ঢাকা ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
শিরোনামঃ
৩১ দফা বাস্তবায়নে নওগাঁয় রাতভর বিএনপির লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি কোম্পানীগঞ্জে এনটিআরসিএ কর্তৃক সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিটিএ'র সংবর্ধনা  উত্তর ফটিকছড়ি উপজেলায় অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন বাগেরহাটে এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও  মানববন্ধন মাধবপুরে খাস জমি থেকে ড্রেজার মেশিন দ্বারা  মাঠি উত্তোলন, প্রশাসন নিরব বাগেরহাটে মহিদুল নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যাঃ আটক ২  বেলকুচিতে ৪৮টি গরুসহ খামার পেলেন আত্মসমর্পন করা ৬৭ চরমপন্থী শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী টঙ্গী কলেজে লিফলেট বিতরণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাধা বাগেরহাটের পচা দিঘী থেকে মৃতদেহ উদ্ধার

অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বার বিজয়ী হলেন আলবানিজ

#
news image

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ টানা দ্বিতীয়বার তিন বছরের মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে গত ২১ বছরে নজির গড়েছেন। শনিবারের জাতীয় নির্বাচনে ডানপন্থী বিরোধী নেতা পিটার ডাটন নিজের পার্লামেন্ট আসন হারিয়ে চরম লজ্জাজনক পরাজয়ের মুখ দেখেছেন বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি।

সিডনি  থেকে এএফপি জানায়, বামপন্থী লেবার পার্টির নেতা আলবানিজের এই বিজয় এমন এক সময় এলো, যখন দেশজুড়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, আবাসন সংকট এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া ট্যারিফে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর ডাটন বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমরা যথেষ্ট ভালো করতে পারিনি। আমি এর পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি।’

‘আলবো! আলবো! ধ্বনি’

চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগেই ভোট বিশ্লেষক অ্যান্টনি গ্রিন জানান, ‘এটি লেবার পার্টির জন্য বিশাল এক জয় হতে পারে।’ এদিকে সিডনিতে লেবার সমর্থকদের উল্লাসে ‘আলবো! আলবো!’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে একটি নির্বাচনী অনুষ্ঠান।

লেবার পার্টি জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ, আবাসন সংকট সমাধান এবং স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিপরীতে ডাটনের কনজারভেটিভ জোট অভিবাসন হ্রাস, অপরাধ দমন এবং পারমাণবিক শক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষপাতী ছিল।

ট্রাম্পের ছায়া

নির্বাচনজুড়ে ট্রাম্পের প্রভাব এক ধরনের ‘আত্মধ্বংসী অর্থনৈতিক নীতির’ অনুরণন তুলেছে বলে মন্তব্য করেন বিশ্লেষকেরা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে এলন মাস্কের নেতৃত্বে সরকারি খাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের দৃষ্টান্ত ডাটনের ‘সরকারি ব্যয় কমানো নীতি’কে অনেক ভোটারের কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তোলে।

ডাটনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাবও অস্ট্রেলীয় জনমতকে বিভক্ত করে তোলে। ভোটার অ্যালান হুইটম্যান বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প পাগলাটে এক চরিত্র—এটা আমরা সবাই জানি। এখন আমাদের এটাই ভাবতে হচ্ছে, আমরা তার মতো নেতৃত্ব চাই কি না।’

বৈশ্বিক অস্থিরতায় স্থিতিশীল নেতৃত্বের প্রত্যাশা

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিশেষজ্ঞ হেনরি মাহার বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে যখন অনিশ্চয়তা, তখন মানুষ স্থিতিশীল ও পরিচিত নেতৃত্বের কাছেই ফিরে যেতে চায়। এটাই  আলবানিজের জয়ের ব্যাখ্যা হতে পারে।’

ভোটদানে বাধ্যতামূলক ব্যবস্থার ফলে এবারও ৯০ শতাংশের বেশি ভোটার অংশ নেন। ভোটের দিন ঐতিহ্য অনুযায়ী বিভিন্ন বুথে "ডেমোক্রেসি সসেজ" বা গণতন্ত্রের সসেজ খেতে দেখা যায় ভোটারদের।

অর্থনৈতিক চাপ ও প্রচারণার ভুল

ভোটারদের প্রধান উদ্বেগ ছিল দ্রব্যমূল্য ও জীবনযাত্রার ব্যয়। ব্রিসবেনের এক মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক বলেন, ‘দুধ, পাউরুটি, বিদ্যুৎ, পেট্রোল—সবকিছুর দাম এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি।’

প্রচারণার সময় আলবেনিজ একবার স্টেজ থেকে পড়ে যান এবং ডাটন একটি ফুটবল ছুড়ে ভুল করে একজন ক্যামেরাম্যানের মাথায় আঘাত করেন। এই ধরনের ‘চিকন হাসির মুহূর্ত’ ছাড়া প্রচারণা ছিল মোটামুটি মসৃণ।

ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি

আলবানিজ বলেছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি পরিবেশবান্ধব পথে রূপান্তর করতে চান এবং এমন ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন যেখানে কয়লা ও লৌহ আকর আর অর্থনীতির মূল ভিত্তি থাকবে না।

নির্বাচনের এই ফলাফল অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক মানচিত্রে এক বড় পরিবর্তন আনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও একটি বার্তা দিয়েছে—বিশ্ব অস্থির থাকলেও, স্থিতিশীল নেতৃত্বকে মানুষ মূল্যায়ন করে।

আন্তর্জাতিক ডেক্স :

০৩ মে, ২০২৫,  11:20 PM

news image

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ টানা দ্বিতীয়বার তিন বছরের মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে গত ২১ বছরে নজির গড়েছেন। শনিবারের জাতীয় নির্বাচনে ডানপন্থী বিরোধী নেতা পিটার ডাটন নিজের পার্লামেন্ট আসন হারিয়ে চরম লজ্জাজনক পরাজয়ের মুখ দেখেছেন বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি।

সিডনি  থেকে এএফপি জানায়, বামপন্থী লেবার পার্টির নেতা আলবানিজের এই বিজয় এমন এক সময় এলো, যখন দেশজুড়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, আবাসন সংকট এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া ট্যারিফে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর ডাটন বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমরা যথেষ্ট ভালো করতে পারিনি। আমি এর পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি।’

‘আলবো! আলবো! ধ্বনি’

চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগেই ভোট বিশ্লেষক অ্যান্টনি গ্রিন জানান, ‘এটি লেবার পার্টির জন্য বিশাল এক জয় হতে পারে।’ এদিকে সিডনিতে লেবার সমর্থকদের উল্লাসে ‘আলবো! আলবো!’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে একটি নির্বাচনী অনুষ্ঠান।

লেবার পার্টি জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ, আবাসন সংকট সমাধান এবং স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিপরীতে ডাটনের কনজারভেটিভ জোট অভিবাসন হ্রাস, অপরাধ দমন এবং পারমাণবিক শক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষপাতী ছিল।

ট্রাম্পের ছায়া

নির্বাচনজুড়ে ট্রাম্পের প্রভাব এক ধরনের ‘আত্মধ্বংসী অর্থনৈতিক নীতির’ অনুরণন তুলেছে বলে মন্তব্য করেন বিশ্লেষকেরা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে এলন মাস্কের নেতৃত্বে সরকারি খাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের দৃষ্টান্ত ডাটনের ‘সরকারি ব্যয় কমানো নীতি’কে অনেক ভোটারের কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তোলে।

ডাটনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাবও অস্ট্রেলীয় জনমতকে বিভক্ত করে তোলে। ভোটার অ্যালান হুইটম্যান বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প পাগলাটে এক চরিত্র—এটা আমরা সবাই জানি। এখন আমাদের এটাই ভাবতে হচ্ছে, আমরা তার মতো নেতৃত্ব চাই কি না।’

বৈশ্বিক অস্থিরতায় স্থিতিশীল নেতৃত্বের প্রত্যাশা

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিশেষজ্ঞ হেনরি মাহার বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে যখন অনিশ্চয়তা, তখন মানুষ স্থিতিশীল ও পরিচিত নেতৃত্বের কাছেই ফিরে যেতে চায়। এটাই  আলবানিজের জয়ের ব্যাখ্যা হতে পারে।’

ভোটদানে বাধ্যতামূলক ব্যবস্থার ফলে এবারও ৯০ শতাংশের বেশি ভোটার অংশ নেন। ভোটের দিন ঐতিহ্য অনুযায়ী বিভিন্ন বুথে "ডেমোক্রেসি সসেজ" বা গণতন্ত্রের সসেজ খেতে দেখা যায় ভোটারদের।

অর্থনৈতিক চাপ ও প্রচারণার ভুল

ভোটারদের প্রধান উদ্বেগ ছিল দ্রব্যমূল্য ও জীবনযাত্রার ব্যয়। ব্রিসবেনের এক মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক বলেন, ‘দুধ, পাউরুটি, বিদ্যুৎ, পেট্রোল—সবকিছুর দাম এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি।’

প্রচারণার সময় আলবেনিজ একবার স্টেজ থেকে পড়ে যান এবং ডাটন একটি ফুটবল ছুড়ে ভুল করে একজন ক্যামেরাম্যানের মাথায় আঘাত করেন। এই ধরনের ‘চিকন হাসির মুহূর্ত’ ছাড়া প্রচারণা ছিল মোটামুটি মসৃণ।

ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি

আলবানিজ বলেছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি পরিবেশবান্ধব পথে রূপান্তর করতে চান এবং এমন ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন যেখানে কয়লা ও লৌহ আকর আর অর্থনীতির মূল ভিত্তি থাকবে না।

নির্বাচনের এই ফলাফল অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক মানচিত্রে এক বড় পরিবর্তন আনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও একটি বার্তা দিয়েছে—বিশ্ব অস্থির থাকলেও, স্থিতিশীল নেতৃত্বকে মানুষ মূল্যায়ন করে।