বাবাকে না পেয়ে ছেলেকে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার অভিযোগ এসআই সজিবের বিরুদ্ধে
গাজীপুর সংবাদদাতা:
২০ নভেম্বর, ২০২৪, 3:03 AM
বাবাকে না পেয়ে ছেলেকে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার অভিযোগ এসআই সজিবের বিরুদ্ধে
গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজিব দেবনাথের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা পিতাকে না পেয়ে তার ছেলেকে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার পর শারীরিক নির্যাতন এবং মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর দাবি, এ ঘটনায় তাকে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয় এবং দুই লাখ টাকায় সমঝোতার মাধ্যমে মামলা লঘু করা হয়।
অভিযোগ মতে, ঘটনাটি ঘটে গত জুলাই মাসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সময়ে। ছাত্র আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন। এসআই সজিব দেবনাথ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানায় কর্মরত ছিলেন। রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর তিনি বাসন থানায় বদলি হন।
অভিযোগকারী বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী গাছা থানার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং গাছা থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি জানান, ২৮ জুলাই ঢাকায় বিএনপির একটি বড় কর্মসূচি ছিল। এর ৪-৫ দিন আগে তার বাড়িতে এসে তাকে না পেয়ে এসআই সজিব দেবনাথ তার ছেলে মো. জিহান আল রাব্বীকে ধরে নিয়ে যান।
মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। এসআই সজিব আমার বাড়িতে এসে আমাকে না পেয়ে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ তাতে কর্ণপাত করেনি। থানায় নিয়ে গিয়ে আমার ছেলেকে ভয়ানক শারীরিক নির্যাতন করা হয়। লাঠি দিয়ে মারধর, লাথি-ঘুষি দিয়ে আঘাত করা হয়। কোমর ও পশ্চাৎদেশে আঘাত করে অসুস্থ করে ফেলে।
“এরপর পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। অনেক চেষ্টা করে দুই লাখ টাকায় সমঝোতা করি। এরপর তাকে একটি সাধারণ মামলায় অভিযুক্ত করে কোর্টে চালান দেওয়া হয়। পরে উকিলের মাধ্যমে তাকে জামিন করাতে হয়।”
উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মো. জিহান আল রাব্বী জানান, “২৮ জুলাইয়ের কয়েক দিন আগে এসআই সজিব দেবনাথ আমাদের বাড়িতে এসে বাবাকে খুঁজতে থাকেন। বাবা বাড়িতে না থাকায় আমাকে ধরে নিয়ে যান। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। আমার ছাত্র পরিচয় দেওয়ার পরও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং শারীরিক আঘাত করতে থাকেন।
“তিনি বলেন, ‘তোর জীবন শেষ করে দেব। পাঁচ লাখ টাকা দিলে ছাড়া পাবি, না হলে তোর জীবন এখানেই শেষ।’ আমি ছাত্র, রাজনীতির সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই, তা বলার পরও তিনি কথা শোনেননি। আমাকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়, লাথি, কিল, ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করা হয়।”
জিহান আরও বলেন, “আমার নামে ফুটপাতের মারামারির একটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। অথচ আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে বাবার পরিচিতদের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করি এবং জামিনে মুক্তি পাই।”
বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলীর দাবি, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নির্যাতন। তিনি বলেন, “আমার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে এসআই সজিব দেবনাথ আমাকে হয়রানি করেন। ছেলের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আমাকে আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করেন। আমি এই ঘটনার জন্য তার কঠোর শাস্তি দাবি করছি।”
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এসআই দেবনাথ গাছা থানায় কর্মরত থাকাকালীন সময়ে একাধিক বিএনপি নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হেনস্তা করেছেন। বিএনপি নেতাদের ধরতে না পেরে তাদের সন্তানদের গ্রেফতার করে দিয়েছেন মিথ্যা মামলা। জানা যায়, গাছা থানাধীন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ কামরুল ইসলাম ছেলে রফিকুল ইসলাম সাজনকে আটক করেন এসআই দেবনাথ। পরে মিথ্যা মামলার ভয়-ভীতি দেখিয়ে ১ লক্ষ টাকা নেন তিনি। গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা এলাকায় এমন অহরহ অভিযোগ রয়েছে পুলিশের এই এসআইয়ের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ভুক্তভোগী পরিবার স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের কাছে সুবিচার চেয়েছেন।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই সজিব দেবনাথের বক্তব্য নিতে গেলে, তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাহেদুল ইসলামের উপস্থিতে সংবাদকর্মীদের উপর চড়াও হন এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন । যার একটি ভিডিও ক্লিপ সংবাদকর্মীদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। এসআই সজিব দেবনাথ বলেন, "আপনারা যা করার করেন।"
