তুরস্কে আরও তিন বিরোধীদলীয় মেয়র গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেক্স :
০৫ জুলাই, ২০২৫, 11:16 PM

তুরস্কে আরও তিন বিরোধীদলীয় মেয়র গ্রেপ্তার
তুরস্কে বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)’র আরও তিনজন মেয়রকে শনিবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের অংশ হিসেবে এ অভিযান চালানো হয়। তবে সিএইচপি একে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযান’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
গত ২০২৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের একে পার্টিকে বড় পরাজয়ের মুখে ফেলে সিএইচপি তুরস্কজুড়ে জনসমর্থন বাড়িয়েছে। এরপর থেকেই বিরোধী নেতাদের ওপর সরকারি চাপ বাড়ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
সাম্প্রতিক গ্রেপ্তারগুলো মার্চ মাসে ইস্তাম্বুলের প্রভাবশালী মেয়র ও ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিএইচপি প্রার্থী একরেম ইমামওগলুকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনার ধারাবাহিকতায় ঘটল। তার গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ২০১৩ সালের পর তুরস্কে সবচেয়ে বড় রাজপথ আন্দোলন হিসেবে দেখা দেয়।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইজমিরে দুর্নীতির অভিযোগে পুলিশ ১৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারি পরোয়নায় মোট ১৫৭ জনের নাম রয়েছে।
ইস্তাম্বুল থেকে এএফপি জানায়, শনিবার যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা হলেন: দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আদানা’র মেয়র জেইদান কারালার, উপকূলীয় শহর আন্তালিয়ার মেয়র মুহিত্তিন বোজেক এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের আদিয়ামান শহরের মেয়র আবদুররহমান তুতদের।
কারালারকে যখন পুলিশি গাড়িতে নেওয়া হচ্ছিল, তখন এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘যেখানে প্রভাবশালী সাংবাদিক বা রাজনীতিবিদ আছেন, ওদের চুপ করিয়ে দেওয়া হয়।’
আঙ্কারার বিরোধীদলীয় মেয়র মানসুর ইয়াভাশ বলেছেন, ‘যেখানে আইন রাজনীতির কারণে বাঁক নেয়, এক পক্ষের জন্য ন্যায়বিচার চলে আর অন্য পক্ষের জন্য থেমে যায়, সেখানে আইন বা ন্যায়বিচারের ওপর আস্থা রাখা যায় না। আমরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।’
তুরস্কের সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম দল কুর্দিহন্থী ডিইএম পার্টিও এ গ্রেপ্তারগুলোর নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হয়রানি বন্ধ হওয়া উচিত।’
ডিইএম-এর সহ-সভাপতি তুলায় হাতিমওগল্লারি বলেছেন, ‘জনগণের ব্যালটের মাধ্যমে দেওয়া সিদ্ধান্তকে অসম্মান করে, তাদের ইচ্ছাকে অস্বীকার করে দেশকে গণতন্ত্র থেকে আরও দূরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযান কোনো সমাধান নয়, বরং গণতান্ত্রিক তুরস্কের পথে বাধা।’
মঙ্গলবার ইস্তাম্বুল সিটি হলের সামনে সিএইচপি আয়োজিত এক সমাবেশে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশ নেন, যেটি ছিল ইমামওগলুর কারাবন্দি জীবনের ১০০তম দিনের প্রতীকী প্রতিবাদ।
শনিবার সিএইচপি নেতা ওজগুর ওজেল এই গ্রেপ্তার অভিযানকে ‘এক রাজনীতিকের হাতে পরিচালিত নোংরা অপারেশন’ বলে উল্লেখ করেন। তার ইঙ্গিত ছিল ইস্তাম্বুলের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আকিন গুরলেকের দিকে, যিনি ২০২২ সালে উপ-বিচারমন্ত্রী ছিলেন এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরে বর্তমান পদে নিযুক্ত হন।
এরদোয়ান শনিবার আনাদোলু বার্তা সংস্থাকে বলেন, ‘সিএইচপি রাস্তায় নামার মাধ্যমে তাদের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করছে এবং আমাদের বিচার বিভাগকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।’
এদিকে সোমবার রাজধানী আঙ্কারার একটি আদালতে সিএইচপি’র ২০২৩ সালের দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট কেনাবেচার অভিযোগে একটি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে, যা দলের নেতা ওজেলকে অপসারণের দিকে যেতে পারে।
বিরগুন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, একই দুর্নীতির মামলায় ইস্তাম্বুলের বুয়ুকচেকমেজে জেলার উপ-মেয়র আহমেত শাহিনকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আন্তর্জাতিক ডেক্স :
০৫ জুলাই, ২০২৫, 11:16 PM

তুরস্কে বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)’র আরও তিনজন মেয়রকে শনিবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের অংশ হিসেবে এ অভিযান চালানো হয়। তবে সিএইচপি একে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযান’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
গত ২০২৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের একে পার্টিকে বড় পরাজয়ের মুখে ফেলে সিএইচপি তুরস্কজুড়ে জনসমর্থন বাড়িয়েছে। এরপর থেকেই বিরোধী নেতাদের ওপর সরকারি চাপ বাড়ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
সাম্প্রতিক গ্রেপ্তারগুলো মার্চ মাসে ইস্তাম্বুলের প্রভাবশালী মেয়র ও ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিএইচপি প্রার্থী একরেম ইমামওগলুকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনার ধারাবাহিকতায় ঘটল। তার গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ২০১৩ সালের পর তুরস্কে সবচেয়ে বড় রাজপথ আন্দোলন হিসেবে দেখা দেয়।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইজমিরে দুর্নীতির অভিযোগে পুলিশ ১৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারি পরোয়নায় মোট ১৫৭ জনের নাম রয়েছে।
ইস্তাম্বুল থেকে এএফপি জানায়, শনিবার যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা হলেন: দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আদানা’র মেয়র জেইদান কারালার, উপকূলীয় শহর আন্তালিয়ার মেয়র মুহিত্তিন বোজেক এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের আদিয়ামান শহরের মেয়র আবদুররহমান তুতদের।
কারালারকে যখন পুলিশি গাড়িতে নেওয়া হচ্ছিল, তখন এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘যেখানে প্রভাবশালী সাংবাদিক বা রাজনীতিবিদ আছেন, ওদের চুপ করিয়ে দেওয়া হয়।’
আঙ্কারার বিরোধীদলীয় মেয়র মানসুর ইয়াভাশ বলেছেন, ‘যেখানে আইন রাজনীতির কারণে বাঁক নেয়, এক পক্ষের জন্য ন্যায়বিচার চলে আর অন্য পক্ষের জন্য থেমে যায়, সেখানে আইন বা ন্যায়বিচারের ওপর আস্থা রাখা যায় না। আমরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।’
তুরস্কের সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম দল কুর্দিহন্থী ডিইএম পার্টিও এ গ্রেপ্তারগুলোর নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হয়রানি বন্ধ হওয়া উচিত।’
ডিইএম-এর সহ-সভাপতি তুলায় হাতিমওগল্লারি বলেছেন, ‘জনগণের ব্যালটের মাধ্যমে দেওয়া সিদ্ধান্তকে অসম্মান করে, তাদের ইচ্ছাকে অস্বীকার করে দেশকে গণতন্ত্র থেকে আরও দূরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযান কোনো সমাধান নয়, বরং গণতান্ত্রিক তুরস্কের পথে বাধা।’
মঙ্গলবার ইস্তাম্বুল সিটি হলের সামনে সিএইচপি আয়োজিত এক সমাবেশে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশ নেন, যেটি ছিল ইমামওগলুর কারাবন্দি জীবনের ১০০তম দিনের প্রতীকী প্রতিবাদ।
শনিবার সিএইচপি নেতা ওজগুর ওজেল এই গ্রেপ্তার অভিযানকে ‘এক রাজনীতিকের হাতে পরিচালিত নোংরা অপারেশন’ বলে উল্লেখ করেন। তার ইঙ্গিত ছিল ইস্তাম্বুলের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আকিন গুরলেকের দিকে, যিনি ২০২২ সালে উপ-বিচারমন্ত্রী ছিলেন এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরে বর্তমান পদে নিযুক্ত হন।
এরদোয়ান শনিবার আনাদোলু বার্তা সংস্থাকে বলেন, ‘সিএইচপি রাস্তায় নামার মাধ্যমে তাদের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করছে এবং আমাদের বিচার বিভাগকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।’
এদিকে সোমবার রাজধানী আঙ্কারার একটি আদালতে সিএইচপি’র ২০২৩ সালের দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট কেনাবেচার অভিযোগে একটি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে, যা দলের নেতা ওজেলকে অপসারণের দিকে যেতে পারে।
বিরগুন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, একই দুর্নীতির মামলায় ইস্তাম্বুলের বুয়ুকচেকমেজে জেলার উপ-মেয়র আহমেত শাহিনকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।