প্রকৃতিতে থোকায় থোকায় রঙিন মাধবীলতার শুভ্রতা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
১২ এপ্রিল, ২০২৫, 10:36 PM

প্রকৃতিতে থোকায় থোকায় রঙিন মাধবীলতার শুভ্রতা
মাধবীলতা ফুল চেনেন না এমন মানুষ খুবই কম। বসন্তের শেষ ভাগে ও গ্রীষ্মের আগমনে পলাশ-শিমুলের বিদায়ে প্রকৃতিকে রঙিন রূপে সাজাতে মাধবীলতা ফুলের শুভ্রতার জুড়ি নেই। নেত্রকোনার প্রকৃতি জুড়ে ঘন সবুজ পাতার মাঝে ঝুলন্ত সাদা-গোলাপী-লাল ফুল দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় যেকোনো ফুলপ্রেমীর।
নিজের বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে মানুষ মাধবীলতা গাছ লাগায়। বিশেষ করে বাড়ির প্রবেশ দ্বার, ছাদ, ফুল বাগানে, ঘরের চালসহ বাড়ির আঙিনায় ছোট-বড় গাছের ডালে এ ফুলগাছ দেখা যায়। প্রকৃতির ছদ্মবেশে ধূলি উড়া গোধূলি শেষে যখন সন্ধ্যা নামে, তখনই মাধবীলতার মিষ্টি ঘ্রাণে সৌরভ ছড়ায়। অঞ্চলভেদে লাল-গোলাপী-
সরেজমিনে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি গ্রামেই বাড়ির আঙিনায় অথবা ছোট-বড় গাছের ডালে ডালে সাদা-গোলাপী-লাল রঙের সৌন্দর্য নিয়ে থোকায় থোকায় অজস্র ফুল ফুটেছে। চৈত্রের তপ্ত দুপুরে মাধবীলতার রঙিন সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে সকলকে।
উপজেলার বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (স্কুল ও কলেজ) বাংলা বিষয়ের সিনিয়র প্রভাষক সাহিত্যমনা বিজয় চন্দ্র দাসের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কবিগুরুর ‘মধুমঞ্জরীলতা’ আমাদে
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ফুলটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি রাতে তীব্র মিষ্টি ঘ্রাণে ভরিয়ে রেখেছে চারপাশ। ডালের আগায় বড় বড় ঝুলন্ত থোকা। প্রতিটি থোকায় ১০ থেকে ১৫টি লাল-গোলাপী-সাদা ফুল। সবুজ পাতার ফাঁকে রঙিন ফুলের থোকা দূর থেকে দেখলে মনে হয় মাধবী তার নিজের মনের মাধুরি মিশিয়ে সাজিয়েছে প্রকৃতিকে।
নেত্রকোনা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক জায়েদা মেহের নিগার বলেন, মধুমঞ্জরীলতা বা মাধবীলতাফুলটি Combretaceae
তিনি আরও বলেন, মাধবীলতার গোড়া এবং শেকড় থেকে নতুন গাছ গজায়। লতা কেটে মাটিতে পুঁতলেও চারা হয়। এর পাতা কিছুটা পাতলা ও খসখসে প্রকৃতির, গঠনে আয়তাকার থেকে ডিম্বাকার, রং সবুজ, এর পাতাগুলো শাখায় জোড়ায় জোড়ায় সুবিন্যস্তভাবে সাজানো থাকে। পাতার আকৃতি ছয় থেকে নয় সেন্টিমিটার লম্বা, শিরা সামান্য রোমশ, পত্রবিন্যাস বিপ্রতীপ। তাজা ও বাসি ফুলে রঙের ভিন্নতাও এ ফুলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাজা ফুলের রং সাদা, বাসি হলে লাল হয়। ফুলে ক্ষুদ্রাকৃতির পাপড়ি সংখ্যা পাঁচটি, মাঝে পরাগ অবস্থিত, দলনল বেশ লম্বা।
এর ভেষজ উপকারিতা সম্পর্কে বারহাট্টা উপজেলা সদরের যশমাধব গ্রামের বাসিন্দা কবিরাজ কুতুবউদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, মধুমঞ্জরীলতা বা মাধবীলতা শুধু আমাদের প্রকৃতির সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না, এ উদ্ভিদ আমাদের অনেক রোগ থেকে মুক্তিও দেয়। এর বহুবিধ ভেষজ গুণও রয়েছে। এর পাতার রস চর্মরোগে ও মাথার যন্ত্রনার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং পুরনো বাত ও হাঁপানীর উপশমে লাগে। এর বীজ কৃমি, ডায়ারিয়া ও জ্বর নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ গাছের কান্ড সর্দি, কাশি এবং ঠান্ডা লাগায় ব্যবহার করা হয়। গাছের শুকনো ছালের গুঁড়া বিষাক্ত ঘা সারিয়ে তোলে।
নেত্রকোনা প্রতিনিধি :
১২ এপ্রিল, ২০২৫, 10:36 PM

মাধবীলতা ফুল চেনেন না এমন মানুষ খুবই কম। বসন্তের শেষ ভাগে ও গ্রীষ্মের আগমনে পলাশ-শিমুলের বিদায়ে প্রকৃতিকে রঙিন রূপে সাজাতে মাধবীলতা ফুলের শুভ্রতার জুড়ি নেই। নেত্রকোনার প্রকৃতি জুড়ে ঘন সবুজ পাতার মাঝে ঝুলন্ত সাদা-গোলাপী-লাল ফুল দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় যেকোনো ফুলপ্রেমীর।
নিজের বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে মানুষ মাধবীলতা গাছ লাগায়। বিশেষ করে বাড়ির প্রবেশ দ্বার, ছাদ, ফুল বাগানে, ঘরের চালসহ বাড়ির আঙিনায় ছোট-বড় গাছের ডালে এ ফুলগাছ দেখা যায়। প্রকৃতির ছদ্মবেশে ধূলি উড়া গোধূলি শেষে যখন সন্ধ্যা নামে, তখনই মাধবীলতার মিষ্টি ঘ্রাণে সৌরভ ছড়ায়। অঞ্চলভেদে লাল-গোলাপী-
সরেজমিনে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি গ্রামেই বাড়ির আঙিনায় অথবা ছোট-বড় গাছের ডালে ডালে সাদা-গোলাপী-লাল রঙের সৌন্দর্য নিয়ে থোকায় থোকায় অজস্র ফুল ফুটেছে। চৈত্রের তপ্ত দুপুরে মাধবীলতার রঙিন সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে সকলকে।
উপজেলার বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (স্কুল ও কলেজ) বাংলা বিষয়ের সিনিয়র প্রভাষক সাহিত্যমনা বিজয় চন্দ্র দাসের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কবিগুরুর ‘মধুমঞ্জরীলতা’ আমাদে
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ফুলটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি রাতে তীব্র মিষ্টি ঘ্রাণে ভরিয়ে রেখেছে চারপাশ। ডালের আগায় বড় বড় ঝুলন্ত থোকা। প্রতিটি থোকায় ১০ থেকে ১৫টি লাল-গোলাপী-সাদা ফুল। সবুজ পাতার ফাঁকে রঙিন ফুলের থোকা দূর থেকে দেখলে মনে হয় মাধবী তার নিজের মনের মাধুরি মিশিয়ে সাজিয়েছে প্রকৃতিকে।
নেত্রকোনা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক জায়েদা মেহের নিগার বলেন, মধুমঞ্জরীলতা বা মাধবীলতাফুলটি Combretaceae
তিনি আরও বলেন, মাধবীলতার গোড়া এবং শেকড় থেকে নতুন গাছ গজায়। লতা কেটে মাটিতে পুঁতলেও চারা হয়। এর পাতা কিছুটা পাতলা ও খসখসে প্রকৃতির, গঠনে আয়তাকার থেকে ডিম্বাকার, রং সবুজ, এর পাতাগুলো শাখায় জোড়ায় জোড়ায় সুবিন্যস্তভাবে সাজানো থাকে। পাতার আকৃতি ছয় থেকে নয় সেন্টিমিটার লম্বা, শিরা সামান্য রোমশ, পত্রবিন্যাস বিপ্রতীপ। তাজা ও বাসি ফুলে রঙের ভিন্নতাও এ ফুলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাজা ফুলের রং সাদা, বাসি হলে লাল হয়। ফুলে ক্ষুদ্রাকৃতির পাপড়ি সংখ্যা পাঁচটি, মাঝে পরাগ অবস্থিত, দলনল বেশ লম্বা।
এর ভেষজ উপকারিতা সম্পর্কে বারহাট্টা উপজেলা সদরের যশমাধব গ্রামের বাসিন্দা কবিরাজ কুতুবউদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, মধুমঞ্জরীলতা বা মাধবীলতা শুধু আমাদের প্রকৃতির সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না, এ উদ্ভিদ আমাদের অনেক রোগ থেকে মুক্তিও দেয়। এর বহুবিধ ভেষজ গুণও রয়েছে। এর পাতার রস চর্মরোগে ও মাথার যন্ত্রনার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং পুরনো বাত ও হাঁপানীর উপশমে লাগে। এর বীজ কৃমি, ডায়ারিয়া ও জ্বর নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ গাছের কান্ড সর্দি, কাশি এবং ঠান্ডা লাগায় ব্যবহার করা হয়। গাছের শুকনো ছালের গুঁড়া বিষাক্ত ঘা সারিয়ে তোলে।