শেষ মূহুর্তের গোলে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক বারহাট্টার ছেলে পাপন
অনলাইন ডেস্ক
১৮ নভেম্বর, ২০২৪, 12:02 AM
শেষ মূহুর্তের গোলে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক বারহাট্টার ছেলে পাপন
শেষ মূহুর্তের গোলে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক বারহাট্টার ছেলে পাপন
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি;
নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা বাংলাদেশ ফুটবল দলের জয়ের নায়ক পাপন সিংহ। (১-১) গোলের সমতা থেকে জয়। তার এই সাফল্যে আনন্দে ভাসছে বন্ধু মহলসহ বারহাট্টাবাসী।
পাপন সিংহ ২০২২ সালের ১ জুন জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে ৩টি ম্যাচে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছিল তার। জাতীয় দলে ডাক পেয়ে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে তিনি কথা দিয়েছিলেন- 'যদি আরও ম্যাচ খেলার সুযোগ পান, যে করেই হোক দলকে জয় এনে দিতে চান।' দুই বছরের বেশি সময় পর প্রতিশ্রুতিটা পূরণ করেছেন পাপন সিংহ। ২৩ বছরে পা রাখা এই মিডফিল্ডার গতকাল শনিবার মালদ্বীপের বিপক্ষে বদলি খেলোয়াড় হিসাবে নেমে, অতিরিক্ত সময়ে গোল করে চমক দেখিয়ে দলকে জিতিয়েছেন। তার করা গোলে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তাই আনন্দে ভাসছে তার নিজ উপজেলা বারহাট্টার আপামর জনগণ। গত রাত থেকে নিজেদের ফেইসবুকে পাপন সিংহ'র গোল করার ভিডিও টি আপলোড করে আনন্দ-উল্লাসে মেতেছে বন্ধু মহল।
হাভিয়ের কাবরেরাই পাপনকে প্রথম জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডেকেছিলেন। তবে, পাপন নিয়মিত তার জায়গা ধরে রাখতে পারেননি। সেরা একাদশেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। শনিবারও কোচ তার জন্য বরাদ্দ রেখেছিলেন অল্প সময়। তবে এইটুকু সময়েই ফুটবল ক্যারিয়ারে সেরা কীর্তিটা গড়ে ফেললেন পাপন।
ফুটবলার পাপন সিংহ গতকাল শনিবার মাঠে নেমেছিলেন নিজের তৃতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে। খুব বেশি সময় অবশ্য পাননি। এই ম্যাচের অধিনায়ক সোহেল রানার বদলি খেলোয়াড় হিসাবে '৮৯' মিনিটে মাঠে নেমেছিলেন আবাহনীর এই মিডফিল্ডার। কছু সময় পর শেষ হয়ে যায় নির্ধারিত '৯০' মিনিট। তখনো ম্যাচ (১-১) গোলে সমতা। জিততে না পারলে ফিফা প্রীতি সিরিজটা হারতে হবে।
র্থ অফিশিয়াল যখন নিয়নবাতি জ্বালিয়ে জানালেন, অতিরিক্ত সাত মিনিট মিলবে ঘরের মাঠে সিরিজ হারের লজ্জা এড়ানোর। তখনই পাপন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, 'যে করেই হোক জিততে হবে আমাদের। মালদ্বীপের কাছে হার আমাদের কাম্য কোন ভাবেই নয়। প্রথম ম্যাচটা হেরে গিয়েছিলাম। এই ম্যাচে দলকে জেতাতে জান বাজি রাখতে রাজি। সৃষ্টিকর্তা আমাকে সেই সুযোগটা দিয়েছেন। দলকে জেতাতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।'
