সংক্ষিপ্ত আত্মজীবনী আলোচনা, দোয়া, মোনাজাত ও মিষ্টি  বিতরণের মধ্যদিয়ে গাজীপুরে জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। জন্মবার্ষিকী  উপলক্ষ্যে নগরীর গাছা মেট্রো থানা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা আলোচনা সভার আয়োজন করেন।

রবিবার (১৯জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বোর্ডবাজার বিএনপি কার্যালয়ে জিয়াউর রহমানের আত্মজীবনী আলোচনা ও জিয়া পরিবারের জন্যে দোয়া, মোনাজাত শেষে মিষ্টি বিতরণী সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে গাছা থানা বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে, থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হাজারীর সঞ্চালনায়, প্রধান অতিথীর আলোচনা করেন, ঢাকা বিভাগীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ও গাজীপুর মহানগরের সাবেক সভাপতি আরিফ হোসেন হাওলাদার।

এসময় প্রধান অতিথী তার আলোচনায় জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে আত্মজীবনী সংক্ষেপে বর্ণনা করেন। আলোচনার এক পর্যায়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দ্যেশ্যে তিনি বলেন, "তারেক রহমানের ৩১দফার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী নয়। তাই এ ৩১দফা নেতাকর্মীদের মাধ্যমে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।"

তিনি বলেন, "সাধারণ মানুষ যেন বিএনপিতে আকৃষ্ট হয় সে লক্ষ্যে সবাই শপথ গ্রহণ করি। ৩১দফার মাধ্যমে ক্ষমতার ভারসাম্যতা অর্থাৎ জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে থাকবে বলে তারেক রহমান এ ৩১দফা বাস্তবায়নের ডাক দিয়েছেন।" উপস্থিত সকলের উদ্দ্যেশ্যে বলেন, "সকলকে নিজেদের মধ্যে এ ৩১দফা ধারন করে অন্যদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের।" শেষে জিয়াউর রহমান, তারেক রহমান-সহ জিয়া পরিবারের সদস্যদের জন্যে সকলের নিকট দোয়া প্রত্যাশা করেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক দাবী করে আত্মজীবনী আলোচনা শেষে আ'লীগের তীব্র সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন, গাছা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, কামাল উদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি এসএম নাঈম, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জব্বার সরকার, সহ-সভাপতি আবুল হাশেম, কেন্দ্রীয় ওলামা দলের সদস্য আব্দুল মোমেন, থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ইফতেখার আহম্মেদ রিপন ছাত্রদল নেতা আলিফসহ অন্যরা।

বক্তব্যে গাছা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন বলেন, "সৈরাচারী হাসিনার হাত থেকে গণতন্ত্র ও এদেশের মানুষের ভোটাধিকার উদ্ধার হতো কিনা জানিনা। তাই শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকীতে তারেক রহমানসহ জিয়া পরিবারের সকলের জন্যে দোয়া প্রত্যাশা করি। তারেক রহমান শীঘ্রই যেন দেশে ফিরে দেশের রাজনৈতিক হাল ধরতে পারে সেজন্য সকলে দোয়া করবেন।"

কামাল বলেন, "আমাদের গাছা থানা বিএনপির ব্যানার ব্যাবহার করে কতিপয় দূষ্কৃতকারী বহিষ্কৃতরা আ'লীগের লোকজন নিয়ে বিভিন্ন পোষাক কারখানার ঝুট ব্যাবসা দখল করছে। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের সাথে কথা বলে। তাই গাছা থানায় আগামীতে আপনাদের নিয়ে তাদের শক্ত হাতে দমন করে সঠিক ও মূল ধারার বিএনপির একটি রাজনিতি উপহার দিবো আপনাদের।"

থানা বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম বাবুল তার বক্তব্যে বলেন, "আজকে যার জন্মদিন তিনি জন্ম না হলে হয়তো এদেশে স্বাধীন হতোনা। এদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাও হতো না। কাজেই বারবার যার নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। বাকশাল থেকে দেশ স্বাধীন হয়েছে। পরবর্তীতে তার সহধর্মিণী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৯০সালে একটি আন্দোলনে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছিলো।" 

সভাপতি বাবুল বলেন, "২০২৪ সালেও বিএনপি গণতন্ত্র মুক্ত করেছে। বিএনপির বিকল্প এ বাংলাদেশে নেই। বিএনপির নাম ভাঙ্গীয়ে কিছু দুষ্কৃতকারী লোক আছে তারা অপতৎপরতায় বিএনপির বদনাম করছে। তিনি বলেন, "স্বাধু সাবধান" অতিরিক্ত কিছু করবেন না, এটা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। বাংলাদেশের সর্বপ্রান্তে এ দল তাদের মোকাবেলা করেছে, আপনাদেরকেও মোকাবেলা করতে পারবে।"

বক্তব্যে অন্যান্য আলোচকরাও তারেক রহমানসহ জিয়াউর রহমানের পরিবারের সদস্যদের জন্যে দোয়া প্রত্যাশা করেন। তারা বলেন ৫তারিখে যারা মাঠে ছিলোনা তারা বিএনপির নাম ভাঙ্গীয়ে আ'লীগের লোকজন নিয়ে দল ভারি করছে। তাদের থেকে সাবধান না হলে শেখ হাসিনার মতো পালাতে হবে বলেও মন্তব্য করেন আলোচকরা। তাই সেদিকে লক্ষ রেখে আগামীতে দলের নিতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বক্তারা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, গাছা থানা বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ মণ্ডল, থানা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জুয়েল তাজ, রুবেল সরকার, সালাম ভূঁইয়া, আল-নাইম, নগরীর ৩৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর হোসাইন, ছাত্রদল নেতা আলিফ ও জাফর প্রমূখ। 

এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুন্ম আহ্বায়ক স্বপন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নাজিউর রহমানসহ থানা বিএনপির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীরা। শেষে বিএনপির নাম ব্যাবহার করে কেউ চাঁদাবাজি করলে শক্তহস্তে দমনের বার্তা দিয়ে সমাপনী বক্তব্য রাখেন, অনুষ্ঠান ও থানা বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম বাবুল।