প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন বরিশালের কড়াপুর মিয়াবাড়ি মসজিদ

বরিশাল প্রতিনিধি :
১৪ মার্চ, ২০২৫, 6:09 AM

প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন বরিশালের কড়াপুর মিয়াবাড়ি মসজিদ
জেলার প্রাচীন নির্মাণ শৈলীর অনন্য নিদর্শন ‘কড়াপুর মিয়াবাড়ি মসজিদ’। ব্রিটিশ আমল থেকে মিয়াবাড়ি মসজিদটি আজও দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে।
জেলার সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের কড়াপুর গ্রামের মিয়াবাড়ি মসজিদ প্রাচীন স্থাপত্য শৈলীর অন্যতম একটি আকর্ষণ। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের সূচনালগ্নে এ মসজিদটি নির্মিত হয়। ধারণা করা হয়, ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতল মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
বৈচিত্রময় ও কারুকার্যমণ্ডিত মসজিদটির নিচে রয়েছে ৬ দরজা বিশিষ্ট কামরা। ২য় তলায় মূল মসজিদের বৈচিত্রময় আসল সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে। এই অংশ জুড়ে রয়েছে চমৎকার সব নকশার কাজ। মূল মসজিদের রয়েছে ৩টি দরজা, ৮টি বড় মিনার। বড় মিনারগুলোর মধ্যে রয়েছে ছোট আরও ১২টি মিনার। মসজিদের মাঝখানে রয়েছে ৩টি গম্বুজ। সবচেয়ে বড় গম্বুজটির ভেতরের অংশে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য। মসজিদটির পূর্ব ও পশ্চিম পাশে রয়েছে ২টি দিঘি, যা মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়েছে। বর্তমানে ভ্রমণ পিপাসু দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা প্রাচীন এই মসজিদটি দেখতে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, মসজিদটির ছোট মিনারগুলোর মাঝের স্থানগুলোকে সুন্দর কারুকার্যময় নকশা দ্বারা অলঙ্কৃত করা হয়েছে। মসজিদের দ্বিতীয় তলায় ওঠার জন্য রয়েছে প্রশস্ত সিঁড়ি। সিঁড়ির নিচের অংশে রয়েছে দুটি বাঁধানো কবর। কিন্তু ওই কবর কাদের সেটা জানেন না এলাকার মানুষ।
এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এটি ব্রিটিশ আমলের সূচনালগ্নে নির্মিত একটি মসজিদ। শহরের পশ্চিম দিকে বরিশাল-কড়াপুর সড়ক সংলগ্ন মিয়া বাড়িতে মসজিদটি অবস্থিত। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ‘হায়াত মাহমুদ’ ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার কারণে প্রিন্স অফ ওয়েলস দ্বীপে নির্বাসিত হন। দীর্ঘ ষোল বছর পর দেশে ফিরে তিনি দু’টি দীঘি এবং দোতলা এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির স্থাপত্যরীতিতে পুরান ঢাকায় অবস্থিত শায়েস্তা খান নির্মিত কারতলব খান মসজিদের অনুকরণ দৃশ্যমান। দ্বিতীয় তলায় উঠতে বাইরে থেকে দোতলা পর্যন্ত একটি প্রশস্ত সিঁড়ি রয়েছে। মসজিদটির শৈল্পিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটক আসেন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বাবুল পল্লীবাংলার সাথে আলাপকালে জানান, কড়াপুর মিয়া বাড়ির মসজিদটিতে এক সাথে ৬০ জন ব্যক্তি নামাজ আদায় করতে পারে। তবে এই মসজিদটিতে বিভিন্ন উৎসবে প্রায় দেড় থেকে দুই’শত লোকের সমাগম হয়। বর্তমানে মসজিদের নিচতলায় কয়েকটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম চলছে।
বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম খসরু পল্লীবাংলাকে বলেন, বরিশাল অঞ্চলের প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। ধারণা করা হয়, ১৮০০ সালের দিকে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি মসজিদটি রঙ করা হয়েছে এবং মেরামত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। মসজিদটিতে প্রবেশের একমাত্র সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক। সংস্কারের অভাবে দিন দিন যাতায়াতের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে এই সড়কটি। স্থানীয় মানুষের যাতায়াত ও পর্যটক আকর্ষণের জন্য এই সড়কটি মেরামত করা জরুরি।
বরিশাল প্রতিনিধি :
১৪ মার্চ, ২০২৫, 6:09 AM