পাপনের সতীর্থ ও ছেলেবেলা থেকে একসাথে বেড়ে ওঠা তারেকের সাথে কথা বললে সে জানায়, পাপন'দা আমার থেকে কিছুদিনের বড় কিন্তু আমরা একসাথেই খেলাধুলা করেছি। আজ পাপন'দা বাংলাদেশের জয়ের নায়ক কথাটা ভাবতেই আনন্দে মনটা ভরে যায়।সে আরও বলে, বারহাট্টার সেই ছোট্ট মাঠ থেকে পাপন'দা আজ জাতীয় দলের হয়ে বাংলাদেশ দলের জয়ের নায়ক।তার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
বাংলাদেশ দলের জয়ের নায়ক পাপন সিংহ বাবা-মার একমাত্র সন্তান। ছেলেবেলা থেকে মাটির ঘরে বেড়ে ওঠা। পাপনের ফুটবল প্রীতি ২০০৯ সালে। 'বঙ্গবন্ধু প্রাইমারি স্কুল গোল্ডকাপ' দিয়ে ফুটবলে পথচলা শুরু। এরপর পাওনিয়ার লিগে 'মিরপুর সিটি ক্লাবের' হয়ে খেলেছেন। সেখানে নিজের স্কিল দেখিয়ে ডাক পান ঢাকা মোহামেডান ‘বি’ দলে। সেখান থেকে 'উত্তর বারিধারার' মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগে পদার্পণ। এই ক্লাবে চার মৌসুম কাটানোর পর দু'বছর ধরে তার ঠিকানা- 'ঢাকা আবাহনী'। দু'বছর আগে জাতীয় দলে ডাক পাওয়ায় তার মা ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। নিজেই বলেছিলেন মা ফুটবল খেলা না বুঝলেও জাতীয় দলে ছেলের সুযোগ পাওয়াটা যে অনেক বড় ব্যাপার সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। সেই মায়ের মুখের হাসিটা আজ আরও চওড়া হলো পাপনের জয়সূচক গোলে। এটি ছিল বাংলাদেশ দলের এই বছরের শেষ ম্যাচ। সবার চাওয়াটাই পূরণ করলেন পাপন। এবার তার আগামীর পথে এগিয়ে যাওয়ার পালা।
অনলাইন ডেস্ক
১৮ নভেম্বর, ২০২৪, 12:02 AM
শেষ মূহুর্তের গোলে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক বারহাট্টার ছেলে পাপন
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি;
নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা বাংলাদেশ ফুটবল দলের জয়ের নায়ক পাপন সিংহ। (১-১) গোলের সমতা থেকে জয়। তার এই সাফল্যে আনন্দে ভাসছে বন্ধু মহলসহ বারহাট্টাবাসী।
পাপন সিংহ ২০২২ সালের ১ জুন জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে ৩টি ম্যাচে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছিল তার। জাতীয় দলে ডাক পেয়ে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে তিনি কথা দিয়েছিলেন- 'যদি আরও ম্যাচ খেলার সুযোগ পান, যে করেই হোক দলকে জয় এনে দিতে চান।' দুই বছরের বেশি সময় পর প্রতিশ্রুতিটা পূরণ করেছেন পাপন সিংহ। ২৩ বছরে পা রাখা এই মিডফিল্ডার গতকাল শনিবার মালদ্বীপের বিপক্ষে বদলি খেলোয়াড় হিসাবে নেমে, অতিরিক্ত সময়ে গোল করে চমক দেখিয়ে দলকে জিতিয়েছেন। তার করা গোলে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তাই আনন্দে ভাসছে তার নিজ উপজেলা বারহাট্টার আপামর জনগণ। গত রাত থেকে নিজেদের ফেইসবুকে পাপন সিংহ'র গোল করার ভিডিও টি আপলোড করে আনন্দ-উল্লাসে মেতেছে বন্ধু মহল।
