ঢাকা ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
শিরোনামঃ
কেবলমাত্র একটা নির্বাচনের জন্য ২ সহস্রাধিক মানুষ শহিদ হননি : আসিফ মাহমুদ সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের বিষয় তদন্তে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন ২য় উম্মুক্ত গোজু রিউ ই কাতা প্রতিযোগিতায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের টিম রানার আপ বারহাট্টায় সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ইউএনও'র মতবিনিময় গোমস্তাপুরের রাধানগর ইউনিয়নে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সমাবেশ অনুষ্ঠিত  দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে দুদকের অভিযান জিঞ্জিরায় রূপালী ব্যাংকে তিন ডাকাতের আত্মসমর্পণ গোমস্তাপুরের পার্বতীপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৪ ক্রিকেট খেলোয়াড়দের প্রাথমিক বাছাই ও অনুশিলন নোয়াখালীতে ভুয়া সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আটক

শ্রীপুরে প্রায় ৫২ বছর ধরে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে বসছে গ্রামীণ হাট।

#
news image

গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রায় ৫২ বছরের পুরোনো ১৩ নং আবদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে বসছে গ্রামীণ হাট। ফলে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে না শিক্ষিকারা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও বাজার কমিটির কাছে বেশ কয়েকবার অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো প্রতিকার মিলছে না। মাঠ দখল করে সপ্তাহে দুই দিন বসে এই হাট। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।

তারা বলছেন, বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীর না থাকার সুযোগে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় না নিয়ে স্রেফ আর্থিক মুনাফার লোভে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে হাটের কার্যক্রম পরিচালনার মতো জঘন্য কাজ করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের মাঠে হাটের কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী। 

এ প্রসঙ্গে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজিব আহমেদ বলেন, খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি। কোনোভাবেই বিদ্যালয়ের মাঠে হাট-বাজার বসানো যাবে না। ভবিষ্যতে যেন বিদ্যালয়ের মাঠে হাট-বাজার না বসে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা নাসরিন বলেন, বিদ্যালয় মাঠে হাট বসার বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। মাত্র দুই-তিন দিন আগে জানতে পেরেছি। শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার মান অক্ষুণ্ন রাখতে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন শ্রীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

১৩ নং আবদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল জান্নাত বলেন, সপ্তাহে দুই দিন বিদ্যালয়ের আঙিনায় হাট বসে। শুক্রবার পাঠদান বন্ধ থাকায় খুব একটা ঝামেলা না হলেও মূল সমস্যা তৈরি হয় সোমবার। সেদিন শিক্ষার্থীদের অ্যাসেম্বলি করানো যায় না। হাটে বিপুল লোকসমাগম হয়। কোলাহলের কারণে পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হয়। এ ছাড়া হাটে বহিরাগতদের আনাগোনা বেশি থাকায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত থাকি আমরা। প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, আমার বিদ্যালয়ে বেশিরভাগই শিক্ষিকা। তারা হাটের দিন স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পাঠদানের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যালয় মাঠ থেকে হাট সরানো খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। 

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে বাজার পরিচালনাকারী মোসলেহ উদ্দিন মাস্টার বলেন, বিদ্যালয় মাঠে যে হাটের দোকান চলে যায় তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা সতর্ক থাকব। বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর থাকলে কিন্তু হাট পেরিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে দোকান যেতে পারত না। তাই প্রশাসনের কাছে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের দাবি করছি।    

সরেজমিন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার শত বছরের প্রাচীনতম লোহাই বাজারে প্রতি শুক্র ও সোমবার হাট বসে। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় সমস্যা না হলেও সোমবার ঘিরেই তৈরি হয় জটিলতা। হাটবারের দিন হাজারো মানুষের কোলাহলে মুখর হয়ে ওঠে এলাকা। আশপাশের শত শত দোকানি নানা পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসে। এসব দোকানের লম্বা লাইন লোহাই বাজারের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে ঢুকে পড়ে বিদ্যালয়ের মাঠে। 

দুপুর থেকে হাট বসায় বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হয়। শিক্ষার্থীদের অ্যাসেম্বলি ও খেলাধুলার ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চললেও প্রশাসনের তেমন কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় ভূমি অফিসে কথা বলে জানা যায়, লোহাই হাট শত বছরের প্রাচীনতম একটি বাজার। তবে এই বাজারের সঙ্গে সরকারি কোনো স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নেই। স্থানীয়দের জমিতে হাটটি পরিচালিত হচ্ছে। ভাসমান দোকানিদের কাছ থেকে খাজনা উঠিয়ে বাজার কমিটি টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। 

বিদ্যালয়ের দাতা পরিবারের সদস্য ও তেলিহাটি ইউপির ১ নং ওয়ার্ড সদস্য তারেক হাসান বাচ্চু বলেন, শিক্ষার পরিবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বেশ কয়েকবার ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদ্যালয় মাঠ থেকে হাটের দোকান সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দোকান সরিয়ে দেওয়ার পর ফের বসে যায়। স্থায়ীভাবে এই সমস্যার সমাধানের জন্য বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা জরুরি

শ্রীপুর উপজেলা প্রতিনিধি :

৩০ নভেম্বর, ২০২৪,  1:35 PM

news image
.

গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রায় ৫২ বছরের পুরোনো ১৩ নং আবদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে বসছে গ্রামীণ হাট। ফলে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে না শিক্ষিকারা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও বাজার কমিটির কাছে বেশ কয়েকবার অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো প্রতিকার মিলছে না। মাঠ দখল করে সপ্তাহে দুই দিন বসে এই হাট। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।

তারা বলছেন, বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীর না থাকার সুযোগে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় না নিয়ে স্রেফ আর্থিক মুনাফার লোভে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে হাটের কার্যক্রম পরিচালনার মতো জঘন্য কাজ করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের মাঠে হাটের কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী। 

এ প্রসঙ্গে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজিব আহমেদ বলেন, খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি। কোনোভাবেই বিদ্যালয়ের মাঠে হাট-বাজার বসানো যাবে না। ভবিষ্যতে যেন বিদ্যালয়ের মাঠে হাট-বাজার না বসে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা নাসরিন বলেন, বিদ্যালয় মাঠে হাট বসার বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। মাত্র দুই-তিন দিন আগে জানতে পেরেছি। শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার মান অক্ষুণ্ন রাখতে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন শ্রীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

১৩ নং আবদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল জান্নাত বলেন, সপ্তাহে দুই দিন বিদ্যালয়ের আঙিনায় হাট বসে। শুক্রবার পাঠদান বন্ধ থাকায় খুব একটা ঝামেলা না হলেও মূল সমস্যা তৈরি হয় সোমবার। সেদিন শিক্ষার্থীদের অ্যাসেম্বলি করানো যায় না। হাটে বিপুল লোকসমাগম হয়। কোলাহলের কারণে পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হয়। এ ছাড়া হাটে বহিরাগতদের আনাগোনা বেশি থাকায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত থাকি আমরা। প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, আমার বিদ্যালয়ে বেশিরভাগই শিক্ষিকা। তারা হাটের দিন স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পাঠদানের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যালয় মাঠ থেকে হাট সরানো খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। 

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে বাজার পরিচালনাকারী মোসলেহ উদ্দিন মাস্টার বলেন, বিদ্যালয় মাঠে যে হাটের দোকান চলে যায় তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা সতর্ক থাকব। বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর থাকলে কিন্তু হাট পেরিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে দোকান যেতে পারত না। তাই প্রশাসনের কাছে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের দাবি করছি।    

সরেজমিন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার শত বছরের প্রাচীনতম লোহাই বাজারে প্রতি শুক্র ও সোমবার হাট বসে। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় সমস্যা না হলেও সোমবার ঘিরেই তৈরি হয় জটিলতা। হাটবারের দিন হাজারো মানুষের কোলাহলে মুখর হয়ে ওঠে এলাকা। আশপাশের শত শত দোকানি নানা পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসে। এসব দোকানের লম্বা লাইন লোহাই বাজারের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে ঢুকে পড়ে বিদ্যালয়ের মাঠে। 

দুপুর থেকে হাট বসায় বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হয়। শিক্ষার্থীদের অ্যাসেম্বলি ও খেলাধুলার ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চললেও প্রশাসনের তেমন কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় ভূমি অফিসে কথা বলে জানা যায়, লোহাই হাট শত বছরের প্রাচীনতম একটি বাজার। তবে এই বাজারের সঙ্গে সরকারি কোনো স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নেই। স্থানীয়দের জমিতে হাটটি পরিচালিত হচ্ছে। ভাসমান দোকানিদের কাছ থেকে খাজনা উঠিয়ে বাজার কমিটি টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। 

বিদ্যালয়ের দাতা পরিবারের সদস্য ও তেলিহাটি ইউপির ১ নং ওয়ার্ড সদস্য তারেক হাসান বাচ্চু বলেন, শিক্ষার পরিবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বেশ কয়েকবার ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদ্যালয় মাঠ থেকে হাটের দোকান সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দোকান সরিয়ে দেওয়ার পর ফের বসে যায়। স্থায়ীভাবে এই সমস্যার সমাধানের জন্য বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা জরুরি