কালীপূজা নিয়ে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী ও আয়োজকরা
অনলাইন ডেস্ক
৩১ অক্টোবর, ২০২৪, 6:41 PM
কালীপূজা নিয়ে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী ও আয়োজকরা
কালীপূজা নিয়ে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী ও আয়োজকরা
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি;
দুর্গাপূজার পর সনাতন ধর্মালম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি বা কালীপূজা। পূজার আনুষ্ঠানিকতা আগামীকাল থেকে শুরু হবে তাই প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করে প্রতিমাতে রং করা ও মণ্ডপ সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার মৃৎশিল্পী ও আয়োজকরা।
ধর্মীয় পঞ্জিকা মতে, আগামী ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে অমাবস্যা তিথিতে শুরু হয়ে ২ নভেম্বর শনিবার দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে কালী পূজার। শাস্ত্র মতে, কালী পূজা অমাবস্যা তিথিতে একদিন হলেও বড় মণ্ডপগুলোতে আনন্দ উপভোগের জন্য আয়োজন চলে ৩ দিন ব্যাপী।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপ ঘুরে দেখাগেছে, সময় যতই এগিয়ে আসছে মন্দিরগুলোতে বাড়ছে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা। ইতোমধ্যে খড় ও মাটির কাজ শেষ করে এখন শেষ মুহূর্তে চলছে রংতুলির আঁচড়ে প্রতিমা ফুটিয়ে তোলার কাজ। নাওয়া-খাওয়া আর ঘুম বাদ দিয়ে কালী প্রতিমার পাশাপাশি দেবাদিদেব মহাদেব, ডাকিনী, যোগিনীসহ অন্যান্য দেব-দেবীর প্রতিমায় রংতুলির কাজ করছেন শিল্পীরা। এছাড়াও ডেকোরেশন ও লাইটিং এর মাধ্যমে নানা ধর্মীয় দৃশ্যপট তুলে ধরছেন মণ্ডপগুলোতে। বারহাট্টার বড় বাজেটের পূজাগুলোর মধ্যে উপজেলা সদরের গরুহাট্টা, মোরগ মহাল, শিববাড়ী, আসমা বাজার, বৃ-কালিকা পূজা মন্ডপ উল্লেখযোগ্য।
বারহাট্টা উপজেলা সদরের গরুহাট্টা পূজামন্ডপের প্রতিমা তৈরির কারিগর মৃৎশিল্পী সুবল পাল বলেন, আমি প্রায় ২২ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। প্রতিমা তৈরির কাঁচামাল বা জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় অনেকে এই পেশা ছেড়ে দিয়েছে। চারুকলার থেকে শিক্ষা নিয়ে এ পেশা বেছে নিয়েছি। লাভ কম তবুও নিজের শিক্ষার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে এখনো বিভিন্ন পূজায় প্রতিমা তৈরির কাজ করছি।শিব বাড়ী পূজা মন্ডপের মৃৎশিল্পী অখিল পাল বলেন, যে কোনো পূজা আসলেই আমাদের কদর বাড়ে। প্রতিমা তৈরির জন্য আমাদের ডাক পড়ে। আমাদের ব্যস্ততা বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে কাঁচা মালামালের দাম যে তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে সেই অনুযায়ী প্রতিমার তৈরীর পারিশ্রমিক তেমন বৃদ্ধি হয়নি। তবে লাভ কম হলেও পৈতৃক আদি পেশা প্রতিমা তৈরি করছি। যাতে পেশার পূর্ণতা পাওয়া যায়।
বারহাট্টা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রামেন্দ্র সরকার জানান, এবার বারহাট্টায় স্থায়ী-অস্থায়ী মণ্ডপ সব মিলিয়ে ৩০ টি মণ্ডপে কালী পূজা উৎযাপিত হচ্ছে। কালী পূজাকে সামনে রেখে- বরাবরের মতোই এবারও প্রস্তুতি চলছে প্রতিটি মণ্ডপে। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ, এখন চলছে রঙের কাজ।বারহাট্টা সদরের সবচেয়ে বড় বাজেটের কালী পূজা গুলোর মধ্যে অন্যতম গরুহাট্টা পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অসিত সাহার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমাদের এলাকার হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলেমিশে দুর্গাপূজার আনন্দ যেমন উপভোগ করেছি আশা করছি, তেমনি বরাবরের মতোই এবারও শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে সকলে মিলেমিশে কালী পূজার আনন্দ উপভোগ করতে পারবো।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, দুর্গাপূজার মতো কালী পূজাতেও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। পূজা চলাকালীন সময়ে সকল মণ্ডপে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য মাঠে সর্তক পাহারায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, যাতে পূজায় অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটতে না পারে।বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে মোবাইল টিম, স্ট্যান্ডিং ডিউটি ও ক্লাস্টার ব্যাসিসে পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তা সংক্রান্ত অন্যান্য সকল বাহিনীগুলোও সক্রিয় থাকবে।
অনলাইন ডেস্ক
৩১ অক্টোবর, ২০২৪, 6:41 PM
কালীপূজা নিয়ে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী ও আয়োজকরা
রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি;
দুর্গাপূজার পর সনাতন ধর্মালম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি বা কালীপূজা। পূজার আনুষ্ঠানিকতা আগামীকাল থেকে শুরু হবে তাই প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করে প্রতিমাতে রং করা ও মণ্ডপ সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার মৃৎশিল্পী ও আয়োজকরা।
ধর্মীয় পঞ্জিকা মতে, আগামী ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে অমাবস্যা তিথিতে শুরু হয়ে ২ নভেম্বর শনিবার দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে কালী পূজার। শাস্ত্র মতে, কালী পূজা অমাবস্যা তিথিতে একদিন হলেও বড় মণ্ডপগুলোতে আনন্দ উপভোগের জন্য আয়োজন চলে ৩ দিন ব্যাপী।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মণ্ডপ ঘুরে দেখাগেছে, সময় যতই এগিয়ে আসছে মন্দিরগুলোতে বাড়ছে মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা। ইতোমধ্যে খড় ও মাটির কাজ শেষ করে এখন শেষ মুহূর্তে চলছে রংতুলির আঁচড়ে প্রতিমা ফুটিয়ে তোলার কাজ। নাওয়া-খাওয়া আর ঘুম বাদ দিয়ে কালী প্রতিমার পাশাপাশি দেবাদিদেব মহাদেব, ডাকিনী, যোগিনীসহ অন্যান্য দেব-দেবীর প্রতিমায় রংতুলির কাজ করছেন শিল্পীরা। এছাড়াও ডেকোরেশন ও লাইটিং এর মাধ্যমে নানা ধর্মীয় দৃশ্যপট তুলে ধরছেন মণ্ডপগুলোতে। বারহাট্টার বড় বাজেটের পূজাগুলোর মধ্যে উপজেলা সদরের গরুহাট্টা, মোরগ মহাল, শিববাড়ী, আসমা বাজার, বৃ-কালিকা পূজা মন্ডপ উল্লেখযোগ্য।
বারহাট্টা উপজেলা সদরের গরুহাট্টা পূজামন্ডপের প্রতিমা তৈরির কারিগর মৃৎশিল্পী সুবল পাল বলেন, আমি প্রায় ২২ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। প্রতিমা তৈরির কাঁচামাল বা জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ায় অনেকে এই পেশা ছেড়ে দিয়েছে। চারুকলার থেকে শিক্ষা নিয়ে এ পেশা বেছে নিয়েছি। লাভ কম তবুও নিজের শিক্ষার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে এখনো বিভিন্ন পূজায় প্রতিমা তৈরির কাজ করছি।শিব বাড়ী পূজা মন্ডপের মৃৎশিল্পী অখিল পাল বলেন, যে কোনো পূজা আসলেই আমাদের কদর বাড়ে। প্রতিমা তৈরির জন্য আমাদের ডাক পড়ে। আমাদের ব্যস্ততা বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে কাঁচা মালামালের দাম যে তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে সেই অনুযায়ী প্রতিমার তৈরীর পারিশ্রমিক তেমন বৃদ্ধি হয়নি। তবে লাভ কম হলেও পৈতৃক আদি পেশা প্রতিমা তৈরি করছি। যাতে পেশার পূর্ণতা পাওয়া যায়।
বারহাট্টা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রামেন্দ্র সরকার জানান, এবার বারহাট্টায় স্থায়ী-অস্থায়ী মণ্ডপ সব মিলিয়ে ৩০ টি মণ্ডপে কালী পূজা উৎযাপিত হচ্ছে। কালী পূজাকে সামনে রেখে- বরাবরের মতোই এবারও প্রস্তুতি চলছে প্রতিটি মণ্ডপে। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ, এখন চলছে রঙের কাজ।বারহাট্টা সদরের সবচেয়ে বড় বাজেটের কালী পূজা গুলোর মধ্যে অন্যতম গরুহাট্টা পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অসিত সাহার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমাদের এলাকার হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলেমিশে দুর্গাপূজার আনন্দ যেমন উপভোগ করেছি আশা করছি, তেমনি বরাবরের মতোই এবারও শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে সকলে মিলেমিশে কালী পূজার আনন্দ উপভোগ করতে পারবো।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, দুর্গাপূজার মতো কালী পূজাতেও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। পূজা চলাকালীন সময়ে সকল মণ্ডপে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য মাঠে সর্তক পাহারায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, যাতে পূজায় অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটতে না পারে।বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে মোবাইল টিম, স্ট্যান্ডিং ডিউটি ও ক্লাস্টার ব্যাসিসে পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তা সংক্রান্ত অন্যান্য সকল বাহিনীগুলোও সক্রিয় থাকবে।