ঢাকা ০৪ জুন, ২০২৫
শিরোনামঃ
কেরানীগঞ্জে বাকি ১১.৪০ একর জমি বুঝে পেল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপকূলীয় অঞ্চলে বাড়ছে নারী শিক্ষা নাইজেরিয়ায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে বিএনপির আইনজীবীদের নিয়ে ভূয়া ফটোকার্ড সনাক্ত করেছে বাংলাফ্যাক্ট ভুটানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে অভিষেকের অপেক্ষায় হামজা মানুষের কল্যাণে গবেষণার প্রকাশনায় আরো গুরুত্ব দিতে হবে : বিএমইউ উপাচার্য পটুয়াখালীতে এক মাসে ৭০ মোবাইল উদ্ধার করল পুলিশের সাইবার সেল আদালতের রায় অমান্য  করে গাজীপুরে জমি দখলের অভিযোগ নোয়াখালীতে চাঁদাবাজি অভিযোগে যুবদল নেতাকে বহিষ্কার   বসুরহাট বাজারে  মেডিসিন মার্কেট এন্ড হ্যাভেন ট্রাভেলস উদ্বোধন

চট্টগ্রামে আট মাসে পাঁচ খুন, একই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ

#
news image

চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটে চলছে। বিগত আট মাসে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ সকল ঘটনা পর্যালোচনা করে একই গ্যাং জড়িত বলে অভিযোগ করছে।

গত ছয় মাস আগে চট্টগ্রামের চান্দগাওঁ থানা এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মী তাহসিনকে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রধারী একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনার ঠিক দুই মাস আগে একই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাসহ আরো দুজনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এসব খুনে জড়িত ও সন্দেহভাজন কয়েকজন ধরা পড়লেও পরে জামিনে বেরিয়ে আসেন। জামিনে বেরোনো ও পলাতক এসব সন্ত্রাসীরা সম্প্রতি নগরীর বাকলিয়াতে প্রাইভেট কার ধাওয়া করে গুলি করে দুজনকে হত্যা করে।

অনুসন্ধান ও পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাত মাসের ব্যবধানে পৃথক তিন কিলিং মিশনে পাঁচ খুনের ঘটনার সব কটিতেই চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও তাঁর সহযোগীরা জড়িত। এর মধ্যে সব কটি খুনের এজাহারনামীয় আসামি ছোট সাজ্জাদ। বাকি আসামিদের সকলে সাজ্জাদ গ্যাংয়ের সহযোগী সদস্য।

২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক মোহাম্মদ আনিস ও মাসুদ (৩০) নামের এক যুবলীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় বায়েজিদ ও হাটহাজারী থানায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা করা হয়। দুই মামলায় ছোট সাজ্জাদ, হাসান, আরমান বাচ্চু ওরফে ডাবল হাজি, শাহজাহান ও জাহাঙ্গীরের নাম উল্লেখ করে আরো ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। একই বছরের ২১ অক্টোবর চান্দগাঁওতে ছাত্রলীগ কর্মী আফতাব উদ্দিন তাহসান নিহতের ঘটনায় আসামি করা হয় ছোট সাজ্জাদ, হাসান, মোহাম্মদ, খোরশেদ ও হেলালকে।

সর্বশেষ গত ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে বাকলিয়ায় একসেস রোডে প্রাইভেট কার ধাওয়া দিয়ে গুলি করে আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও বখতেয়ার হোসেন মানিক নামের দুই যুবককে হত্যার ঘটনায় সাজ্জাদসহ তাঁর গ্যাংয়ের সাত সদস্যের নামে এবং অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। এ সকল মামলায় তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে দুই খুনের ঘটনায় চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেফতার ছিল না। গত ১৫ মার্চ ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ গ্রেফতার হলে পরে তাঁকে পৃথক দুটি হত্যা মামলায় আটক দেখানো হয়। চান্দগাঁও থানায় তাহসিন হত্যা মামলায় ঐ বছরই গ্রেফতার হয়েছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সহযোগী হেলাল। তদন্তে নাম উঠে আসায় গ্রেফতার করা হয় ইলিয়াছ হোসেন অপু ও এমরান নামের আরো দুজনকে। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি একটি চাঁদাবাজির মামলায় ছোট সাজ্জাদের ঘনিষ্ঠ তিন সহযোগী বোরহান, মোবারক হোসেন ইমন ও বেলালকে গ্রেফতার করে বায়েজিদ থানা-পুলিশ। এই তিনজনের মধ্যে বোরহানকে পরে চান্দগাঁও থানায় তাহসিন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, তাহসিন হত্যা মামলায় গ্রেফতার থাকা চার আসামির সবাই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জামিনে বের হন তাঁরা। জামিনে বেরিয়ে এসব আসামিদের কেউ কেউ সংঘবদ্ধ হয়ে ২৯ মার্চ বাকলিয়ায় নতুন করে আরো একটি চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনে জড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগের হত্যা মামলায় পলাতক আসামিরাও বাকলিয়ার কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। চান্দগাঁও থানার তাহসিন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. আবদুল কুদ্দুস জানান, পূর্বে এই হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ও তদন্তে পাওয়া সন্দেহজনক আসামি হিসেবে অনেকেই গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাঁরা পরবর্তীতে জামিনে বেরিয়েছে কি না সেটা আমি বলতে পারব না। বায়েজিদ থানার ওসি আরিফুর রহমান জানান, চাঁদার দাবিতে একটি গার্মেন্টসের ঝুটের মালামাল আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার মামলায় বোরহান, ইমন ও বেলালকে গ্রেফতার করি। তাদেরকে চাঁদাবাজির মামলায় আদালতে চালান করা হয়। পরে তাঁরা কীভাবে জামিনে বেরিয়ে এসেছে সেটা আমারও প্রশ্ন। নগর পুলিশের দক্ষিণ জোনের উপকমিশনার (ডিসি) আলমগীর হোসেন জানান, জামিনের বিষয়টি পুলিশ দেখে না। এখানে পুলিশের হাত নেই। মহামান্য আদালত আসামিদের জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন।