হাভিয়ের কাবরেরাই পাপনকে প্রথম জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডেকেছিলেন। তবে, পাপন নিয়মিত তার জায়গা ধরে রাখতে পারেননি। সেরা একাদশেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। শনিবারও কোচ তার জন্য বরাদ্দ রেখেছিলেন অল্প সময়। তবে এইটুকু সময়েই ফুটবল ক্যারিয়ারে সেরা কীর্তিটা গড়ে ফেললেন পাপন।
ফুটবলার পাপন সিংহ গতকাল শনিবার মাঠে নেমেছিলেন নিজের তৃতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে। খুব বেশি সময় অবশ্য পাননি। এই ম্যাচের অধিনায়ক সোহেল রানার বদলি খেলোয়াড় হিসাবে '৮৯' মিনিটে মাঠে নেমেছিলেন আবাহনীর এই মিডফিল্ডার। কছু সময় পর শেষ হয়ে যায় নির্ধারিত '৯০' মিনিট। তখনো ম্যাচ (১-১) গোলে সমতা। জিততে না পারলে ফিফা প্রীতি সিরিজটা হারতে হবে।
র্থ অফিশিয়াল যখন নিয়নবাতি জ্বালিয়ে জানালেন, অতিরিক্ত সাত মিনিট মিলবে ঘরের মাঠে সিরিজ হারের লজ্জা এড়ানোর। তখনই পাপন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, 'যে করেই হোক জিততে হবে আমাদের। মালদ্বীপের কাছে হার আমাদের কাম্য কোন ভাবেই নয়। প্রথম ম্যাচটা হেরে গিয়েছিলাম। এই ম্যাচে দলকে জেতাতে জান বাজি রাখতে রাজি। সৃষ্টিকর্তা আমাকে সেই সুযোগটা দিয়েছেন। দলকে জেতাতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।'
পাপনের সতীর্থ ও ছেলেবেলা থেকে একসাথে বেড়ে ওঠা তারেকের সাথে কথা বললে সে জানায়, পাপন'দা আমার থেকে কিছুদিনের বড় কিন্তু আমরা একসাথেই খেলাধুলা করেছি। আজ পাপন'দা বাংলাদেশের জয়ের নায়ক কথাটা ভাবতেই আনন্দে মনটা ভরে যায়।সে আরও বলে, বারহাট্টার সেই ছোট্ট মাঠ থেকে পাপন'দা আজ জাতীয় দলের হয়ে বাংলাদেশ দলের জয়ের নায়ক।তার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
বাংলাদেশ দলের জয়ের নায়ক পাপন সিংহ বাবা-মার একমাত্র সন্তান। ছেলেবেলা থেকে মাটির ঘরে বেড়ে ওঠা। পাপনের ফুটবল প্রীতি ২০০৯ সালে। 'বঙ্গবন্ধু প্রাইমারি স্কুল গোল্ডকাপ' দিয়ে ফুটবলে পথচলা শুরু। এরপর পাওনিয়ার লিগে 'মিরপুর সিটি ক্লাবের' হয়ে খেলেছেন। সেখানে নিজের স্কিল দেখিয়ে ডাক পান ঢাকা মোহামেডান ‘বি’ দলে। সেখান থেকে 'উত্তর বারিধারার' মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগে পদার্পণ। এই ক্লাবে চার মৌসুম কাটানোর পর দু'বছর ধরে তার ঠিকানা- 'ঢাকা আবাহনী'। দু'বছর আগে জাতীয় দলে ডাক পাওয়ায় তার মা ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। নিজেই বলেছিলেন মা ফুটবল খেলা না বুঝলেও জাতীয় দলে ছেলের সুযোগ পাওয়াটা যে অনেক বড় ব্যাপার সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। সেই মায়ের মুখের হাসিটা আজ আরও চওড়া হলো পাপনের জয়সূচক গোলে। এটি ছিল বাংলাদেশ দলের এই বছরের শেষ ম্যাচ। সবার চাওয়াটাই পূরণ করলেন পাপন। এবার তার আগামীর পথে এগিয়ে যাওয়ার পালা।