ঢাকা ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
শিরোনামঃ
৩১ দফা বাস্তবায়নে নওগাঁয় রাতভর বিএনপির লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি কোম্পানীগঞ্জে এনটিআরসিএ কর্তৃক সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিটিএ'র সংবর্ধনা  উত্তর ফটিকছড়ি উপজেলায় অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন বাগেরহাটে এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও  মানববন্ধন মাধবপুরে খাস জমি থেকে ড্রেজার মেশিন দ্বারা  মাঠি উত্তোলন, প্রশাসন নিরব বাগেরহাটে মহিদুল নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যাঃ আটক ২  বেলকুচিতে ৪৮টি গরুসহ খামার পেলেন আত্মসমর্পন করা ৬৭ চরমপন্থী শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী টঙ্গী কলেজে লিফলেট বিতরণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাধা বাগেরহাটের পচা দিঘী থেকে মৃতদেহ উদ্ধার

কার্বন মুক্তকরণের জন্য ঋণ নিপ্পন স্টিলের জন্য চ্যালেঞ্জ

#
news image

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের পর ইউএস স্টিলের সঙ্গে বহু বিলিয়ন ডলারের একীভূতকরণকে "ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব" হিসেবে বর্ণনা করেছে নিপ্পন স্টিল। তবে জাপানের এই বৃহৎ ইস্পাত কোম্পানিকে সামনের দিনগুলোতে বহু প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে। বাণিজ্য শুল্ক থেকে শুরু করে বৈশ্বিক চাহিদার নিম্নগতি, চ্যালেঞ্জের শেষ নেই। টোকিও থেকে এ সংবাদ জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

মার্কিন শর্তাবলি: 
নিপ্পন স্টিল ও ইউএস স্টিল জানিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের সঙ্গে একটি ‘জাতীয় নিরাপত্তা চুক্তি (এনএসআই) ’ স্বাক্ষর করেছে।  যার আওতায় ২০২৮ সালের মধ্যে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগে এই চুক্তি আটকে দিয়েছিলেন। চুক্তির আওতায় মার্কিন সরকার একটি ‘গোল্ডেন শেয়ার’ পাবে। যা কোম্পানির ওপর অধিক নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি দেশীয় উৎপাদন ও বাণিজ্য সংক্রান্ত কিছু অস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি থাকবে ।

আর্থিক চাপ:
রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গত মাসে সতর্ক করেছে, এই চুক্তির ‘বৃহৎ আর্থিক বোঝা’ নিপ্পন স্টিলের ক্রেডিট রেটিং আরও খারাপ করতে পারে।

ব্লুমবার্গ ইন্টেলিজেন্সের মিশেল লুং মে মাসে বলেন, ১৪.৯ বিলিয়ন ডলারের এই একীভূতকরণ নিপ্পনের ঋণের পরিমাণ বর্তমান ১৬.৭ বিলিয়ন ডলার থেকে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এই চুক্তি নিপ্পন স্টিলকে জাপানের দুর্বল বাজার থেকে বৈচিত্র্য আনতে সাহায্য করবে, তবে ইউএস স্টিলের পুরনো সম্পদ মেরামতে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন।’

কিছু শেয়ারহোল্ডার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কর্মী বিনিয়োগকারী থ্রিডি ইনভেস্টমেন্ট পার্টনার্স আসন্ন বার্ষিক সাধারণ সভায় নিপ্পন স্টিলের নির্বাহীদের পুনর্নিয়োগের বিরোধিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা সতর্ক করে দিয়েছে যে, এত বড় মূলধন ব্যয় কর্পোরেট মূল্যে স্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।  

শুল্কের হুমকি: এসএন্ডপি জানিয়েছে, দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ইস্পাত চাহিদা দুর্বল এবং মার্কিন শুল্কের প্রভাবের কারণে নিপ্পন স্টিলের আয় কমতে পারে । বিশ্বব্যাপী চাহিদার মন্দা, অতিরিক্ত সরবরাহ এবং সরকারি অবকাঠামো প্রকল্পের ঘাটতির কারণে বিশ্ব ইস্পাত শিল্পে গভীর সংকট চলছে বলে সতর্ক করেছে কোম্পানিটি।

এর মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির উপর দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

জাপানে বয়স্ক জনগোষ্ঠী বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশীয় চাহিদা কমেছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানিও কঠিন হয়ে পড়ছে। এই সমস্যা সমাধানে, নিপ্পন স্টিল ভারত ও থাইল্যান্ডের ইস্পাত কোম্পানিগুলি অধিগ্রহণ করেছে। ইউএস স্টিলের সঙ্গে একীভূতকরণ সেই কৌশলের অংশ।
এই চুক্তির ফলে নিপ্পন স্টিলের বার্ষিক অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতা ৬৬ মিলিয়ন টন থেকে বেড়ে ৮৬ মিলিয়ন টনে পৌঁছাবে।

চীনের অতিরিক্ত উৎপাদন: অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) অনুসারে, বিশ্বব্যাপী ইস্পাতের চাহিদা প্রতি বছর এক শতাংশেরও কম হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ২০২৭ সালের মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতার ৬.৭ শতাংশ বৃদ্ধির প্রত্যাশিত লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ওইসিডি অনুসারে, বৈশ্বিক ইস্পাতের চাহিদা বছরে ১ শতাংশেরও কম হারে বাড়ছে। কিন্তু ২০২৭ সালের মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতা ৬.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। যা দাম কমিয়ে দেবে এবং অনেক কোম্পানি ক্ষতির মুখে পড়বে।

এর বেশিরভাগই চীনের ভর্তুকি নির্ভর অতিরিক্ত উৎপাদন যা "নীতি বিকৃতি" বলে অভিহিত করেছে ওইসিডি।

২০২০ সাল থেকে চীনের ইস্পাত রপ্তানি দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। যার জেরে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন অঞ্চল অ্যান্টি-ডাম্পিং তদন্ত শুরু করেছে।

চীনের ঘরোয়া চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা রপ্তানির মাধ্যমে জিডিপি বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন এসবিআই সিকিউরিটিজের রিউনোস্কে শিবাতা।

তিনি বলেন, ‘অলাভজনক দামে বিপুল পরিমাণ চীনা ইস্পাত এশিয়ায় প্রবাহিত হচ্ছে। যা দামে বিশাল প্রতিযোগিতা তৈরি করেছে।’

ব্যয়বহুল পরিবেশবান্ধব উৎপাদন: জাপান ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কারণ বিশ্বব্যাপী সরকারগুলি তাদের নির্গমন রোধে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে নিপ্পন স্টিল ৬ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছে। যাতে তিনটি কম দূষণকারী ‘ইলেকট্রিক আর্ক ফার্নেস’ নির্মাণ, সংস্কার বা পুনরায় চালু করা হবে। আর এর জন্য এক-তৃতীয়াংশ অর্থায়ন করবে জাপান সরকার।

তবে বিশ্লেষক লুং সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই বিনিয়োগের ফলে আর্থিক চাপ বাড়তে পারে, কারণ এগুলোর উৎপাদন ২০২৯ অর্থ বছরের আগে শুরু হবে না।’

অনলাইন ডেক্স :

১৪ জুন, ২০২৫,  4:18 PM

news image

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের পর ইউএস স্টিলের সঙ্গে বহু বিলিয়ন ডলারের একীভূতকরণকে "ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব" হিসেবে বর্ণনা করেছে নিপ্পন স্টিল। তবে জাপানের এই বৃহৎ ইস্পাত কোম্পানিকে সামনের দিনগুলোতে বহু প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে। বাণিজ্য শুল্ক থেকে শুরু করে বৈশ্বিক চাহিদার নিম্নগতি, চ্যালেঞ্জের শেষ নেই। টোকিও থেকে এ সংবাদ জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

মার্কিন শর্তাবলি: 
নিপ্পন স্টিল ও ইউএস স্টিল জানিয়েছে, তারা মার্কিন সরকারের সঙ্গে একটি ‘জাতীয় নিরাপত্তা চুক্তি (এনএসআই) ’ স্বাক্ষর করেছে।  যার আওতায় ২০২৮ সালের মধ্যে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগে এই চুক্তি আটকে দিয়েছিলেন। চুক্তির আওতায় মার্কিন সরকার একটি ‘গোল্ডেন শেয়ার’ পাবে। যা কোম্পানির ওপর অধিক নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি দেশীয় উৎপাদন ও বাণিজ্য সংক্রান্ত কিছু অস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি থাকবে ।

আর্থিক চাপ:
রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গত মাসে সতর্ক করেছে, এই চুক্তির ‘বৃহৎ আর্থিক বোঝা’ নিপ্পন স্টিলের ক্রেডিট রেটিং আরও খারাপ করতে পারে।

ব্লুমবার্গ ইন্টেলিজেন্সের মিশেল লুং মে মাসে বলেন, ১৪.৯ বিলিয়ন ডলারের এই একীভূতকরণ নিপ্পনের ঋণের পরিমাণ বর্তমান ১৬.৭ বিলিয়ন ডলার থেকে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এই চুক্তি নিপ্পন স্টিলকে জাপানের দুর্বল বাজার থেকে বৈচিত্র্য আনতে সাহায্য করবে, তবে ইউএস স্টিলের পুরনো সম্পদ মেরামতে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন।’

কিছু শেয়ারহোল্ডার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কর্মী বিনিয়োগকারী থ্রিডি ইনভেস্টমেন্ট পার্টনার্স আসন্ন বার্ষিক সাধারণ সভায় নিপ্পন স্টিলের নির্বাহীদের পুনর্নিয়োগের বিরোধিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা সতর্ক করে দিয়েছে যে, এত বড় মূলধন ব্যয় কর্পোরেট মূল্যে স্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।  

শুল্কের হুমকি: এসএন্ডপি জানিয়েছে, দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ইস্পাত চাহিদা দুর্বল এবং মার্কিন শুল্কের প্রভাবের কারণে নিপ্পন স্টিলের আয় কমতে পারে । বিশ্বব্যাপী চাহিদার মন্দা, অতিরিক্ত সরবরাহ এবং সরকারি অবকাঠামো প্রকল্পের ঘাটতির কারণে বিশ্ব ইস্পাত শিল্পে গভীর সংকট চলছে বলে সতর্ক করেছে কোম্পানিটি।

এর মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির উপর দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।

জাপানে বয়স্ক জনগোষ্ঠী বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশীয় চাহিদা কমেছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানিও কঠিন হয়ে পড়ছে। এই সমস্যা সমাধানে, নিপ্পন স্টিল ভারত ও থাইল্যান্ডের ইস্পাত কোম্পানিগুলি অধিগ্রহণ করেছে। ইউএস স্টিলের সঙ্গে একীভূতকরণ সেই কৌশলের অংশ।
এই চুক্তির ফলে নিপ্পন স্টিলের বার্ষিক অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতা ৬৬ মিলিয়ন টন থেকে বেড়ে ৮৬ মিলিয়ন টনে পৌঁছাবে।

চীনের অতিরিক্ত উৎপাদন: অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) অনুসারে, বিশ্বব্যাপী ইস্পাতের চাহিদা প্রতি বছর এক শতাংশেরও কম হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ২০২৭ সালের মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতার ৬.৭ শতাংশ বৃদ্ধির প্রত্যাশিত লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ওইসিডি অনুসারে, বৈশ্বিক ইস্পাতের চাহিদা বছরে ১ শতাংশেরও কম হারে বাড়ছে। কিন্তু ২০২৭ সালের মধ্যে উৎপাদন ক্ষমতা ৬.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। যা দাম কমিয়ে দেবে এবং অনেক কোম্পানি ক্ষতির মুখে পড়বে।

এর বেশিরভাগই চীনের ভর্তুকি নির্ভর অতিরিক্ত উৎপাদন যা "নীতি বিকৃতি" বলে অভিহিত করেছে ওইসিডি।

২০২০ সাল থেকে চীনের ইস্পাত রপ্তানি দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। যার জেরে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন অঞ্চল অ্যান্টি-ডাম্পিং তদন্ত শুরু করেছে।

চীনের ঘরোয়া চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা রপ্তানির মাধ্যমে জিডিপি বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন এসবিআই সিকিউরিটিজের রিউনোস্কে শিবাতা।

তিনি বলেন, ‘অলাভজনক দামে বিপুল পরিমাণ চীনা ইস্পাত এশিয়ায় প্রবাহিত হচ্ছে। যা দামে বিশাল প্রতিযোগিতা তৈরি করেছে।’

ব্যয়বহুল পরিবেশবান্ধব উৎপাদন: জাপান ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কারণ বিশ্বব্যাপী সরকারগুলি তাদের নির্গমন রোধে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে নিপ্পন স্টিল ৬ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছে। যাতে তিনটি কম দূষণকারী ‘ইলেকট্রিক আর্ক ফার্নেস’ নির্মাণ, সংস্কার বা পুনরায় চালু করা হবে। আর এর জন্য এক-তৃতীয়াংশ অর্থায়ন করবে জাপান সরকার।

তবে বিশ্লেষক লুং সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই বিনিয়োগের ফলে আর্থিক চাপ বাড়তে পারে, কারণ এগুলোর উৎপাদন ২০২৯ অর্থ বছরের আগে শুরু হবে না।’