ঢাকা ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

বরগুনার বেতাগীতে খাল খননের নামে বাড়িঘরসহ গাছপালা উপড়ে ফেলা হচ্ছে

#
news image

ব্যক্তিমালিকানার সম্পত্তিতে হাত
বেতাগী(বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার বেতাগীতে খাল খননের নামে বাড়িঘরসহ গাছপালা উপড়ে ফেলা হচ্ছে। উপজেলার ঝোপখালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খননে এ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। 
মূল খালের নকশা রেখে মানুষের বাড়িঘরসহ গাছপালা উপড়ে ফেলা হচ্ছে। বাধা দিলে ঠিকাদারের লোকজন স্থানীয়দের মারধরসহ নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে।
জানা গেছে, বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে বেতাগী উপজেলায় ১০টি খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। খননকাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোহাম্মদ ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স। এসব খালের মধ্যে উপজেলার ছোট ঝোপখালী খালের সাড়ে ৯০০ মিটার অংশের খননকাজ চলছে। এ কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি মূল খালের নকশার বাইরে গিয়ে ইচ্ছামতো কাজ করছে। ২০ দিন ধরে চলা খননকাজে প্রায় ৫০টি বসতবাড়িসহ গাছপালা উপড়ে ফেলা হচ্ছে।ভূমি মালিকরা অভিযোগ দেওয়ায় ইতোমধ্যে রোববার ভূমি কর্মকর্তা খাল খননের কাজ বন্ধ এবং খননযন্ত্র সিলগালা করে দিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, নকশায় মূল খাল ১৫ থেকে ২০ ফুট প্রস্থের থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অতিরিক্ত লাভের আশায় ৪০ থেকে ৪৫ ফুট প্রশস্ত খাল খনন করছেন। এ কাজ করতে গিয়ে অনেক বাড়িঘর গাছপালাসহ উপড়ে ফেলা হচ্ছে। বাধা দিলে ঠিকাদারের লোকজন হুমকি দিচ্ছে।
ছোট ঝোপখালী গ্রামের মাঈনুল ইসলাম বলেন, নকশা অনুযায়ী প্রস্থের ছিল ১০ থেকে ১৫ ফুট। কিন্তু বর্তমানে ঠিকাদার ৪০ থেকে ৪৫ ফুট  প্রস্থ নিয়ে খালটি খনন করছে। এভাবে তাদের 
পুরোনো বাগানবাড়িসহ গাছপালা উপড়ে ফেলা হচ্ছে। বাধা দিলে ঠিকাদার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে গ্রামবাসীর ওপর হামলা করছে। এমনকি মামলার হুমকিও দিচ্ছে।
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় মাইনুল ইসলাম চান মিয়া, আবদুল আজিজ, সানু হাওলাদারসহ অনেকে।
বেতাগী সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনির সিকদার বলেন, একটি বদ্ধ খাল খননের প্রকল্প নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখানে স্থানীয়দের অন্তত ৫০০ মিটার রেকর্ডীয় সম্পত্তি আছে; যা বেতাগী সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন পরিদর্শন করে গেছেন। তিনি সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ করে দেন।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা মনির হোসেন লাভলুর দাবি, জমির নকশা অনুযায়ী খাল খনন করা হচ্ছে। এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বেতাগী পৌরসভার মেয়র এ বি এম গোলাম কবির। মনির হোসেন বলেন, শুরু থেকেই স্থানীয় কিছু মানুষ খাল খননের বিরোধিতা করে আসছেন। তারাই নানা অভিযোগ করছেন। তবে এ কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়র এ বি এম গোলাম কবির।
এ বিষয়ে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে নকশা অনুযায়ী খাল খনন করা হবে।
বেতাগী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বিপূল সিকদার বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে খাল খননের কাজ বন্ধ রাখতে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত অভিযোগের নিস্পত্তি হওয়ার আগেই ঠিকাদার তা অমান্য করে পুনরায় কাজ করায় বরগুনা জেলা প্রশাসকের নিদের্শনানুয়াীয় খাল খননের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।  
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে খাল খননের কোন সূযোগ নেই। ফলে জেলা প্রশাসনের নিদের্শনা অনুয়ায়ী ইতোমধ্যে ঐ খাল খননের কাজ বন্ধ এবং খননযন্ত্র সিলগালা করে দিয়ে আসা হয়েছে। এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদারকে নকশা অনুযায়ী খাল খননের নিদের্শনা দিয়েছেন। কিন্ত  ঠিকাদার তার পরেও তা মানছেন না। 