গাজীপুর সংবাদদাতা:
২০ নভেম্বর, ২০২৪, 3:03 AM
গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজিব দেবনাথের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা পিতাকে না পেয়ে তার ছেলেকে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার পর শারীরিক নির্যাতন এবং মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর দাবি, এ ঘটনায় তাকে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয় এবং দুই লাখ টাকায় সমঝোতার মাধ্যমে মামলা লঘু করা হয়।
অভিযোগ মতে, ঘটনাটি ঘটে গত জুলাই মাসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সময়ে। ছাত্র আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন। এসআই সজিব দেবনাথ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানায় কর্মরত ছিলেন। রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর তিনি বাসন থানায় বদলি হন।
অভিযোগকারী বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী গাছা থানার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং গাছা থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি জানান, ২৮ জুলাই ঢাকায় বিএনপির একটি বড় কর্মসূচি ছিল। এর ৪-৫ দিন আগে তার বাড়িতে এসে তাকে না পেয়ে এসআই সজিব দেবনাথ তার ছেলে মো. জিহান আল রাব্বীকে ধরে নিয়ে যান।
মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। এসআই সজিব আমার বাড়িতে এসে আমাকে না পেয়ে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ তাতে কর্ণপাত করেনি। থানায় নিয়ে গিয়ে আমার ছেলেকে ভয়ানক শারীরিক নির্যাতন করা হয়। লাঠি দিয়ে মারধর, লাথি-ঘুষি দিয়ে আঘাত করা হয়। কোমর ও পশ্চাৎদেশে আঘাত করে অসুস্থ করে ফেলে।
“এরপর পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। অনেক চেষ্টা করে দুই লাখ টাকায় সমঝোতা করি। এরপর তাকে একটি সাধারণ মামলায় অভিযুক্ত করে কোর্টে চালান দেওয়া হয়। পরে উকিলের মাধ্যমে তাকে জামিন করাতে হয়।”
উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মো. জিহান আল রাব্বী জানান, “২৮ জুলাইয়ের কয়েক দিন আগে এসআই সজিব দেবনাথ আমাদের বাড়িতে এসে বাবাকে খুঁজতে থাকেন। বাবা বাড়িতে না থাকায় আমাকে ধরে নিয়ে যান। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। আমার ছাত্র পরিচয় দেওয়ার পরও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং শারীরিক আঘাত করতে থাকেন।
“তিনি বলেন, ‘তোর জীবন শেষ করে দেব। পাঁচ লাখ টাকা দিলে ছাড়া পাবি, না হলে তোর জীবন এখানেই শেষ।’ আমি ছাত্র, রাজনীতির সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই, তা বলার পরও তিনি কথা শোনেননি। আমাকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়, লাথি, কিল, ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করা হয়।”
জিহান আরও বলেন, “আমার নামে ফুটপাতের মারামারির একটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। অথচ আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে বাবার পরিচিতদের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করি এবং জামিনে মুক্তি পাই।”
বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলীর দাবি, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নির্যাতন। তিনি বলেন, “আমার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে এসআই সজিব দেবনাথ আমাকে হয়রানি করেন। ছেলের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আমাকে আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করেন। আমি এই ঘটনার জন্য তার কঠোর শাস্তি দাবি করছি।”
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এসআই দেবনাথ গাছা থানায় কর্মরত থাকাকালীন সময়ে একাধিক বিএনপি নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হেনস্তা করেছেন। বিএনপি নেতাদের ধরতে না পেরে তাদের সন্তানদের গ্রেফতার করে দিয়েছেন মিথ্যা মামলা। জানা যায়, গাছা থানাধীন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোঃ কামরুল ইসলাম ছেলে রফিকুল ইসলাম সাজনকে আটক করেন এসআই দেবনাথ। পরে মিথ্যা মামলার ভয়-ভীতি দেখিয়ে ১ লক্ষ টাকা নেন তিনি। গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা এলাকায় এমন অহরহ অভিযোগ রয়েছে পুলিশের এই এসআইয়ের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ভুক্তভোগী পরিবার স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের কাছে সুবিচার চেয়েছেন।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই সজিব দেবনাথের বক্তব্য নিতে গেলে, তিনি গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাহেদুল ইসলামের উপস্থিতে সংবাদকর্মীদের উপর চড়াও হন এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন । যার একটি ভিডিও ক্লিপ সংবাদকর্মীদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। এসআই সজিব দেবনাথ বলেন, "আপনারা যা করার করেন।"