ঢাকা ০৬ জুলাই, ২০২৫
শিরোনামঃ
শহীদদের রক্তের সঙ্গে কাউকে বেঈমানি করতে দেবো না : কুমিল্লায় শফিকুর রহমান আমদানি-রপ্তানি শুল্ক-কর পরিশোধে অনলাইনে ‘এ চালান’ সেবা চালু করল এনবিআর জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর আশা প্রসিকিউসনের গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে রুয়েটের হিট প্রকল্প তুরস্কে আরও তিন বিরোধীদলীয় মেয়র গ্রেপ্তার জুলাই যোদ্ধার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর ভিডিও দিয়ে অপপ্রচার শনাক্ত: বাংলাফ্যাক্ট তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে গোল উৎসব করে জিতল বাংলাদেশ গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যু জাস্টিস আবু জাফর সিদ্দিকী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের বৃত্তি পেল ৮০ শিক্ষার্থী ফটিকছড়ির প্রবাসী ভাইয়ের লাশ আনতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো আরো দু'ভাইয়ের

'সীমান্তে খাস কালেকশন নামে চলছে লুটপাট'

#
news image

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদে অবস্থিত শাহপরীর দ্বীপের জেটিঘাট। এখান দিয়ে যাতায়াতকারী জনসাধারণ বা জেলে নৌকা থেকে নিয়মিত টোল আদায় করা হয়। এ জন্য জেটিঘাটের ইজারা নিতে হয় জেলা পরিষদ থেকে। চলতি বছরের ইজারা না হলেও জেলা অফিসের পিয়নকে ইজারাদার সাজিয়ে একটি চক্র তিন মাস ধরে টোল আদায় করে লাখ লাখ টাকা লুটপাট চালাচ্ছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কক্সবাজারের এক জামায়াত নেতাসহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন। 


এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ৫৫০ মিটার লম্বা ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত জেটিটি ২০০৪ সালে কক্সবাজার জেলা পরিষদকে স্থানান্তর করলে, সেটি ২০০৬ সালে উদ্বোধন এবং উম্মুক্তের পর জেটিটি দেখবাল দায়িত্ব পান জেলা পরিষদ। প্রতি বছর জেটিটি ইজারা দেওয়া হলেও চলতি বছরে জেটিটি ইজারা না হওযায় এবার খাস কালেকশন আদায়ের সিন্ধান্ত নেয় জেলা পরিষদ। এই সুযোগে জেলা পরিষদ কার্যালয়ের পিয়ন মোহাম্মদ শাহ আলমকে ইজারাদার সাজিয়ে একটি চক্র টোল আদায় শুরু করে। সম্প্রতি শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে চার-পাঁচজন ব্যক্তিকে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে টোল আদায় করতে দেখা দেয়। সেই রসিদেও ইজারাদার হিসেবে শাহ আলমের নাম আছে। যদিও পিয়নের নামে ইজারার কোন বিধান নেই। এরপরও  খাস কালেকশন যে নিয়মে আদায় করার কথা, তার সম্পূর্ণ  নিয়ম বহিভ’ত ভাবে স্থানীয়দের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে টাকা উত্তোলন করে লুটপাট চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।


 অনুসন্ধানে জানা গেছে, পুরো বিষয়টিই লোক দেখানো। ওই ঘাটের কোনো ইজারা দেওয়া হয়নি। কিন্তু কক্সবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন এবং  দ্বীপে স্থানীয় বাসিন্দা মো.ইউনুচ ওরফে বাইলাসহ কয়েকজন লোক মিলে সেখান থেকে টোল আদায় শুরু করেন। এপ্রিলের (বৈশাখের শুরু) মাঝামাঝি থেকে এই চক্রটি জেটিতে আসা প্রতিজনের কাছ থেকে ১০-২০ টাকা করে আদায় করছে। এ ছাড়া জেটির অদূরে অবস্থিত জেলেপল্লির জালিয়াপাড়া ঘাট ও দক্ষিণ জালিয়াপাড়া ঘাট এবং জেটি ঘাট আলাদাভাবে ২৪ লাখ টাকায় ইজারা দেয়। তারা সেখান থেকেও প্রতি ড্রাম মাছ থেকে তারা ১০০ টাকা করে আদায় করছে এবং প্রতি মাছ ধরার ট্রলার থেকে বছরের ৪ হাজার টাকা করেও নিচ্ছে বলে জেলেরা জানিয়েছেন। এলাকায় প্রচার রয়েছে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে মোটা অংকের টাকা লুটপাট চলছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিজেকে খাস কালেকশন আদায়ে দায়িত্বকারী দাবি করে জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শুরুতে জেলা পরিষদ থেকে জেটি ঘাট ইজারা নেওয়া কথা স্বীকার করলেও পরে সে কথা থেকে সরে এসে, তাকে জেলা পরিষদ থেকে খাস কালেকশন উত্তোলনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা জেটি ঘাটসহ আশপাশের কোন ঘাট ইজারা বা বিক্রি করেনি। যেহেতু খাস কালেকশন আদায় আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাই আমার লোকজন সেখানে খাস কালেকশন আদায় করছে। পরবর্তিতে সেই টাকা গুলো জেলা পরিষদকে জমা দেওয়া হয়। এখানে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোন সুযোগ নেই।’      


তবে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘শাহপরী জেটি ঘাট ইজারা না হওয়ায় খাস কালেকশন আদায় চলছে। আমাদের অফিসের মোহাম্মদ শাহ আলম খাস কালেকশনের দায়িত্বে আছেন। তাই কোনভাবে কেউ ইজারা দেওয়া সুযোগ নেই। যদি এ ধরনের কোন বিষয় থাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


শাহপরীর দ্বীপে মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শফিক বলেন, ‘ইজারাদার দাবি করে স্থানীয় মো. ইউনুচ বাইলা এবং জিয়াবুল আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে। টাকা না দিয়ে আমাদের চাপ সৃষ্টি করে। এতো দিন ইজারাদার দাবি করে টাকা আদায় করে আসছিল। কিন্তু এখন জেনেছি জেলা পরিষদ থেকে জেটি ঘাট কোন ইজারা দেয়নি। এরপরও ঘাটে টাকা আদায় করছে।’এদিকে শাহপরী দ্বীপ জেটি ঘাটে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে খাস কালেকশন নামে ৪-৫ জন মিলে টাকা আদায় করেন। এসময় তারা জেলা পরিষদের নামে একটি টোল আদায়ের রশিদও দিচ্ছেন। যেখানে ইজারাদার হিসেবে জেলা পরিষদের অফিস পিয়ন মোহাম্মদ শাহ আলম এর নাম রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে কিভাবে পিয়ন ইজারাদার হয়?

স্থানীয়রা বলছে, একটি অসাধু চক্র মূলত ইজারার নাম ভাঙিয়ে লোকজনকে ইজারা দিয়ে লাখ লাখ টাকা লোটপাট করেছে। এতে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তবে একাধিকবার কল করেও ইজারাদার মোহাম্মদ শাহ আলমকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, ‘জামায়াত নেতা আনোয়ার জেলা পরিষদের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া কথা বলে স্থানীয় কয়েকজন কিছু ব্যাক্তিকে আলাদা ভাবে ঘাটগুলো বিক্রি করে দেয়। এসব ঘাট থেকে এই পর্যন্ত ২৪ লাখ টাকা আদায় করেন। তিন মাসের মাথায় এসে জানতে পারি শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট কোন ইজারা দেয়নি জেলা পরিষদ। এখন প্রশ্ন হলো কার প্রশয়ে তারা এই অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। এমনকি জেটি ঘাটে অসহায় জেলে বড়শি নিয়ে মাছ শিকারীদের কাছ থেকেও ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এক বছরের জন্য ইজারা দেয় মো. ইউনুছ ওরফে বাইলা।’  