 

 

বেতাগী,বরগুনা

০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪,  7:38 PM

news image

ব্যক্তিমালিকানার সম্পত্তিতে হাত
বেতাগী(বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার বেতাগীতে খাল খননের নামে বাড়িঘরসহ গাছপালা উপড়ে ফেলা হচ্ছে। উপজেলার ঝোপখালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খননে এ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। 
মূল খালের নকশা রেখে মানুষের বাড়িঘরসহ গাছপালা উপড়ে ফেলা হচ্ছে। বাধা দিলে ঠিকাদারের লোকজন স্থানীয়দের মারধরসহ নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে।
জানা গেছে, বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে বেতাগী উপজেলায় ১০টি খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়। খননকাজ বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোহাম্মদ ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স। এসব খালের মধ্যে উপজেলার ছোট ঝোপখালী খালের সাড়ে ৯০০ মিটার অংশের খননকাজ চলছে। এ কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি মূল খালের নকশার বাইরে গিয়ে ইচ্ছামতো কাজ করছে। ২০ দিন ধরে চলা খননকাজে প্রায় ৫০টি বসতবাড়িসহ গাছপালা উপড়ে ফেলা হচ্ছে।ভূমি মালিকরা অভিযোগ দেওয়ায় ইতোমধ্যে রোববার ভূমি কর্মকর্তা খাল খননের কাজ বন্ধ এবং খননযন্ত্র সিলগালা করে দিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, নকশায় মূল খাল ১৫ থেকে ২০ ফুট প্রস্থের থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অতিরিক্ত লাভের আশায় ৪০ থেকে ৪৫ ফুট প্রশস্ত খাল খনন করছেন। এ কাজ করতে গিয়ে অনেক বাড়িঘর গাছপালাসহ উপড়ে ফেলা হচ্ছে। বাধা দিলে ঠিকাদারের লোকজন হুমকি দিচ্ছে।
ছোট ঝোপখালী গ্রামের মাঈনুল ইসলাম বলেন, নকশা অনুযায়ী প্রস্থের ছিল ১০ থেকে ১৫ ফুট। কিন্তু বর্তমানে ঠিকাদার ৪০ থেকে ৪৫ ফুট  প্রস্থ নিয়ে খালটি খনন করছে। এভাবে তাদের 
পুরোনো বাগানবাড়িসহ গাছপালা উপড়ে ফেলা হচ্ছে। বাধা দিলে ঠিকাদার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে গ্রামবাসীর ওপর হামলা করছে। এমনকি মামলার হুমকিও দিচ্ছে।
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় মাইনুল ইসলাম চান মিয়া, আবদুল আজিজ, সানু হাওলাদারসহ অনেকে।
বেতাগী সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনির সিকদার বলেন, একটি বদ্ধ খাল খননের প্রকল্প নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখানে স্থানীয়দের অন্তত ৫০০ মিটার রেকর্ডীয় সম্পত্তি আছে; যা বেতাগী সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন পরিদর্শন করে গেছেন। তিনি সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ করে দেন।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা মনির হোসেন লাভলুর দাবি, জমির নকশা অনুযায়ী খাল খনন করা হচ্ছে। এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বেতাগী পৌরসভার মেয়র এ বি এম গোলাম কবির। মনির হোসেন বলেন, শুরু থেকেই স্থানীয় কিছু মানুষ খাল খননের বিরোধিতা করে আসছেন। তারাই নানা অভিযোগ করছেন। তবে এ কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়র এ বি এম গোলাম কবির।
এ বিষয়ে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে নকশা অনুযায়ী খাল খনন করা হবে।
বেতাগী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বিপূল সিকদার বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে খাল খননের কাজ বন্ধ রাখতে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত অভিযোগের নিস্পত্তি হওয়ার আগেই ঠিকাদার তা অমান্য করে পুনরায় কাজ করায় বরগুনা জেলা প্রশাসকের নিদের্শনানুয়াীয় খাল খননের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।  
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে খাল খননের কোন সূযোগ নেই। ফলে জেলা প্রশাসনের নিদের্শনা অনুয়ায়ী ইতোমধ্যে ঐ খাল খননের কাজ বন্ধ এবং খননযন্ত্র সিলগালা করে দিয়ে আসা হয়েছে। এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদারকে নকশা অনুযায়ী খাল খননের নিদের্শনা দিয়েছেন। কিন্ত  ঠিকাদার তার পরেও তা মানছেন না।