জেলার প্রাচীন নির্মাণ শৈলীর অনন্য নিদর্শন ‘কড়াপুর মিয়াবাড়ি মসজিদ’। ব্রিটিশ আমল থেকে মিয়াবাড়ি মসজিদটি আজও দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে।
জেলার সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের কড়াপুর গ্রামের মিয়াবাড়ি মসজিদ প্রাচীন স্থাপত্য শৈলীর অন্যতম একটি আকর্ষণ। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের সূচনালগ্নে এ মসজিদটি নির্মিত হয়। ধারণা করা হয়, ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতল মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
বৈচিত্রময় ও কারুকার্যমণ্ডিত মসজিদটির নিচে রয়েছে ৬ দরজা বিশিষ্ট কামরা। ২য় তলায় মূল মসজিদের বৈচিত্রময় আসল সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে। এই অংশ জুড়ে রয়েছে চমৎকার সব নকশার কাজ। মূল মসজিদের রয়েছে ৩টি দরজা, ৮টি বড় মিনার। বড় মিনারগুলোর মধ্যে রয়েছে ছোট আরও ১২টি মিনার। মসজিদের মাঝখানে রয়েছে ৩টি গম্বুজ। সবচেয়ে বড় গম্বুজটির ভেতরের অংশে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য। মসজিদটির পূর্ব ও পশ্চিম পাশে রয়েছে ২টি দিঘি, যা মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়েছে। বর্তমানে ভ্রমণ পিপাসু দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা প্রাচীন এই মসজিদটি দেখতে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, মসজিদটির ছোট মিনারগুলোর মাঝের স্থানগুলোকে সুন্দর কারুকার্যময় নকশা দ্বারা অলঙ্কৃত করা হয়েছে। মসজিদের দ্বিতীয় তলায় ওঠার জন্য রয়েছে প্রশস্ত সিঁড়ি। সিঁড়ির নিচের অংশে রয়েছে দুটি বাঁধানো কবর। কিন্তু ওই কবর কাদের সেটা জানেন না এলাকার মানুষ।
এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এটি ব্রিটিশ আমলের সূচনালগ্নে নির্মিত একটি মসজিদ। শহরের পশ্চিম দিকে বরিশাল-কড়াপুর সড়ক সংলগ্ন মিয়া বাড়িতে মসজিদটি অবস্থিত। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ‘হায়াত মাহমুদ’ ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার কারণে প্রিন্স অফ ওয়েলস দ্বীপে নির্বাসিত হন। দীর্ঘ ষোল বছর পর দেশে ফিরে তিনি দু’টি দীঘি এবং দোতলা এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির স্থাপত্যরীতিতে পুরান ঢাকায় অবস্থিত শায়েস্তা খান নির্মিত কারতলব খান মসজিদের অনুকরণ দৃশ্যমান। দ্বিতীয় তলায় উঠতে বাইরে থেকে দোতলা পর্যন্ত একটি প্রশস্ত সিঁড়ি রয়েছে। মসজিদটির শৈল্পিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটক আসেন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বাবুল পল্লীবাংলার সাথে আলাপকালে জানান, কড়াপুর মিয়া বাড়ির মসজিদটিতে এক সাথে ৬০ জন ব্যক্তি নামাজ আদায় করতে পারে। তবে এই মসজিদটিতে বিভিন্ন উৎসবে প্রায় দেড় থেকে দুই’শত লোকের সমাগম হয়। বর্তমানে মসজিদের নিচতলায় কয়েকটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম চলছে।
বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম খসরু পল্লীবাংলাকে বলেন, বরিশাল অঞ্চলের প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। ধারণা করা হয়, ১৮০০ সালের দিকে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি মসজিদটি রঙ করা হয়েছে এবং মেরামত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। মসজিদটিতে প্রবেশের একমাত্র সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক। সংস্কারের অভাবে দিন দিন যাতায়াতের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে এই সড়কটি। স্থানীয় মানুষের যাতায়াত ও পর্যটক আকর্ষণের জন্য এই সড়কটি মেরামত করা জরুরি।