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মো: ইউনুচ বাইলা বলেন, ‘আমি কোন ইজারাদার নই। ফলে আমি কাউকে ইজারা দেওয়ার প্রশ্নও আসে না। মূলত আমি এক নেতার অধীনে টোল আদায় করছি। এর বাইরে আমি কোন কিছুতে জড়িত নই।’

নাম না বলার শর্তে শাহপরীর দ্বীপের এক টোল আদায়কারী বলেন, শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট ইজারা না হওয়ায় জেলা পরিষদ খাস কালেকশন আদায় করছেন বলে শুনেছি। তবে কিছু প্রভাবশালী ইজারাদার দাবি করে ঘাট আলাদাভাবে বিক্রি করেছে। কিন্তু এখন এসে তারা খাস কালেকশন আদায় করছে বলে প্রচার করছে। যদিও সরকারী খাস কালেকশন আদায়ের কিছু নিয়ম রয়েছে। একজন সরকারী কর্মকর্তার অধীনের প্রতিদিন যে টাকা আদায় হবে, সে টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হবে। কিন্তু শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের চিত্র ভিন্ন। এখানে এলাকা এলাকা ভাগ করে বছরের টাকা একত্রে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছেন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বর্হিভ’ত।’

শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ‘সম্প্রতি টোল আদায় নিয়ে তৈরী হওয়া দ্ব›দ্ব সমাধানে নিজেকে ইজারা দাবিদার মোহাম্মদ আনোয়ারসহ আমরা একটি বৈঠকে বসেছিলাম। কিন্তু সেখানে কোন সমাধান হয়নি। ফলে বিষয়টি এখন ইউএনও স্যার দেখছেন।’

জেলা জামায়াতের আমীর নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমি বিষয়টি জেনেছি। ইজারার বিষয়টি খতিয়ে দেখে সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী র্কমকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘কতিপয় কিছু ব্যক্তি বেআইনিভাবে শাহপরীর দ্বীপের ঘাট ইজারা দিয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া অবৈধ নিয়োগকারী কেউ যদি চাঁদা এবং খাস কালেকশন আদায় করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’    

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন বলেন, ‘শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে। সেটি সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখে জানাতে বলা হয়েছে। এ ধরনের অনিয়মে সতত্য পাওয়া গেলে অ্যাকশন নেওয়া হবে।

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :

০৫ জুলাই, ২০২৫,  6:30 PM

news image

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদে অবস্থিত শাহপরীর দ্বীপের জেটিঘাট। এখান দিয়ে যাতায়াতকারী জনসাধারণ বা জেলে নৌকা থেকে নিয়মিত টোল আদায় করা হয়। এ জন্য জেটিঘাটের ইজারা নিতে হয় জেলা পরিষদ থেকে। চলতি বছরের ইজারা না হলেও জেলা অফিসের পিয়নকে ইজারাদার সাজিয়ে একটি চক্র তিন মাস ধরে টোল আদায় করে লাখ লাখ টাকা লুটপাট চালাচ্ছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কক্সবাজারের এক জামায়াত নেতাসহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন। 


এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ৫৫০ মিটার লম্বা ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত জেটিটি ২০০৪ সালে কক্সবাজার জেলা পরিষদকে স্থানান্তর করলে, সেটি ২০০৬ সালে উদ্বোধন এবং উম্মুক্তের পর জেটিটি দেখবাল দায়িত্ব পান জেলা পরিষদ। প্রতি বছর জেটিটি ইজারা দেওয়া হলেও চলতি বছরে জেটিটি ইজারা না হওযায় এবার খাস কালেকশন আদায়ের সিন্ধান্ত নেয় জেলা পরিষদ। এই সুযোগে জেলা পরিষদ কার্যালয়ের পিয়ন মোহাম্মদ শাহ আলমকে ইজারাদার সাজিয়ে একটি চক্র টোল আদায় শুরু করে। সম্প্রতি শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে চার-পাঁচজন ব্যক্তিকে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে টোল আদায় করতে দেখা দেয়। সেই রসিদেও ইজারাদার হিসেবে শাহ আলমের নাম আছে। যদিও পিয়নের নামে ইজারার কোন বিধান নেই। এরপরও  খাস কালেকশন যে নিয়মে আদায় করার কথা, তার সম্পূর্ণ  নিয়ম বহিভ’ত ভাবে স্থানীয়দের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে টাকা উত্তোলন করে লুটপাট চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।


 অনুসন্ধানে জানা গেছে, পুরো বিষয়টিই লোক দেখানো। ওই ঘাটের কোনো ইজারা দেওয়া হয়নি। কিন্তু কক্সবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন এবং  দ্বীপে স্থানীয় বাসিন্দা মো.ইউনুচ ওরফে বাইলাসহ কয়েকজন লোক মিলে সেখান থেকে টোল আদায় শুরু করেন। এপ্রিলের (বৈশাখের শুরু) মাঝামাঝি থেকে এই চক্রটি জেটিতে আসা প্রতিজনের কাছ থেকে ১০-২০ টাকা করে আদায় করছে। এ ছাড়া জেটির অদূরে অবস্থিত জেলেপল্লির জালিয়াপাড়া ঘাট ও দক্ষিণ জালিয়াপাড়া ঘাট এবং জেটি ঘাট আলাদাভাবে ২৪ লাখ টাকায় ইজারা দেয়। তারা সেখান থেকেও প্রতি ড্রাম মাছ থেকে তারা ১০০ টাকা করে আদায় করছে এবং প্রতি মাছ ধরার ট্রলার থেকে বছরের ৪ হাজার টাকা করেও নিচ্ছে বলে জেলেরা জানিয়েছেন। এলাকায় প্রচার রয়েছে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে মোটা অংকের টাকা লুটপাট চলছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিজেকে খাস কালেকশন আদায়ে দায়িত্বকারী দাবি করে জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শুরুতে জেলা পরিষদ থেকে জেটি ঘাট ইজারা নেওয়া কথা স্বীকার করলেও পরে সে কথা থেকে সরে এসে, তাকে জেলা পরিষদ থেকে খাস কালেকশন উত্তোলনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা জেটি ঘাটসহ আশপাশের কোন ঘাট ইজারা বা বিক্রি করেনি। যেহেতু খাস কালেকশন আদায় আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাই আমার লোকজন সেখানে খাস কালেকশন আদায় করছে। পরবর্তিতে সেই টাকা গুলো জেলা পরিষদকে জমা দেওয়া হয়। এখানে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোন সুযোগ নেই।’      


তবে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘শাহপরী জেটি ঘাট ইজারা না হওয়ায় খাস কালেকশন আদায় চলছে। আমাদের অফিসের মোহাম্মদ শাহ আলম খাস কালেকশনের দায়িত্বে আছেন। তাই কোনভাবে কেউ ইজারা দেওয়া সুযোগ নেই। যদি এ ধরনের কোন বিষয় থাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


শাহপরীর দ্বীপে মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শফিক বলেন, ‘ইজারাদার দাবি করে স্থানীয় মো. ইউনুচ বাইলা এবং জিয়াবুল আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে। টাকা না দিয়ে আমাদের চাপ সৃষ্টি করে। এতো দিন ইজারাদার দাবি করে টাকা আদায় করে আসছিল। কিন্তু এখন জেনেছি জেলা পরিষদ থেকে জেটি ঘাট কোন ইজারা দেয়নি। এরপরও ঘাটে টাকা আদায় করছে।’এদিকে শাহপরী দ্বীপ জেটি ঘাটে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে খাস কালেকশন নামে ৪-৫ জন মিলে টাকা আদায় করেন। এসময় তারা জেলা পরিষদের নামে একটি টোল আদায়ের রশিদও দিচ্ছেন। যেখানে ইজারাদার হিসেবে জেলা পরিষদের অফিস পিয়ন মোহাম্মদ শাহ আলম এর নাম রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে কিভাবে পিয়ন ইজারাদার হয়?

স্থানীয়রা বলছে, একটি অসাধু চক্র মূলত ইজারার নাম ভাঙিয়ে লোকজনকে ইজারা দিয়ে লাখ লাখ টাকা লোটপাট করেছে। এতে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তবে একাধিকবার কল করেও ইজারাদার মোহাম্মদ শাহ আলমকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, ‘জামায়াত নেতা আনোয়ার জেলা পরিষদের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া কথা বলে স্থানীয় কয়েকজন কিছু ব্যাক্তিকে আলাদা ভাবে ঘাটগুলো বিক্রি করে দেয়। এসব ঘাট থেকে এই পর্যন্ত ২৪ লাখ টাকা আদায় করেন। তিন মাসের মাথায় এসে জানতে পারি শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট কোন ইজারা দেয়নি জেলা পরিষদ। এখন প্রশ্ন হলো কার প্রশয়ে তারা এই অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। এমনকি জেটি ঘাটে অসহায় জেলে বড়শি নিয়ে মাছ শিকারীদের কাছ থেকেও ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এক বছরের জন্য ইজারা দেয় মো. ইউনুছ ওরফে বাইলা।’  

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মো: ইউনুচ বাইলা বলেন, ‘আমি কোন ইজারাদার নই। ফলে আমি কাউকে ইজারা দেওয়ার প্রশ্নও আসে না। মূলত আমি এক নেতার অধীনে টোল আদায় করছি। এর বাইরে আমি কোন কিছুতে জড়িত নই।’

নাম না বলার শর্তে শাহপরীর দ্বীপের এক টোল আদায়কারী বলেন, শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট ইজারা না হওয়ায় জেলা পরিষদ খাস কালেকশন আদায় করছেন বলে শুনেছি। তবে কিছু প্রভাবশালী ইজারাদার দাবি করে ঘাট আলাদাভাবে বিক্রি করেছে। কিন্তু এখন এসে তারা খাস কালেকশন আদায় করছে বলে প্রচার করছে। যদিও সরকারী খাস কালেকশন আদায়ের কিছু নিয়ম রয়েছে। একজন সরকারী কর্মকর্তার অধীনের প্রতিদিন যে টাকা আদায় হবে, সে টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হবে। কিন্তু শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের চিত্র ভিন্ন। এখানে এলাকা এলাকা ভাগ করে বছরের টাকা একত্রে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছেন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বর্হিভ’ত।’

শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ‘সম্প্রতি টোল আদায় নিয়ে তৈরী হওয়া দ্ব›দ্ব সমাধানে নিজেকে ইজারা দাবিদার মোহাম্মদ আনোয়ারসহ আমরা একটি বৈঠকে বসেছিলাম। কিন্তু সেখানে কোন সমাধান হয়নি। ফলে বিষয়টি এখন ইউএনও স্যার দেখছেন।’

জেলা জামায়াতের আমীর নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমি বিষয়টি জেনেছি। ইজারার বিষয়টি খতিয়ে দেখে সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী র্কমকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘কতিপয় কিছু ব্যক্তি বেআইনিভাবে শাহপরীর দ্বীপের ঘাট ইজারা দিয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া অবৈধ নিয়োগকারী কেউ যদি চাঁদা এবং খাস কালেকশন আদায় করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’    

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন বলেন, ‘শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে। সেটি সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখে জানাতে বলা হয়েছে। এ ধরনের অনিয়মে সতত্য পাওয়া গেলে অ্যাকশন নেওয়া হবে।