ঢাকা ১৫ মার্চ, ২০২৫
শিরোনামঃ
জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাক্ষাৎ ফকিরহাটে ৩ বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগে ৬৪ বছরের বৃদ্ধ গ্রেপ্তার ১  আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের সমুদ্র আছে: প্রধান উপদেষ্টা খুরুশকুল জলবায়ু পুনর্বাসন প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা দেশের সার্বিক কল্যাণে সাংবাদিকদের দায়-দায়িত্ব অনেক বেশি: মির্জা আব্বাস প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে: রিজভী ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এফবিসিসিআই’র সংস্কার বিধি ইরানের পরমাণু ইস্যুতে ‘কূটনৈতিক তৎপরতা’ অব্যাহত রাখার আহ্বান রাশিয়ার থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শুরু করবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠাকালের সাক্ষী মুন্সীগঞ্জের বাবা আদম মসজিদ

কেজি দরে তরমুজ বিক্রি, নিরুপায় ক্রেতারা

#
news image

নেত্রকোনা পৌর শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ, দামও রাখা হচ্ছে বেশি। এতে ক্রেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেও নিরুপায় হয়েই বিক্রেতাদের চাপানো নিয়মেই তরমুজ কিনছেন তারা।

সরেজমিনে জেলার সদরের বড়বাজার, মেছুয়া বাজার, ঘুসের বাজার, রেলগেট বাজারসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখাগেছে, প্রতিটি বাজারেই কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। বিগত বছরগুলোতে উপজেলার সর্বত্রই তরমুজের পিস হিসেবে বিক্রি হলেও গত মৌসুম থেকেই বাজারে তরমুজের পর্যাপ্ত জোগান থাকা সত্ত্বেও কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, আড়ৎ থেকে পিস হিসেবে তরমুজ পাচ্ছেন না তারা। তাই কেজি দরেই বিক্রি করেতে বাধ্য হচ্ছেন।

ক্রেতাদের অভিযোগ অতীতে ন্যায্য দামে বেচাকেনা হলেও সময়ের ব্যবধানে এখানে অসাধু ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ফলে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে উচ্চবিত্তদের কেনাকাটায় কোন সমস্যা না হলেও বিপাকে পড়ছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। বিক্রেতারা প্রতিদিন শত শত পিস তরমুজ নিয়ে বসে থাকেন। তবু সহনীয় দামে বিক্রি করছেন না। অনেক ক্রেতা এসে বিক্রেতার সঙ্গে দর কষাকষি করছেন। একপর্যায়ে তারা বিবাদেও জড়িয়ে পড়ছেন। যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তাই অনেক ক্রেতা কেটে ১ কেজি তরমুজ চাচ্ছে দোকানির কাছে, এ নিয়েও চলছে বাগবিতণ্ডা।

জেলা সদরের মেছুয়া বাজারে তরমুজ কিনতে আসা দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শ্যামলেন্দু পাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রোজার আগে ৫ কেজি ওজনের একটি তরমুজের দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা। অথচ এখন ৫ কেজির একটি তরমুজ কিনতে গুনতে হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো।

তিনি আরও বলেন, তরমুজের অতিরিক্ত দামের কারণে অনেকেই তরমুজ কিনতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। বাজারে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির অভাবেই এই অব্যবস্থাপনা।

রোখসানা বেগম নামের একজন স্কুল শিক্ষিকা বলেন, বাজারে তরমুজের অভাব নেই। কয়েকটি দোকান ঘুরেও পিস হিসেবে কিনতে পারলাম না। পরে বাধ্য হয়ে পাঁচ কেজি ওজনের একটি তরমুজ ৩৫০ টাকায় কিনেছি, যা পিস হিসাবে কিনলে ১৫০ থেকে ১৮০ দাম পড়তো।

বারহাট্টা উপজেলা সদরের ভ্যান চালক সাদ্দাম হোসেনের  সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, একে তো রোজার সময় যাত্রী পাওয়া যায় না। তারপরও পেটের দায়ে বের হতে হয়। দিন শেষে যা আয় হচ্ছে তা দিয়ে কোনোরকম সংসার চলে যাচ্ছে। মনে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তরমুজের যে দাম, এই সীমিত আয় দিয়ে তরমুজ খাওয়া সম্ভব হবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ফল ব্যবসায়ী জানান, বড় বড় আড়ৎদাররা পাইকারি বাজার থেকে তরমুজ ‘শ’ হিসেবে কিনে তা কেজিতে বিক্রি করছেন। তাই আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আড়ৎ থেকে কোনো তরমুজ কেজি দরে কিনতে পারিনা। তাই, আমার যেভাবে কিনবো সেভাবেই বিক্রি করব।

তারা বলেন, আমাদের পিস হিসেবে বিক্রি করতে সুবিধাও আছে। এটির ওজন করতেও হবে না। এজন্য আগে আড়ৎ ঠিক করতে হবে। তারা ঠিকভাবে দিলেই আমার ঠিকভাবে বিক্রি করতে পারব। প্রশাসন থেকে বাজার মনিটরিং করলে কেজি কাহিনীর উন্মোচন হবে।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নেত্রকোনা জেলার সহকারী পরিচালক মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, বছরখানেক আগেও তরমুজ পিস হিসেবে বিক্রি হতো। কিন্তু ইদানিং বাজার মনিটরিংয়ের অভাবের কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে তরমুজ কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যদিও আড়ৎদাররা এই তরমুজ কৃষকদের কাছ থেকে তারা ‘শ’ হিসেবে কিনে নিয়ে আসে। এখনো ক্রেতাদের কাছ থেকে এই বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে শিগগিরই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি :

১৫ মার্চ, ২০২৫,  3:33 AM

news image

নেত্রকোনা পৌর শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ, দামও রাখা হচ্ছে বেশি। এতে ক্রেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেও নিরুপায় হয়েই বিক্রেতাদের চাপানো নিয়মেই তরমুজ কিনছেন তারা।

সরেজমিনে জেলার সদরের বড়বাজার, মেছুয়া বাজার, ঘুসের বাজার, রেলগেট বাজারসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখাগেছে, প্রতিটি বাজারেই কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। বিগত বছরগুলোতে উপজেলার সর্বত্রই তরমুজের পিস হিসেবে বিক্রি হলেও গত মৌসুম থেকেই বাজারে তরমুজের পর্যাপ্ত জোগান থাকা সত্ত্বেও কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে তরমুজ। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, আড়ৎ থেকে পিস হিসেবে তরমুজ পাচ্ছেন না তারা। তাই কেজি দরেই বিক্রি করেতে বাধ্য হচ্ছেন।

ক্রেতাদের অভিযোগ অতীতে ন্যায্য দামে বেচাকেনা হলেও সময়ের ব্যবধানে এখানে অসাধু ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ফলে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে উচ্চবিত্তদের কেনাকাটায় কোন সমস্যা না হলেও বিপাকে পড়ছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। বিক্রেতারা প্রতিদিন শত শত পিস তরমুজ নিয়ে বসে থাকেন। তবু সহনীয় দামে বিক্রি করছেন না। অনেক ক্রেতা এসে বিক্রেতার সঙ্গে দর কষাকষি করছেন। একপর্যায়ে তারা বিবাদেও জড়িয়ে পড়ছেন। যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তাই অনেক ক্রেতা কেটে ১ কেজি তরমুজ চাচ্ছে দোকানির কাছে, এ নিয়েও চলছে বাগবিতণ্ডা।

জেলা সদরের মেছুয়া বাজারে তরমুজ কিনতে আসা দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শ্যামলেন্দু পাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রোজার আগে ৫ কেজি ওজনের একটি তরমুজের দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা। অথচ এখন ৫ কেজির একটি তরমুজ কিনতে গুনতে হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো।

তিনি আরও বলেন, তরমুজের অতিরিক্ত দামের কারণে অনেকেই তরমুজ কিনতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। বাজারে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির অভাবেই এই অব্যবস্থাপনা।

রোখসানা বেগম নামের একজন স্কুল শিক্ষিকা বলেন, বাজারে তরমুজের অভাব নেই। কয়েকটি দোকান ঘুরেও পিস হিসেবে কিনতে পারলাম না। পরে বাধ্য হয়ে পাঁচ কেজি ওজনের একটি তরমুজ ৩৫০ টাকায় কিনেছি, যা পিস হিসাবে কিনলে ১৫০ থেকে ১৮০ দাম পড়তো।

বারহাট্টা উপজেলা সদরের ভ্যান চালক সাদ্দাম হোসেনের  সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, একে তো রোজার সময় যাত্রী পাওয়া যায় না। তারপরও পেটের দায়ে বের হতে হয়। দিন শেষে যা আয় হচ্ছে তা দিয়ে কোনোরকম সংসার চলে যাচ্ছে। মনে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তরমুজের যে দাম, এই সীমিত আয় দিয়ে তরমুজ খাওয়া সম্ভব হবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ফল ব্যবসায়ী জানান, বড় বড় আড়ৎদাররা পাইকারি বাজার থেকে তরমুজ ‘শ’ হিসেবে কিনে তা কেজিতে বিক্রি করছেন। তাই আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আড়ৎ থেকে কোনো তরমুজ কেজি দরে কিনতে পারিনা। তাই, আমার যেভাবে কিনবো সেভাবেই বিক্রি করব।

তারা বলেন, আমাদের পিস হিসেবে বিক্রি করতে সুবিধাও আছে। এটির ওজন করতেও হবে না। এজন্য আগে আড়ৎ ঠিক করতে হবে। তারা ঠিকভাবে দিলেই আমার ঠিকভাবে বিক্রি করতে পারব। প্রশাসন থেকে বাজার মনিটরিং করলে কেজি কাহিনীর উন্মোচন হবে।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নেত্রকোনা জেলার সহকারী পরিচালক মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, বছরখানেক আগেও তরমুজ পিস হিসেবে বিক্রি হতো। কিন্তু ইদানিং বাজার মনিটরিংয়ের অভাবের কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে তরমুজ কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যদিও আড়ৎদাররা এই তরমুজ কৃষকদের কাছ থেকে তারা ‘শ’ হিসেবে কিনে নিয়ে আসে। এখনো ক্রেতাদের কাছ থেকে এই বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে শিগগিরই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।