিটাল, হাসেমবাগ হোটেল ও মাছ বাজারে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। সংঘর্ষ এড়াতে ৪ টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন শহরের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেন। তবে প্রশাসনের আইন ভঙ্গ করে দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। এতে দুপক্ষের শতাধিক লোকজন আহত হন। এর মধ্যে পুর্ব তিমিরপুর গ্রামের আউয়াল মিয়ার ছেলে এ্যাম্বুলেন্স চালক ফারুক মিয়াকে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে আনমনু গ্রামের লোকজন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আহত অন্যান্যদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, ভয়াবহ ৪ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এর জের ধরে শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ‘সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। সংঘর্ষে ব্যাপক ভাংচুর ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেমনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে’।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন বলেন, ‘নবীগঞ্জ শহওে সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা বিকাল ৪ টা থেকে ৮ জুলাই রাত ১২ টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছি। পরিস্থিতি বুঝে ১৪৪ ধারার সময় বর্ধিত করা হতে পারে’। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন প্রশাসনে নিয়ন্ত্রনে রয়েছে’।