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :

০৪ মে, ২০২৫,  7:33 PM

news image

চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটে চলছে। বিগত আট মাসে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ সকল ঘটনা পর্যালোচনা করে একই গ্যাং জড়িত বলে অভিযোগ করছে।

গত ছয় মাস আগে চট্টগ্রামের চান্দগাওঁ থানা এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মী তাহসিনকে দিনদুপুরে গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রধারী একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনার ঠিক দুই মাস আগে একই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাসহ আরো দুজনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এসব খুনে জড়িত ও সন্দেহভাজন কয়েকজন ধরা পড়লেও পরে জামিনে বেরিয়ে আসেন। জামিনে বেরোনো ও পলাতক এসব সন্ত্রাসীরা সম্প্রতি নগরীর বাকলিয়াতে প্রাইভেট কার ধাওয়া করে গুলি করে দুজনকে হত্যা করে।

অনুসন্ধান ও পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাত মাসের ব্যবধানে পৃথক তিন কিলিং মিশনে পাঁচ খুনের ঘটনার সব কটিতেই চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও তাঁর সহযোগীরা জড়িত। এর মধ্যে সব কটি খুনের এজাহারনামীয় আসামি ছোট সাজ্জাদ। বাকি আসামিদের সকলে সাজ্জাদ গ্যাংয়ের সহযোগী সদস্য।

২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক মোহাম্মদ আনিস ও মাসুদ (৩০) নামের এক যুবলীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় বায়েজিদ ও হাটহাজারী থানায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা করা হয়। দুই মামলায় ছোট সাজ্জাদ, হাসান, আরমান বাচ্চু ওরফে ডাবল হাজি, শাহজাহান ও জাহাঙ্গীরের নাম উল্লেখ করে আরো ৩-৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। একই বছরের ২১ অক্টোবর চান্দগাঁওতে ছাত্রলীগ কর্মী আফতাব উদ্দিন তাহসান নিহতের ঘটনায় আসামি করা হয় ছোট সাজ্জাদ, হাসান, মোহাম্মদ, খোরশেদ ও হেলালকে।

সর্বশেষ গত ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে বাকলিয়ায় একসেস রোডে প্রাইভেট কার ধাওয়া দিয়ে গুলি করে আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও বখতেয়ার হোসেন মানিক নামের দুই যুবককে হত্যার ঘটনায় সাজ্জাদসহ তাঁর গ্যাংয়ের সাত সদস্যের নামে এবং অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। এ সকল মামলায় তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে দুই খুনের ঘটনায় চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেফতার ছিল না। গত ১৫ মার্চ ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ গ্রেফতার হলে পরে তাঁকে পৃথক দুটি হত্যা মামলায় আটক দেখানো হয়। চান্দগাঁও থানায় তাহসিন হত্যা মামলায় ঐ বছরই গ্রেফতার হয়েছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সহযোগী হেলাল। তদন্তে নাম উঠে আসায় গ্রেফতার করা হয় ইলিয়াছ হোসেন অপু ও এমরান নামের আরো দুজনকে। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি একটি চাঁদাবাজির মামলায় ছোট সাজ্জাদের ঘনিষ্ঠ তিন সহযোগী বোরহান, মোবারক হোসেন ইমন ও বেলালকে গ্রেফতার করে বায়েজিদ থানা-পুলিশ। এই তিনজনের মধ্যে বোরহানকে পরে চান্দগাঁও থানায় তাহসিন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, তাহসিন হত্যা মামলায় গ্রেফতার থাকা চার আসামির সবাই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জামিনে বের হন তাঁরা। জামিনে বেরিয়ে এসব আসামিদের কেউ কেউ সংঘবদ্ধ হয়ে ২৯ মার্চ বাকলিয়ায় নতুন করে আরো একটি চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনে জড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগের হত্যা মামলায় পলাতক আসামিরাও বাকলিয়ার কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। চান্দগাঁও থানার তাহসিন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. আবদুল কুদ্দুস জানান, পূর্বে এই হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ও তদন্তে পাওয়া সন্দেহজনক আসামি হিসেবে অনেকেই গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাঁরা পরবর্তীতে জামিনে বেরিয়েছে কি না সেটা আমি বলতে পারব না। বায়েজিদ থানার ওসি আরিফুর রহমান জানান, চাঁদার দাবিতে একটি গার্মেন্টসের ঝুটের মালামাল আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার মামলায় বোরহান, ইমন ও বেলালকে গ্রেফতার করি। তাদেরকে চাঁদাবাজির মামলায় আদালতে চালান করা হয়। পরে তাঁরা কীভাবে জামিনে বেরিয়ে এসেছে সেটা আমারও প্রশ্ন। নগর পুলিশের দক্ষিণ জোনের উপকমিশনার (ডিসি) আলমগীর হোসেন জানান, জামিনের বিষয়টি পুলিশ দেখে না। এখানে পুলিশের হাত নেই। মহামান্য আদালত আসামিদের জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন।