ঢাকা ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
শিরোনামঃ
৩১ দফা বাস্তবায়নে নওগাঁয় রাতভর বিএনপির লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি কোম্পানীগঞ্জে এনটিআরসিএ কর্তৃক সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিটিএ'র সংবর্ধনা  উত্তর ফটিকছড়ি উপজেলায় অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন বাগেরহাটে এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও  মানববন্ধন মাধবপুরে খাস জমি থেকে ড্রেজার মেশিন দ্বারা  মাঠি উত্তোলন, প্রশাসন নিরব বাগেরহাটে মহিদুল নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যাঃ আটক ২  বেলকুচিতে ৪৮টি গরুসহ খামার পেলেন আত্মসমর্পন করা ৬৭ চরমপন্থী শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী টঙ্গী কলেজে লিফলেট বিতরণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাধা বাগেরহাটের পচা দিঘী থেকে মৃতদেহ উদ্ধার

পেটের ক্ষুধায় কচ্ছপ খেতে বাধ্য হচ্ছেন গাজার মুসলিমরা

#
news image

অবরুদ্ধ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় খাবারের ভয়াবহ সংকটে পড়ে কিছু মুসলিম পরিবার এখন প্রোটিনের বিরল উৎস হিসেবে সামুদ্রিক কচ্ছপের মাংস খেতে বাধ্য হচ্ছেন।

ফিলিস্তিনের খান ইউনিস থেকে এএফপি জানায়, কচ্ছপের খোলস ছাড়ানোর পর মাংস টুকরো টুকরো করে কেটে পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো ও মসলা মিশিয়ে রান্না করে খাচ্ছেন তারা।

খান ইউনিস শহরের এক অস্থায়ী তাঁবুতে থাকা ৬১ বছর বয়সী মাজিদা কানান বললেন, ‘শিশুরা কচ্ছপ দেখে ভয় পায়। তখন আমরা বলি, এর স্বাদ গরুর মাংসের মতোই সুস্বাদু।’ তিনি কাঠের চুলায় রান্না হওয়া লালচে মাংসের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘তবু কেউ কেউ খেয়েছে, কেউ খেতে চায়নি।’

তবে এর বিকল্প কিছু না থাকায় ইতোমধ্যে তৃতীয়বারের মতো কচ্ছপ রান্না করলেন তিনি। ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া পরিবারটির এখন আর কোনো উপায় নেই।

গাজায় ১৮ মাসের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ এবং ২ মার্চ থেকে ইসরাইলের পূর্ণ অবরোধের মধ্যে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২৪ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য পরিস্থিতি চরম মানবিক সংকটে পৌঁছেছে।

ইসরাইল হামাসের বিরুদ্ধে ত্রাণ সহায়তা সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুললেও হামাস তা অস্বীকার করেছে।

বৃহস্পতিবার বিশ্বের ১২টি প্রধান ত্রাণ সংস্থার প্রধানরা সতর্ক করে বলেছেন, ‘গাজার প্রায় সব অঞ্চলেই দুর্ভিক্ষ এখন শুধু সম্ভাবনা নয়, বরং দ্রুত বাস্তব হয়ে উঠছে।’

মাজিদা কানান বলেন, ‘কোনো বন্দর খোলা নেই, বাজারেও কিছু নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি  ৮০ শেকেল (২২ ডলার) দিয়ে ছোট দুই
ব্যাগ সবজি কিনেছি, মাংস কেনার প্রশ্নই ওঠে না।’

যদিও সামুদ্রিক কচ্ছপ আন্তর্জাতিকভাবে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী হিসেবে সংরক্ষিত, তবু গাজার জেলেদের জালে ধরা পড়া কচ্ছপ এখন খাবারে রূপ নিচ্ছে।

তিনি জানান, কচ্ছপের মাংস ভিনেগার ও ময়দা মিশিয়ে ধুয়ে নেওয়া হয়, এরপর ধুয়ে পুরনো একটি লোহার পাতিলে সেদ্ধ করা হয় ।

‘ভাবতেও পারিনি কচ্ছপ খেতে হবে’

স্থানীয় জেলে আবদেল হালিম কানান বলেন, ‘আমরা কখনও ভাবিনি যে কচ্ছপ খেতে হবে। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর খাবারের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয়। তখন কচ্ছপের মাংস হয়ে ওঠে প্রোটিনের বিকল্প উৎস। এখন গাজায় মাংস, মুরগি বা সবজি—কিছুই নেই।’

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক কার্যালয় (ওসিএইচএ) জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইল আক্রমণের পর শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজা এখন সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটে রয়েছে।

এই যুদ্ধ দু’বার স্বল্প সময়ের জন্য থেমেছিল—একবার নভেম্বর ২০২৩-এর শেষ দিকে সাত দিনের জন্য এবং পরে ১৯ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত দুই মাসের জন্য।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক প্রধান হানান বালখি গত জুনে জানান, গাজায় কিছু মানুষ পশুর খাবার, ঘাস এমনকি মলমূত্রযুক্ত পানি খেয়েও বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে।

হামাস বৃহস্পতিবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে যে, গাজাবাসীদের প্রতি তারা ‘অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে’ ব্যবহার করছে—ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে।

জেলে কানান বলেন, ‘কচ্ছপগুলো হালাল উপায়ে জবাই করা হয়, ইসলামি রীতিতেই। দুর্ভিক্ষ না থাকলে আমরা ওগুলো খেতাম না। কিন্তু এখন আমাদের প্রোটিন ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে।’

আন্তর্জাতিক ডেক্স :

২০ এপ্রিল, ২০২৫,  3:13 AM

news image

অবরুদ্ধ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় খাবারের ভয়াবহ সংকটে পড়ে কিছু মুসলিম পরিবার এখন প্রোটিনের বিরল উৎস হিসেবে সামুদ্রিক কচ্ছপের মাংস খেতে বাধ্য হচ্ছেন।

ফিলিস্তিনের খান ইউনিস থেকে এএফপি জানায়, কচ্ছপের খোলস ছাড়ানোর পর মাংস টুকরো টুকরো করে কেটে পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো ও মসলা মিশিয়ে রান্না করে খাচ্ছেন তারা।

খান ইউনিস শহরের এক অস্থায়ী তাঁবুতে থাকা ৬১ বছর বয়সী মাজিদা কানান বললেন, ‘শিশুরা কচ্ছপ দেখে ভয় পায়। তখন আমরা বলি, এর স্বাদ গরুর মাংসের মতোই সুস্বাদু।’ তিনি কাঠের চুলায় রান্না হওয়া লালচে মাংসের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘তবু কেউ কেউ খেয়েছে, কেউ খেতে চায়নি।’

তবে এর বিকল্প কিছু না থাকায় ইতোমধ্যে তৃতীয়বারের মতো কচ্ছপ রান্না করলেন তিনি। ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া পরিবারটির এখন আর কোনো উপায় নেই।

গাজায় ১৮ মাসের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ এবং ২ মার্চ থেকে ইসরাইলের পূর্ণ অবরোধের মধ্যে জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২৪ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য পরিস্থিতি চরম মানবিক সংকটে পৌঁছেছে।

ইসরাইল হামাসের বিরুদ্ধে ত্রাণ সহায়তা সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুললেও হামাস তা অস্বীকার করেছে।

বৃহস্পতিবার বিশ্বের ১২টি প্রধান ত্রাণ সংস্থার প্রধানরা সতর্ক করে বলেছেন, ‘গাজার প্রায় সব অঞ্চলেই দুর্ভিক্ষ এখন শুধু সম্ভাবনা নয়, বরং দ্রুত বাস্তব হয়ে উঠছে।’

মাজিদা কানান বলেন, ‘কোনো বন্দর খোলা নেই, বাজারেও কিছু নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি  ৮০ শেকেল (২২ ডলার) দিয়ে ছোট দুই
ব্যাগ সবজি কিনেছি, মাংস কেনার প্রশ্নই ওঠে না।’

যদিও সামুদ্রিক কচ্ছপ আন্তর্জাতিকভাবে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী হিসেবে সংরক্ষিত, তবু গাজার জেলেদের জালে ধরা পড়া কচ্ছপ এখন খাবারে রূপ নিচ্ছে।

তিনি জানান, কচ্ছপের মাংস ভিনেগার ও ময়দা মিশিয়ে ধুয়ে নেওয়া হয়, এরপর ধুয়ে পুরনো একটি লোহার পাতিলে সেদ্ধ করা হয় ।

‘ভাবতেও পারিনি কচ্ছপ খেতে হবে’

স্থানীয় জেলে আবদেল হালিম কানান বলেন, ‘আমরা কখনও ভাবিনি যে কচ্ছপ খেতে হবে। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর খাবারের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয়। তখন কচ্ছপের মাংস হয়ে ওঠে প্রোটিনের বিকল্প উৎস। এখন গাজায় মাংস, মুরগি বা সবজি—কিছুই নেই।’

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক কার্যালয় (ওসিএইচএ) জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইল আক্রমণের পর শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজা এখন সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটে রয়েছে।

এই যুদ্ধ দু’বার স্বল্প সময়ের জন্য থেমেছিল—একবার নভেম্বর ২০২৩-এর শেষ দিকে সাত দিনের জন্য এবং পরে ১৯ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত দুই মাসের জন্য।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক প্রধান হানান বালখি গত জুনে জানান, গাজায় কিছু মানুষ পশুর খাবার, ঘাস এমনকি মলমূত্রযুক্ত পানি খেয়েও বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে।

হামাস বৃহস্পতিবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে যে, গাজাবাসীদের প্রতি তারা ‘অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে’ ব্যবহার করছে—ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে।

জেলে কানান বলেন, ‘কচ্ছপগুলো হালাল উপায়ে জবাই করা হয়, ইসলামি রীতিতেই। দুর্ভিক্ষ না থাকলে আমরা ওগুলো খেতাম না। কিন্তু এখন আমাদের প্রোটিন ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে।’