চট্টগ্রামের জব্বারের বলীখেলা ২৫ এপ্রিল

আবুল হাসেম, চট্টগ্রাম ঃ
১৭ এপ্রিল, ২০২৫, 7:35 PM

চট্টগ্রামের জব্বারের বলীখেলা ২৫ এপ্রিল
চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্যের অন্যতম স্বাক্ষী আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসর শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল চারটায় অনুষ্টিত হবে। ঐতিহাসিক লালদিঘীর ময়দানে প্রতি বছরের মতো এ বলী-খেলার আসর বসবে। এ উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও তিন দিন ব্যাপি বৈশাখী মেলা বসবে। আগামী ২৪, ২৫ ও ২৬ এপ্রিল বৈশাখী মেলা বসবে। ঐতিহ্যবাহী এ বলীখেলা এবং বৈশাখী মেলা সুন্দরভাবে আয়োজন করতে গত বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে মেলা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জানানো হয়, আবদুল জব্বারের বলীখেলা চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ বলীখেলা এখন পুরো চট্টগ্রামবাসীর বিনোদনের একটি অংশ। তাই মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগরের পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের আন্তরিক সহায়তা আশা করেন ।
সভায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি দক্ষিণ মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, এডিসি মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মামুন, এসি কোতোয়ালী মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম, পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুল আলম খোরশেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, রবিউল আলম, মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল, বলীখেলার প্রধান রেফারি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন বালি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
জনসাধারণের নির্বিঘ্নে চলাচল এবং যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে আন্দরকিল্লা থেকে কোর্ট বিল্ডিং পর্যন্ত প্রধান সড়কে মেলার স্টল না বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে দেশের ঐতিহ্যবাহী এবং আলোচিত এই বৈশাখী মেলাকে ঘিরে স্টল বিক্রি, দোকান বিক্রি, দখল, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিগত প্রায় ১১৫ বছর আগে চট্টগ্রামের বদরপাতির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে এ অঞ্চলের যুবকদের শারীরিকভাবে প্রস্তুত করতে ১৯০৯ সালের ১২ বৈশাখ চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে এই বলী খেলার আয়োজন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ১২ বৈশাখ এ বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
হচ্ছে না আন্নর আলী খাঁর ও সরকারের মেলা ঃ অপরদিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর জমিদার আন্নর আলী খাঁর ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা এ বছর হচ্ছে না। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সবধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মেলা উদযাপন কমিটি এ বছর বৈশাখী মেলা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে। কর্ণফুলীর মিয়াবাড়ির বংশধর ও মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য শাহাদাত হোসেন খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঐতিহ্যবাহী দুই দিনব্যাপী এই মেলা প্রতিবছর বৈশাখের ৭ ও ৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হলেও বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর বৈশাখী মেলা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় জনসাধারনের দেয়া তথ্য মতে, বিগত প্রায় ২০০ বছর ধরে এই বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মেলা উপলক্ষে এলাকায় উৎসবের আমেজ দেখা দিতো। মেলার ঐতিহ্য অনুযায়ী স্থানীয় পরিবারগুলো আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত দিয়ে খাওয়াতো। অন্যদিকে আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন তৈলারদ্বীপ গ্রামের জমিদার এর্শাদ আলী সরকারের বৈশাখী মেলা ও বলিখেলাও না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেলা আয়োজক কমিটি। এর্শাদ আলী স্টেটের মেলা আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য মুহাম্মদ হানিফ চৌধুরী, আলী নেওয়াজ খান, হানিফ মুহাম্মদ এনামুল করিম চৌধুরী, আলী ফেরদৌস খান জানান, বিগত ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলা নববর্ষের এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আনোয়ারাসহ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার মেলা প্রেমীদের মাঝে এটি সরকারের মেলা নামে পরিচিত।
আবুল হাসেম, চট্টগ্রাম ঃ
১৭ এপ্রিল, ২০২৫, 7:35 PM

চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্যের অন্যতম স্বাক্ষী আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসর শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল চারটায় অনুষ্টিত হবে। ঐতিহাসিক লালদিঘীর ময়দানে প্রতি বছরের মতো এ বলী-খেলার আসর বসবে। এ উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও তিন দিন ব্যাপি বৈশাখী মেলা বসবে। আগামী ২৪, ২৫ ও ২৬ এপ্রিল বৈশাখী মেলা বসবে। ঐতিহ্যবাহী এ বলীখেলা এবং বৈশাখী মেলা সুন্দরভাবে আয়োজন করতে গত বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে মেলা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জানানো হয়, আবদুল জব্বারের বলীখেলা চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ বলীখেলা এখন পুরো চট্টগ্রামবাসীর বিনোদনের একটি অংশ। তাই মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগরের পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের আন্তরিক সহায়তা আশা করেন ।
সভায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি দক্ষিণ মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, এডিসি মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মামুন, এসি কোতোয়ালী মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম, পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুল আলম খোরশেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, রবিউল আলম, মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল, বলীখেলার প্রধান রেফারি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন বালি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
জনসাধারণের নির্বিঘ্নে চলাচল এবং যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে আন্দরকিল্লা থেকে কোর্ট বিল্ডিং পর্যন্ত প্রধান সড়কে মেলার স্টল না বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে দেশের ঐতিহ্যবাহী এবং আলোচিত এই বৈশাখী মেলাকে ঘিরে স্টল বিক্রি, দোকান বিক্রি, দখল, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিগত প্রায় ১১৫ বছর আগে চট্টগ্রামের বদরপাতির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে এ অঞ্চলের যুবকদের শারীরিকভাবে প্রস্তুত করতে ১৯০৯ সালের ১২ বৈশাখ চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে এই বলী খেলার আয়োজন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর ১২ বৈশাখ এ বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
হচ্ছে না আন্নর আলী খাঁর ও সরকারের মেলা ঃ অপরদিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর জমিদার আন্নর আলী খাঁর ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা এ বছর হচ্ছে না। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সবধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মেলা উদযাপন কমিটি এ বছর বৈশাখী মেলা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে। কর্ণফুলীর মিয়াবাড়ির বংশধর ও মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য শাহাদাত হোসেন খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঐতিহ্যবাহী দুই দিনব্যাপী এই মেলা প্রতিবছর বৈশাখের ৭ ও ৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হলেও বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর বৈশাখী মেলা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় জনসাধারনের দেয়া তথ্য মতে, বিগত প্রায় ২০০ বছর ধরে এই বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মেলা উপলক্ষে এলাকায় উৎসবের আমেজ দেখা দিতো। মেলার ঐতিহ্য অনুযায়ী স্থানীয় পরিবারগুলো আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত দিয়ে খাওয়াতো। অন্যদিকে আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন তৈলারদ্বীপ গ্রামের জমিদার এর্শাদ আলী সরকারের বৈশাখী মেলা ও বলিখেলাও না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেলা আয়োজক কমিটি। এর্শাদ আলী স্টেটের মেলা আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য মুহাম্মদ হানিফ চৌধুরী, আলী নেওয়াজ খান, হানিফ মুহাম্মদ এনামুল করিম চৌধুরী, আলী ফেরদৌস খান জানান, বিগত ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলা নববর্ষের এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আনোয়ারাসহ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার মেলা প্রেমীদের মাঝে এটি সরকারের মেলা নামে পরিচিত।