ঢাকা ১২ মার্চ, ২০২৫
শিরোনামঃ
গভীর রাতে বনবিভাগ উখিয়া রেঞ্জের অভিযান বাগানের কাটভর্তি ডাম্পার আটক চলতি বছরের মধ্যে পাচারকৃত অর্থের কিছু অংশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব: অর্থ উপদেষ্টা সাতটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে নেপাল সফরের আমন্ত্রণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : এবি পার্টি জুলাই বিপ্লবের চেতনায় নতুন বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান বাংলাদেশ অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে জাপানের অব্যাহত সহায়তা চায় গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী শক্তি দেশ চালাচ্ছে: তথ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে চায় রাশিয়া বিটিভিকে যুগোপযোগী ও জনপ্রিয় করতে হবে : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

সাতটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ

#
news image

সংবিধান সংস্কার কমিশন একটি কার্যকর গণতন্ত্র, মৌলিক মানবাধিকার সুনিশ্চিতকরণ এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাতটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিশন সাংবিধানিক সংস্কারে যে সাতটি উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে সুপারিশ করেছে,

১) দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতিশ্রুত উদ্দেশ্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আলোকে বৈষম্যহীন জনতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।

২) ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো। 

৩) রাজনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বস্তরে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা।

৪) ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার উত্থান রোধ। ৫) রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ-নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা এবং বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ ও ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন।

৬) রাষ্ট্রক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের বিকেন্দ্রীকরণ ও পর্যাপ্ত ক্ষমতায়ন।

৭) রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক এবং আইন দ্বারা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। 

এই উদ্দেশ্যসমূহ নির্ধারণে কমিশন ১০ এপ্রিল ১৯৭১-এ জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক অঙ্গীকার অর্থাৎ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এবং ২০২৪ সালের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের জন-আকাঙ্ক্ষা অর্থাৎ একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনকে ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করেছে।

পাশাপাশি কমিশন ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধকে বাংলাদেশের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং বৈষম্যবিরোধী সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করেছে। এই সব আকাঙ্ক্ষা এবং সংগ্রামের মর্মবস্তুকে সাংবিধানিক-প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যেই সংবিধানের সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে কমিশন।

ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমানোসহ সংবিধানে আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কার কমিশন ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের সংস্কারের সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন জমা দেন। সুপারিশের সারসংক্ষেপ পরে কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

সংবিধানের মূলনীতি ও সংসদের কাঠামোতে পরিবর্তন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামো, মৌলিক অধিকারের পরিসর বাড়ানো, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলসহ সংবিধানের নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ অক্টোবর অধ্যাপক আলী রীয়াজকে প্রধান করে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

১২ মার্চ, ২০২৫,  6:13 AM

news image

সংবিধান সংস্কার কমিশন একটি কার্যকর গণতন্ত্র, মৌলিক মানবাধিকার সুনিশ্চিতকরণ এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাতটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিশন সাংবিধানিক সংস্কারে যে সাতটি উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে সুপারিশ করেছে,

১) দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতিশ্রুত উদ্দেশ্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আলোকে বৈষম্যহীন জনতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।

২) ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো। 

৩) রাজনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বস্তরে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা।

৪) ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার উত্থান রোধ। ৫) রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ-নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা এবং বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ ও ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন।

৬) রাষ্ট্রক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের বিকেন্দ্রীকরণ ও পর্যাপ্ত ক্ষমতায়ন।

৭) রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক এবং আইন দ্বারা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যকর স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। 

এই উদ্দেশ্যসমূহ নির্ধারণে কমিশন ১০ এপ্রিল ১৯৭১-এ জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক অঙ্গীকার অর্থাৎ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এবং ২০২৪ সালের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের জন-আকাঙ্ক্ষা অর্থাৎ একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনকে ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করেছে।

পাশাপাশি কমিশন ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধকে বাংলাদেশের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং বৈষম্যবিরোধী সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করেছে। এই সব আকাঙ্ক্ষা এবং সংগ্রামের মর্মবস্তুকে সাংবিধানিক-প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যেই সংবিধানের সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে কমিশন।

ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমানোসহ সংবিধানে আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কার কমিশন ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের সংস্কারের সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন জমা দেন। সুপারিশের সারসংক্ষেপ পরে কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

সংবিধানের মূলনীতি ও সংসদের কাঠামোতে পরিবর্তন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামো, মৌলিক অধিকারের পরিসর বাড়ানো, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলসহ সংবিধানের নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ অক্টোবর অধ্যাপক আলী রীয়াজকে প্রধান করে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছিল।