ঢাকা ০৭ মে, ২০২৫
শিরোনামঃ
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে ইসলামাবাদের পদক্ষেপ সম্পর্কে তৌহিদকে অবহিত করেছেন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে আগের ৯টি ধারা বাতিল, মামলাও বাতিল হবে: আসিফ নজরুল ঈদের ছুটি শুরু ৫ জুন, অফিস খোলা থাকবে আগের দুই শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিএনপি’র চেয়ারপার্সন : ডা. জাহিদ ফ্যাসিবাদী প্রবণতার বিষয়গুলো চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে : সারজিস চীনের সঙ্গে চুক্তি, মোংলা বন্দর পরিণত হবে আধুনিক বাণিজ্যিক কেন্দ্রে ঢাবির কলা ভবন সংলগ্ন রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে বৃহস্পতিবার লাওস সীমান্তে সংঘর্ষ, থাইল্যান্ডে পর্যটন স্পট বন্ধ ‘দ্য হিন্দু’র সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবেদন ভিত্তিহীন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-১৫ দলে ডাক পেলেন রোনাল্ডোর বড় ছেলে

পঞ্চগড়ে আরেফিন হত্যায় সাবেক এমপি মন্ত্রী ডিসি ও পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

#
news image

পঞ্চগড়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র কর্মসূচীতে হামলার ঘটনায় বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরেফিন হত্যার দুই বছর পরে সাবেক রেলমন্ত্রী, পঞ্চগড় এক আসনের সাবেক দুই সাংসদ, সাবেক ডিসি, সাবেক চার পুলিশ কর্মকর্তা সহ ১৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা ৭০০ থেকে ৮০০ আসামী করে পঞ্চগড় আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরেফিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার বাদী হয়ে আদালতে মামলার আবেদন করেন। পরে বিচারক এসএম শফিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে এজহারভূক্ত করতে সদর থানা পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন। মামলাটি সোমবার দুপুরে আদেশ হলেও অজ্ঞাত কারণে মঙ্গলবার বিকেলে গণমাধ্যেমকর্মীদের এ তথ্য সরবরাহ করা হয়। এদিকে মামলার বাদী আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
নিহত আরেফিনের বাড়ি বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের চন্দনপাড়া এলাকায়। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের দ্বায়িত্বে ছিলেন।

মামলার উল্লেখ্য যোগ্য আসামীরা হলেন- সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সাংসদ নুরুল ইসলাম সুজন, পঞ্চগড় এক আসনের সাবেক সাংসদ নাইমুজ্জামান ভূইঁয়া, মজাহারুল হক প্রধান, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখ, সাবেক জেলা প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত স¤্রাট, সাবেক জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এস.এস সিরাজুল হুদা, অতিরক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) এসএম শফিকুল ইসলাম, ক্রাইম এন্ড অপস কনক কুমার দাস, সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা, সদর উপজেলার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আল তারেক, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহসভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকিয়া খাতুন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিকেল তিনটায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পঞ্চগড় দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচী, গণ মিছিল ও সমাবেশ পালন করছিল। সমাবেশে জেলা-উপজেলা, পৌরসভার নেতাকর্মী সহ জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। এসময় সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত স¤্রাটের নির্দেশে এবং সাবেক সাংসদ মজাহারুল হক প্রধান, সাবেক ডিসি ও চার পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা ও ইন্ধনে মামলার আসামীরা ধারালো ছড়া, বল্লম, পেট্রোলের জারকিন, চাইনিজ কুড়াল, হকিস্টিক, রাবার বুলেট, রাইফেল, দেশীয় পিস্তল ও বিস্ফোরক দব্য নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা দিকবেদিক ছোটাছুঁটি করতে থাকে। পরে আসামীরা বিএনপি নেতা আরেফিনকে এলোপাথারী মারপিট ও ধারালো ছোড়া দ্বারা শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। একপর্যায়ে মাটিতে পড়ে যান আরেফিন। পরে তাকে উদ্ধার করতে নুরুজ্জামান বাবু গেলে তাকেও মারপিট করে রক্তাক্ত করা হয়। পরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চলে গেলে আব্দুর রশিদ আরেফিন ও নুুরুজ্জামান বাবুকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রশিদ আরেফিনকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে নুরুজ্জামান বাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে হস্তান্তর করেন। এছাড়া আসামীরা দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এতে ৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল ওহাব আনসারী বলেন, তৎকালীন পতিত স্বৈরাচারী সরকারের ভয়-ভীতি ও প্রাণনাশের আশঙ্কায় এতদিন মামলা করতে পারেননি বাদী। তবে বর্তমানে নিরপেক্ষ অবস্থান থাকায় মামলা দায়ের হয়েছে। আমরা আশা করি, দ্রুত আসামীরা গ্রেফতার হবেন এবং আমরা বিচারের মাধ্যেমে ন্যায় বিচার পাবো।
পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারী কৌঁসুলী আদম সূফী বলেন, বিএনপি দলীয় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে নেতাকর্মীদের বাধাঁ প্রদান করে। অরেফিনের উপর তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ও তাদের পেটুয়া বাহিনী বেধরক মারধর করে। এতে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে। দীর্ঘদিনের পরে মামলাটি দায়ের হয়েছে। আদালত মামলাটি এজহারভূক্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ

০৭ মে, ২০২৫,  2:46 AM

news image

পঞ্চগড়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র কর্মসূচীতে হামলার ঘটনায় বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরেফিন হত্যার দুই বছর পরে সাবেক রেলমন্ত্রী, পঞ্চগড় এক আসনের সাবেক দুই সাংসদ, সাবেক ডিসি, সাবেক চার পুলিশ কর্মকর্তা সহ ১৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা ৭০০ থেকে ৮০০ আসামী করে পঞ্চগড় আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরেফিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার বাদী হয়ে আদালতে মামলার আবেদন করেন। পরে বিচারক এসএম শফিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে এজহারভূক্ত করতে সদর থানা পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন। মামলাটি সোমবার দুপুরে আদেশ হলেও অজ্ঞাত কারণে মঙ্গলবার বিকেলে গণমাধ্যেমকর্মীদের এ তথ্য সরবরাহ করা হয়। এদিকে মামলার বাদী আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
নিহত আরেফিনের বাড়ি বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের চন্দনপাড়া এলাকায়। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের দ্বায়িত্বে ছিলেন।

মামলার উল্লেখ্য যোগ্য আসামীরা হলেন- সাবেক রেলপথ মন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সাংসদ নুরুল ইসলাম সুজন, পঞ্চগড় এক আসনের সাবেক সাংসদ নাইমুজ্জামান ভূইঁয়া, মজাহারুল হক প্রধান, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখ, সাবেক জেলা প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত স¤্রাট, সাবেক জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এস.এস সিরাজুল হুদা, অতিরক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) এসএম শফিকুল ইসলাম, ক্রাইম এন্ড অপস কনক কুমার দাস, সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা, সদর উপজেলার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান কাজী আল তারেক, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহসভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকিয়া খাতুন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিকেল তিনটায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পঞ্চগড় দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচী, গণ মিছিল ও সমাবেশ পালন করছিল। সমাবেশে জেলা-উপজেলা, পৌরসভার নেতাকর্মী সহ জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। এসময় সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত স¤্রাটের নির্দেশে এবং সাবেক সাংসদ মজাহারুল হক প্রধান, সাবেক ডিসি ও চার পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা ও ইন্ধনে মামলার আসামীরা ধারালো ছড়া, বল্লম, পেট্রোলের জারকিন, চাইনিজ কুড়াল, হকিস্টিক, রাবার বুলেট, রাইফেল, দেশীয় পিস্তল ও বিস্ফোরক দব্য নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা দিকবেদিক ছোটাছুঁটি করতে থাকে। পরে আসামীরা বিএনপি নেতা আরেফিনকে এলোপাথারী মারপিট ও ধারালো ছোড়া দ্বারা শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। একপর্যায়ে মাটিতে পড়ে যান আরেফিন। পরে তাকে উদ্ধার করতে নুরুজ্জামান বাবু গেলে তাকেও মারপিট করে রক্তাক্ত করা হয়। পরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চলে গেলে আব্দুর রশিদ আরেফিন ও নুুরুজ্জামান বাবুকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রশিদ আরেফিনকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে নুরুজ্জামান বাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে হস্তান্তর করেন। এছাড়া আসামীরা দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এতে ৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল ওহাব আনসারী বলেন, তৎকালীন পতিত স্বৈরাচারী সরকারের ভয়-ভীতি ও প্রাণনাশের আশঙ্কায় এতদিন মামলা করতে পারেননি বাদী। তবে বর্তমানে নিরপেক্ষ অবস্থান থাকায় মামলা দায়ের হয়েছে। আমরা আশা করি, দ্রুত আসামীরা গ্রেফতার হবেন এবং আমরা বিচারের মাধ্যেমে ন্যায় বিচার পাবো।
পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারী কৌঁসুলী আদম সূফী বলেন, বিএনপি দলীয় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে নেতাকর্মীদের বাধাঁ প্রদান করে। অরেফিনের উপর তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ও তাদের পেটুয়া বাহিনী বেধরক মারধর করে। এতে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে। দীর্ঘদিনের পরে মামলাটি দায়ের হয়েছে। আদালত মামলাটি এজহারভূক্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।